পেহেলগামে ২৬ জন পর্যটককে হত্যার কয়েক দিন পর গতকাল শুক্রবার রাতে জম্মু ও কাশ্মিরজুড়ে পাঁচ সন্দেহভাজনের বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দিয়েছে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী। তবে হামলার ঘটনার পর এখনো কাউকে আটক করতে পারেনি তারা।

কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, শোপিয়ান, কুলগাম ও পুলওয়ামা জেলায় অভিযান চালায় নিরাপত্তা বাহিনী। গত কয়েক দিনে সন্দেহভাজনদের ওপর দমন অভিযান আরও জোরদার করা হয়েছে।

শোপিয়ানের চোপোটিপোরা গ্রামে শাহিদ আহমেদ কুট্টের বাড়ি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তাকে লস্কর কমান্ডার বলে দাবি করছে ভারত। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কুট্টে গত তিন-চার বছর ধরে সন্ত্রাসমূলক কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত এবং রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপ সমন্বয় করার ক্ষেত্রে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।

কুলগামের মাতালম এলাকায় আরেক সন্দেহভাজন জাহিদ আহমেদের বাড়িও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলওয়ামার মুররান এলাকায় বিস্ফোরক দিয়ে আহসান উল হক নামে একজনের বাড়ি উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ভারতের দাবি, আহসান ২০১৮ সালে পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদী প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন এবং সম্প্রতি উপত্যকায় ফিরে আসেন।

এহসান আহমেদ শেখ নামে একজন সন্দেহভাজনের দোতলা বাড়িও ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তিনি লস্কর-ই-তৈয়বার সদস্য বলে দাবি করা হচ্ছে, যিনি ২০২৩ সালের জুন মাস থেকে সক্রিয় ছিলেন।

পঞ্চম সন্দেহভাজন হারিস আহমেদের বাড়িও বিস্ফোরক পেতে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলওয়ামার কাচিপোরা এলাকার ওই বাসিন্দা ২০২৩ সাল থেকে সক্রিয় বলে দাবি করা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে, পেহেলগাম হামলার মূল সন্দেহভাজন আদিল হুসেন ঠোকর এবং আসিফ শেখের বাড়ি বিস্ফোরণে ধ্বংস করা হয়।

বৃহস্পতিবার অনন্তনাগ পুলিশ পেহেলগাম হামলায় জড়িত সন্দেহে ঠোকর এবং আরও দুইজনের স্কেচ প্রকাশ করেছিল। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অন্য দুই সন্দেহভাজন—হাশিম মুসা ওরফে সুলেমান এবং আলি ভাই ওরফে তালহা আপন ভাই। তারা পাকিস্তানি নাগরিক এবং তাদের গ্রেপ্তারের জন্য ২০ লাখ রুপি পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে ভারতের জম্মু ও কাশ্মির রাজ্যের পেহেলগামের বৈসরণ তৃণভূমিতে পর্যটকদের ওপর অতর্কিতে গুলি চালায় একদল সন্ত্রাসী। এই হামলায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়, যাদের মধ্যে একজন নেপালি নাগরিকও ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গুলির শব্দ শুনে পর্যটকরা প্রাণে বাঁচার জন্য ছুটোছুটি শুরু করেন, কিন্তু খোলা প্রান্তরে কোথাও লুকানোর সুযোগ ছিল না।

হামলার পর, সেনাবাহিনী, সিআরপিএফ এবং জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ যৌথভাবে ওই এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে।

পহেলগাম হামলার কঠোর জবাবে ভারত সরকার ইন্দাস পানি চুক্তি স্থগিত করেছে এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যারা এই বর্বর হামলার পেছনে রয়েছে, তাদের এবং তাদের মদতদাতাদের খুঁজে বের করে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আহম দ

এছাড়াও পড়ুন:

৭৮০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে পূবালী ব্যাংক

বেসরকারি খাতের পূবালী ব্যাংক ২ হাজার কোটি টাকার রেকর্ড পরিচালন মুনাফা করলেও বছর শেষে ব্যাংকটির নিট মুনাফা হাজার কোটি টাকা ছাড়ায়নি। গত বছর শেষে পূবালী ব্যাংকের নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৭৮০ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে ব্যাংকটি নিট মুনাফা করেছিল ৬৯৮ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ব্যাংকটির মুনাফা ৮২ কোটি টাকা বা প্রায় ১২ শতাংশ বেড়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় গত বছরের আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়।

আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদনের পাশাপাশি গত বছরের জন্য লভ্যাংশও অনুমোদন করা হয় গতকালের এই সভায়। গত বছরের জন্য ব্যাংকটি ২৫ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। যার মধ্যে সাড়ে ১২ শতাংশ নগদ ও সাড়ে ১২ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ। ২০২৩ সালেও ব্যাংকটি একই হারে শেয়ারধারীদের লভ্যাংশ দিয়েছিল।

ব্যাংকসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালে পূবালী ব্যাংক ঋণের সুদ থেকে ১ হাজার ৫১৩ কোটি টাকা আয় করেছে। বিনিয়োগ, কমিশন, মুদ্রা বিনিময় ও ব্রোকারেজ থেকে আয় করেছে ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকা। তাতে সব মিলিয়ে আয় হয় ৪ হাজার ২৩৫ কোটি টাকা। বিদায়ী বছরে বেতন-ভাতাসহ নানা খাতে খরচ হয় ১ হাজার ৯৩৩ কোটি টাকা। ফলে পরিচালন মুনাফা হয় ২ হাজার ৩০১ কোটি টাকা। ব্যাংকটি বিদায়ী বছরে নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করে ৯৬১ কোটি টাকা। এরপর কর পরিশোধের পর নিট বা প্রকৃত মুনাফা হয় ৭৮০ কোটি টাকা।

জানতে চাইলে পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভবিষ্যতের কথা বিবেচনায় আমরা চাহিদার বেশি নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করেছি। বাংলাদেশ ব্যাংক এই পরামর্শ দিয়েছে। খেলাপির তুলনায় বেশি সঞ্চিতি রাখার মাধ্যমে ব্যাংকটির ভিত্তি মজবুত করা হয়েছে।

ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালে পূবালী ব্যাংকের আমানত বেড়ে হয়েছে ৭৪ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা। এ সময়ে ঋণ বেড়ে দাঁড়ায় ৬২ হাজার ৯২৫ কোটি টাকা। আর খেলাপি ঋণের হার কমে নেমে এসেছে ২ দশমিক ৬৭ শতাংশে। ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন এখন ১ হাজার ১৫৬ কোটি টাকা। আর কর্মীর সংখ্যা ১০ হাজার ৬৭৮। সারা দেশে ৫০৮টি শাখা ও ২২৭টি উপশাখা রয়েছে ব্যাংকটির। বর্তমানে বেসরকারি খাতে সবচেয়ে বেশি নেটওয়ার্ক পূবালী ব্যাংকের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ২০২৬ এশিয়ান গেমসেও থাকছে ক্রিকেট
  • শক্তিশালী ব্যালান্স শিট প্রবৃদ্ধিসহ ২০২৪ সালে ব্র্যাক ব্যাংকের উল্লেখযোগ্য সাফল্য
  • ২০২৪ সালে রেকর্ড হারে বেড়েছে বিশ্বের সামরিক ব্যয়: সিপ্রির প্রতিবেদন
  • ২০২৬ এশিয়ান গেমসেও থাকছে ক্রিকেট
  • কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকের পদাবনতি, দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার
  • ৭৮০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে পূবালী ব্যাংক
  • দুই বছর ধরে ঝুলছে যুবলীগ নেতা জামাল হত্যা মামলার তদন্ত
  • নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের জবি শাখার ৩৫ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
  • সড়কের কাজ ফেলে রেখে উধাও ঠিকাদার, দুর্ভোগে অর্ধলাখ বাসিন্দা
  • তালেবান সরকার কেন ভারতের দিকে ঝুঁকছে