কোমল পানীয় কেনাকে কেন্দ্র করে বাড়িতে আগুন, মিটিং করে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে নিহত ১
Published: 29th, April 2025 GMT
কোমল পানীয় কেনা নিয়ে ঝগড়ার একপর্যায়ে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩০ জন। আহতদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আজ মঙ্গলবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় বাড্ডা ও বাড়াইল গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে।
নিহত আজিজ মিয়া (৬০) বাড্ডা গ্রামের মৃত শরিফ উদ্দিনের ছেলে। গুরুতর আহত দুজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অন্যদের স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিক ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলছিল।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা সলিমগঞ্জ বাজারে গত ৩ এপ্রিল ইসহাক মিয়ার দোকানে কোমল পানীয় ‘পেপসি’ কিনতে যান বাড্ডা গ্রামের এক যুবক। এ সময় দোকানির সাথে ওই যুবকের ঝগড়া ও মারামারি হয়। এতে বাড্ডা গ্রামের জজ মিয়ার ছেলেসহ তিনজন আহত হন। এই খবর পেয়ে বাড্ডা গ্রামের লোকজন বাড়াইল গ্রামের একটি বাড়িতে আগুন দেয় ও কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর করে। এই ঘটনার পর থেকে উভয়গ্রামে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এমনকি দুই গ্রামে লোকজন আলাদা আলাদাভাবে মিটিং করে সংঘর্ষের প্রস্তুতি নেয়। যদিও প্রশাসনের সহযোগিতায় আগামী ১ মে সমঝোতায় বসার কথা ছিল। কিন্তু বাড্ডা গ্রামের লোকজন আজ দুপুরে বাড়াইল গ্রামের লোকজনের ওপর হামলা চালায়। এতে তিনজন আহত হন। এই খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে উভয় গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষে বাড্ডা গ্রামের আজিজ মিয়া নিহত হন।
আহতদের মধ্যে কাইয়ুম মিয়া (৫৫), আরিফুল ইসলাম (১২), জাফর আলী, রজবআলী, ওয়াস করনি, আলী মিয়া, তাহের মিয়া, মিজান মিয়া, জুনায়েদ আহমেদ, মাসুম মিয়া, মানিক মিয়া, কামাল মিয়া প্রমুখ।
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আব্দুর রাজ্জাক ঘটনা সত্যতা স্বীকার করে বলেন, উভয় গ্রামের সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব র হ মণব ড় য় স ঘর ষ ন হত গ র ম র ল কজন স ঘর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রেনের ছাদে ভ্রমণকালে বৈদ্যুতিক লাইনের নেটের আঘাতে নিহত ১, আহত ৫
টাঙ্গাইলে ট্রেনের ছাদে অবৈধভাবে ভ্রমণের সময় বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের নেটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে একজন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম রিপন আলী (৩৭)। তিনি রাজশাহীর পবা উপজেলার কালিয়ানপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। আহতদের মধ্যে অজ্ঞাতপরিচয়ের এক ব্যক্তি টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
রেলওয়ে পুলিশের টাঙ্গাইল ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ জানান, ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী আন্তনগর সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে টাঙ্গাইল স্টেশনে পৌঁছানোর পর ছাদে রক্তাক্ত অবস্থায় ছয়জনকে পাওয়া যায়। আহত যাত্রীরা পুলিশকে জানান, তাঁরা ঢাকা থেকে ট্রেনের ছাদে উঠেছিলেন। টাঙ্গাইল স্টেশনে পৌঁছানোর ১৫–২০ মিনিট আগে রেলপথের ওপর দিয়ে অতিক্রম করা একটি বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের নিচের নেটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে তাঁরা আহত হন।
আহত ছয়জনকে পুলিশ উদ্ধার করে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে রিপন আলীর মৃত্যু হয়। আহতদের মধ্যে আশরাফুলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আহত আমিরুল ইসলাম (২৫), আলিম (২৫) ও ফয়সাল (২৭) চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। অজ্ঞাতপরিচয়ের এক কিশোর (১৫–১৬) এখনো টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, তার হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায় শুয়ে আছে। কর্তব্যরত নার্স জানান, ছেলেটি কথা বলতে পারছে না।
এদিকে নিহত রিপন আলীর রাজশাহীর বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে কালিয়ানপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির ভেতরে স্বজন ও প্রতিবেশীরা আহাজারি করছেন। বাইরে রিপনের দাফনের জন্য কবর খোঁড়া হচ্ছে, কেউ বাঁশ কাটছেন।
রিপনের বাবা ইসরাফিল হোসেন জানান, রিপন ঢাকার একটি ইলেকট্রনিকস কোম্পানিতে চাকরি করত। কয়েক মাস আগে চাকরি ছেড়ে দিয়ে নতুন কাজ খুঁজছিল। গত বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বের হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল হাসপাতাল থেকে রিপনের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে তার ছোট ছেলের ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তখনই তাঁরা জানতে পারেন, রিপন ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন।