কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার বলেছেন, যে গণঅভ্যুত্থান হয়ে গেল তা কোনো রাজনৈতিক দলের ব্যানারে গণঅভ্যুত্থান হয়নি, গণঅভ্যুত্থান হয়েছে জনগণের ব্যানারে সেখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ ছিল। কী অভিপ্রায়ে গণঅভ্যুত্থান হলো সে বিষয় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। এ জন্য তৃনমূল পর্যায়ে এ অন্তর্বর্তী সরকারকে যেতে হবে। জনগণের কথা শুনে তাদের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ঢাকায় বসে সংস্কার কমিশন গঠন করে সিদ্ধান্ত নিলে তা জনগণের অভিপ্রায় পূরণ হবে না।

আজ শুক্রবার দুপুরে তিনি বগুড়া প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন।

ফরহাদ মজহার আরও বলেন, বাংলাদেশের জন্য নতুন সংবিধান না, নতুন গঠনতন্ত্রের প্রয়োজন। গঠনতন্ত্র মানে কিন্তু আইন না, তবে সংবিধান মানে হচ্ছে আইন। আর আমরা কিন্তু ঔপনিবেশিক শাসক না। ইংরেজরা আইন প্রণয়ন করে আর জনগণ গঠনতন্ত্র করে। আর এ পার্থক্যটাই মনে রাখতে হবে। তার মানে আপনি যখনই সংবিধান বলবেন আপনি ঔপনিবেশিক একজন শাসক। তখন আপনি লুটেরা মাফিয়াতন্ত্রের ন্যায় একজন শাসক। আপনি একটা আইন দিয়ে গরীবদের শাসন করবেন। তাই আগে গঠনতন্ত্র তৈরি করে গণপরিষদ নির্বাচন করা প্রয়োজন, তারপর জাতীয় নির্বাচন।

গঠনতন্ত্র মানে জনগণ নিজেরাই অংশগ্রহণ করবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, তারা পরস্পরের সঙ্গে কীভাবে বাস করবে এটা তারা তৈরি করবে। সাধারণ মানুষ রাষ্ট্রের সব ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ করতে পারবে, তরুণদের মতামতের গুরুত্ব দিতে হবে। তা না হলে আবার যারা ক্ষমতায় আসবে তারা আগের সরকারের মতোই লুটপাট করবে। নির্বাচন মানেই গণতন্ত্র নয়। এ জন্য সাধারণ মানুষ ও তরুণদের অংশগ্রহণে আগে গণপরিষদ নির্বাচন, তারপরে জাতীয় নির্বাচন।

তিনি বলেন, তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। এক.

কোন মানুষের অধিকার হরণ করা যাবে না; মানুষকে মর্যাদা দিতে হবে। দুই. প্রাকৃতিক কোনো কিছু দখল করা যাবে না, তিন মানুষের জীবন-জীবিকা বিপন্ন হয় এমন কোন আইন করা যাবে না।

ফরহাদ মজহার মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যর সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের মানবিক করিডোর দেওয়ার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে প্রক্সি ওয়ারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আমি কোনভাবেই চাইবো না করিডোর দেওয়া হোক। করিডোর কখনও আমাদের দেশের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে না। এসব কারণে বাংলাদেশের প্রতিটি তরুণকে সেনাবাহিনীর সদস্য করে তাদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রস্তুত রাখা প্রয়োজন। সেনাবাহিনীকে জাতীয় সেনাবাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফরহ দ মজহ র গণঅভ য ত থ ন গঠনতন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

ফরিদপুরে সীমানা নিয়ে ডিসির চিঠি, এলাকাবাসীর ৫ দাবি

ফরিদপুর-৪ আসনের ভাঙ্গার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়ন ফরিদপুর-২ আসনের নগরকান্দায় যুক্ত করার প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ ও আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসক (ডিসি) কামরুল হাসান মোল্লা বিষয়টিকে জনগণের আন্দোলন হিসেবে আখ্যায়িত করে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে আবেদন জানিয়েছেন।

এদিকে, ভাঙ্গা উপজেলা থেকে কেটে নেওয়া হামিরদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খোকন মোল্লা এলাকাবাসীর পক্ষে চেয়ারম্যানের পাঁচটি দাবির কথা তুলে ধরে মীমাংসার আহ্বান জানিয়েছেন। 

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. কামরুল হাসান মোল্লা ভাঙ্গার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে ২১৪ ফরিদপুর-৪ আসনে অন্তর্ভুক্তকরণের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আবেদন জানিয়ে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব বরাবর একটি চিঠি দিয়েছেন। 

জেলা প্রশাসকের স্বাক্ষরিত ওই চিঠি সূত্রে জানাগেছে, গত ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত গেজেটের সূত্র উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়েছে, ফরিদপুর-২ এবং ফরিদপুর-৪ এর সংসদীয় সীমানা পুনঃনির্ধারণ করা হয়। উক্ত তালিকায় ফরিদপুর-৪ এর অন্তর্গত ভাঙ্গার দুটি ইউনিয়ন, আলগী ও হামিরদী জাতীয় সংসদীয় আসন ফরিদপুর-২ এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। 

তালিকা প্রকাশিত হওয়ার ফলে গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নসহ ভাঙ্গা উপজেলার সাধারণ জনগণ উক্ত আসন বিন্যাস বাতিলের দাবিতে মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধসহ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করতে থাকে। ফলশ্রুতিতে ক্রমান্বয়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে থাকে। 

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, সর্বশেষ ১৫ সেপ্টেম্বর বিক্ষোভকারীরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কার্যালয়, উপজেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয়, ভাঙ্গা থানা, হাইওয়ে পুলিশের কার্যালয় ও সরকারি গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এছাড়াও বিক্ষোভকারীরা সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে রাখে। তৎপ্রেক্ষিতে দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলার সাথে যোগাযোগ ব্যাহত হওয়ার কারণে সাধারণ জনগণকে তীব্র ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়। বিক্ষোভকারীরা তাদের দাবির সমর্থনে কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে।

চিঠিতে আরো বলা হয়, ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন) সংসদীয় আসনের ভাঙ্গা হতে আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে ফরিদপুর-২ আসনের সাথে যুক্ত করে সংসদীয় আসন পুনঃনির্ধারণের বিষয়টি দুইটি সংসদীয় আসনের জনগণ মেনে নিতে পারেনি। উক্ত দুইটি আসনের সর্বস্তরের জনগণ এ আন্দোলনের সাথে যুক্ত রয়েছে মর্মে জানা যায়। এ প্রেক্ষিতে সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা না হলে সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির বড় ধরনের অবনতির আশঙ্কা রয়েছে।

চিঠিতে আরো বলা হয়, বর্ণিত অবস্থায়, জাতীয় সংসদীয় আসন ২১২ ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা ও সালথা) এর অন্তর্গত ভাঙ্গা উপজেলার দুটি ইউনিয়ন আলগী ও হামিরদীকে জাতীয় সংসদীয় আসন ২১৪ ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন) এর মধ্যে পুনরায় অন্তর্ভুক্ত করে জাতীয় সংসদের নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণের বিষয়টি পুনর্বিবেচনাপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সবিনয় অনুরোধ করা হলো।

এদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক বার্তায় হামিরদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খোকন মোল্লা পাঁচটি দাবির কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি পাঁচটি দাবিকে ভাঙ্গাবাসীর প্রাণের দাবি হিসেবে উল্লেখ করে মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এ দাবিগুলো মেনে নেওয়া হলে তারা ঘরে ফিরে যাবেন।

দাবিগুলো হলো- আলগী এবং হামিরদী ইউনিয়নকে পুনরায় ভাঙ্গা উপজেলার সাথে সংযুক্ত করতে হবে; চেয়ারম্যানসহ সকলকে মুক্তি দিতে হবে; নিরীহ নিরপরাধ জনগণের ওপর মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে; নতুন কোনো মামলা দেওয়া যাবে না; রাতের বেলায় প্রশাসন দিয়ে সাধারণ জনগণকে হয়রানি বন্ধ করতে হবে।

ঢাকা/তামিম/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
  • আমেরিকানদের হাতে সময় আছে মাত্র ৪০০ দিন
  • রোহিঙ্গা সমস্যায় রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করতে হবে
  • হুংকার দিয়ে জাতীয় নির্বাচন ঠেকান যাবে না: জাহিদ হোসেন
  • জামায়াত কীভাবে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার দাবি তোলে: আনিসুল ইসলাম মাহমুদ
  • জুলাই সনদ নিয়ে যেসব বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে
  • ফরিদপুরে সীমানা নিয়ে ডিসির চিঠি, এলাকাবাসীর ৫ দাবি
  • বাংলাদেশ পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে: আইরিন খান
  • কেমন সংবিধান চান, জানালেন এনসিপি নেতা আখতার হোসেন
  • বাংলাদেশে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় ইইউ