চাঁদাবাজি-লুটপাটের অভিযোগ, কলাবাগান থানার ওসি-এসআই সাময়িক বরখাস্ত
Published: 5th, May 2025 GMT
রাজধানীর কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোক্তারুজ্জামান ও উপপরিদর্শক (এসআই) বেলাল উদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
গতকাল রোববার ওসি মোক্তারুজ্জামান ও এসআই বেলালকে সাময়িক বরখাস্ত করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাদ আলী। কলাবাগান থানা এলাকার বাসিন্দা আবদুল ওয়াদুদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এই দুজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় বলে ডিএমপি সূত্র জানায়।
আবদুল ওয়াদুদ ২ মে ডিএমপি কমিশনার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন। ‘সন্ত্রাসীদের’ সঙ্গে নিয়ে গত ২৯ এপ্রিল রাতে তাঁর বাসায় কলাবাগান থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে অর্থ আদায় করে বলে তিনি অভিযোগ করেন। তিনি চাঁদাবাজির পাশাপাশি বাসায় ভাঙচুর-লুটপাটের অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে মোক্তারুজ্জামান ও বেলালের নাম উল্লেখ করে এ ঘটনার সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছেন আবদুল ওয়াদুদ। পাশাপাশি দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি ডিএমপির কমিশনারের কাছে আবেদন জানান।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে আজ সোমবার দুপুরের দিকে মোক্তারুজ্জামান ও বেলালের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হয়। তাঁদের মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠানো হয়। কিন্তু তাঁরা সাড়া দেননি।
এ বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) এস এন মো.
তবে ডিএমপির একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগকারী ব্যক্তির বাসায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা যাতায়াত করতেন। তাই তাঁর বাসায় স্থানীয় লোকজন ও কলাবাগান থানার পুলিশ গিয়েছিল। স্থানীয় লোকজন বাসায় ভাঙচুর চালান। কলাবাগান থানার ওসি ওই বাসার মালিককে ছেড়ে দেওয়ার বিনিময়ে ৫০ লাখ টাকা দাবি করেন।
আবদুল ওয়াদুদ তাঁর অভিযোগে বলেন, ২৯ এপ্রিল রাত সাড়ে ১০টার দিকে এসআই বেলালের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ও অন্তত ১৫-২০ জন সন্ত্রাসী তাঁর বাসায় জোর করে ঢুকে পড়েন। তাঁর ম্যানেজার ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে শাহবাগ ও নিউমার্কেট থানার টহল টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে আসে। তবে কলাবাগান থানার ওসি (মোক্তারুজ্জামান) নিজে উপস্থিত থেকে অন্য থানার পুলিশের টিমকে চলে যেতে বলেন। এ সময় লাল মিয়া নামের এক ষাটোর্ধ্ব ভাড়াটে ও নাইটগার্ড লুৎফরকে নিজেদের গাড়িতে তুলতে নির্দেশ দেন ওসি। পুরো ঘটনার ভিডিও ও সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজ রয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়, তৃতীয় তলার দরজা ভাঙার চেষ্টা চলাকালে তিনি ওসিকে ফোনে সহায়তা চাইলে তাঁকে (আবদুল ওয়াদুদ) থানায় যেতে বলা হয়। তিনি দরজা খুললে পুলিশসদস্যরা তাঁকে ঘরের ভেতরে টেনে নেন। তাঁর কাছে অস্ত্র ও টাকা কোথায় আছে, তা জানতে চাওয়া হয়। একপর্যায়ে পুলিশসদস্য মান্নান তাঁকে বলেন, এই মুহূর্তে এক কোটি টাকা দিলে থানায় যেতে হবে না। পরে দেনদরবার করে তিনি বাধ্য হয়ে দুই লাখ টাকা দেন। ব্যাংক খুললে বাকি টাকা দেওয়ার আশ্বাস দেন। রাতভর অভিযানে পুলিশসদস্যরা তাঁর বাসা থেকে ল্যাপটপ, সিসিটিভির হার্ডডিস্ক, কম্পিউটারসহ বেশ কিছু মালামাল নিয়ে যান। পরে ওসি একটি ল্যাপটপ ফেরত দেন। বাকি কোনো কিছুই তিনি ফেরত পাননি।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কল ব গ ন থ ন র ড এমপ
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকায় সাবেক কাউন্সিলরের বোনকে গুলি করে হত্যা
রাজধানীর দারুস সালাম থানার দক্ষিণ বিশিল এলাকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে এক নারী নিহত হয়েছেন।
গতকাল রোববার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত নারীর নাম তাহমিনা রহমান রানু (৪২)। তিনি স্থানীয় সাবেক কাউন্সিলর আমিনুল ইসলামের বোন। দারুস সালাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দেবব্রত কুমার বিশ্বাস প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তাহমিনার এলাকায় একটি দোকান আছে। তিনি দোকানটি ভাড়া দিয়ে চলতেন। গতকাল দিবাগত রাত দেড়টার দিকে একদল সন্ত্রাসী এসে তাহমিনার ভাই আমিনুলের খোঁজ করে। আমিনুলকে না পেয়ে তারা তাহমিনাকে গুলি করে চলে যায়।
দারুস সালাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দেবব্রত কুমার বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত তাহমিনার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে বলে জানান এসআই দেবব্রত কুমার বিশ্বাস।