কোটি টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ, কলাবাগান থানার ওসি-এসআই প্রত্যাহার
Published: 5th, May 2025 GMT
সন্ত্রাসীদের নিয়ে গভীর রাতে চাঁদাবাজি ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকির অভিযোগে কলাবাগান থানার ওসিসহ এক এসআইকে সাময়িক প্রত্যাহার করা হয়েছে। গতকাল রোববার তাদের প্রত্যাহার করা হয়। প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন- ওসি মোক্তারুজ্জামান ও এসআই বেলাল হোসেন।
আজ সোমবার ডিএমপির মুখপাত্র উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। কোন অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের সাময়িক প্রত্যাহার করা হলো এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রশাসনিক কারণে কলাবাগান থানার ওসিসহ এক এসআইকে সাময়িকভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষাবিদ ও কলামিস্ট ড.
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, গত ২৯ এপ্রিল রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে কলাবাগান থানার এসআই বেলালের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সদস্য ও ১৫-২০ জনের একদল সন্ত্রাসী আমার বাড়িতে জোর করে ঢুকে পড়ে। আমার ম্যানেজার ৯৯৯ এ ফোন করলে এক গাড়ি পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই শাহবাগ ও নিউমার্কেট থানার টহল টিমের দুটি গাড়ি এসে বাড়ির সংলগ্ন মেইন রাস্তায় থামে। ম্যানেজার দেখতে পান কলাবাগান থানার ওসি মোক্তারুজ্জামান নিউমার্কেট ও শাহবাগের টহল টিমকে চলে যেতে বলেন। শাহবাগ ও নিউ মার্কেটের টহল টিমকে সংবাদ দেওয়ার জন্য আমার এক ষাটোর্ধ্ব ভাড়াটিয়া লাল মিয়া ও নাইট গার্ড লুৎফরকে কলাবাগান থানার ওসি পুলিশের গাড়িতে তুলতে নির্দেশ দেন। যা আমার বাসার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ রয়েছে।
তিনি বলেন, বাসার ভেতর ঢুকে মান্নান নামের একজন পুলিশ সদস্য আমাকে একটু আড়ালে নিয়ে বলেন, এই মুহূর্তে এক কোটি টাকা দিতে পারলে আমার থানায় যেতে হবে না। বাড়িতে রেখে যাবে। কী মামলা হয়েছে জানতে চাইলে তারা জানায় কোনো মামলা হয়নি, তারা টাকার জন্য এসেছে।
যদি টাকা না দেই আমার বিরুদ্ধে ১০টা মামলা হবে। অনেক দেন দরবার করার পর আমি দুই লাখ টাকা পুলিশ সদস্য বেলাল ও মান্নানের হাতে তুলে দেই। ব্যাংকিং আওয়ারের মধ্যে বাকি টাকা দেওয়ার শর্তে তিনজন সিভিল ড্রেস পরা ব্যক্তিকে আমার পাহারায় রেখে যায়। তারা নিজেদেরকে ডিবি পুলিশের পরিচয় দেয়।
ভুক্তভোগী ড. আব্দুল ওয়াদুদ আরও বলেন, এ ঘটনায় ২ মে ডিএমপি কমিশনার বরার একটি লিখিত অভিযোগ করেছি। যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কল ব গ ন ড এমপ প ল শ সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে নোয়াখালীতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
নোয়াখালী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে আবারও সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ মিছিল ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা তাদের ওপর প্রধান শিক্ষকের লেলিয়ে দেওয়ার বহিরাগতদের হামলার প্রতিবাদে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। আজ বুধবার সাড়ে ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা এসব কর্মসূচি পালন করে।
এর আগে আজ সকালে প্রধান শিক্ষকের অনিয়মের তদন্তে গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা বিদ্যালয়ে যাওয়ার আগে সেখানে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়। তখন প্রধান শিক্ষকের পক্ষ হয়ে বহিরাগত একদল তরুণ ও বিদ্যালয়ের কর্মচারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান। তাঁরা শিক্ষার্থীদের রড দিয়ে আঘাত করেন। এতে মো. তামিম ও ইয়াসিন আরাফাত নামের দুই শিক্ষার্থী আহত হয়।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানায়, শিক্ষিকাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, শিক্ষার্থীদের কোচিং করতে বাধ্য করাসহ বিভিন্ন অনিয়মের জড়িত প্রধান শিক্ষক রিয়াদ মাহমুদের অপসারণ ও বিচারের দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরে তারা আন্দোলন করছে। তাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে এরই মধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজ সকালে ওই তদন্ত কমিটি সরেজমিনে বিদ্যালয়ে তদন্ত করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নোয়াখালী উচ্চবিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী তাদের প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে জেলা শহর মাইজদীতে সুধারাম থানার পাশে সড়কে অবস্থান নেয়। প্রায় এক ঘণ্টা সময় ধরে শিক্ষার্থীরা সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। এ সময় পুলিশ ও সেনবাহিনীর কর্মকর্তারা সেখানে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেয়।
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য প্রধান শিক্ষক মাহমুদ রিয়াদকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন ধরেননি। ফলে শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতদের দিয়ে হামলার বিষয়ে তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
কথা হয় তদন্ত কমিটির প্রধান জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফাহিম হাসান খানের সঙ্গে। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, তিনি প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ সরেজমিনে তদন্ত করেছেন। সব পক্ষের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন।
জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, নোয়াখালী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। তদন্তের মধ্যেই আজ শিক্ষার্থীরা তাঁর কার্যালয়ের সামনে কর্মসূচি পালন করেছে। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগও তিনি পেয়েছেন। সবকিছু তদন্তের আওতায় আসবে। কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।