শাহরিয়ার হত্যার ‘প্রকৃত’ আসামিদের গ্রেপ্তার দাবিতে আবার শাহবাগ থানা ঘেরাও
Published: 18th, May 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার ‘প্রকৃত’ আসামিদের গ্রেপ্তারে বেঁধে দেওয়া ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমা শেষে শাহবাগ থানা ঘেরাও করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সমাবেশ শেষে দুপুর ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে শাহবাগ থানা ঘেরাও করেন।
শাহরিয়ার হত্যার ‘প্রকৃত’ আসামিদের গ্রেপ্তারে গত শুক্রবার দুপুরের দিকে শাহবাগ থানা ঘেরাও করেছিলেন শিক্ষার্থীরা। পরে তাঁরা ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে সরে যান। এখন শিক্ষার্থীরা বলছেন, বেঁধে দেওয়া সময়সীমার মধ্যে ‘প্রকৃত’ আসামিরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় তাঁরা আবার শাহবাগ থানা ঘেরাওয়ের কর্মসূচি পালন করছেন।
আরও পড়ুনশাহবাগ থানা ঘেরাও, শাহরিয়ার হত্যায় আসামিদের গ্রেপ্তারে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম১৬ মে ২০২৫আজ রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশের সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টর সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশে উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান বলেন, ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশের পক্ষ থেকে কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সকল রাজনীতির ঊর্ধ্বে থেকে দলমত-নির্বিশেষে এক হয়ে শাহরিয়ার হত্যার বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
সমাবেশ শেষে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে শাহবাগ থানার সামনে অবস্থান নেন। শিক্ষার্থীরা বলেন, এই খুনের সঙ্গে জড়িত প্রকৃত আসামিদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে। সবাইকে আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে। কিন্তু এই হত্যার এত দিন পরেও এ ব্যাপারে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না।
আরও পড়ুনশাহরিয়ার হত্যায় গ্রেপ্তার তিনজন ৬ দিনের রিমান্ডে২১ ঘণ্টা আগেএ সময় শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন, ‘আমারে ভাই মরল কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে?’ ।
গত মঙ্গলবার রাতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্ত মঞ্চের পাশে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার নিহত হন। তিনি স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি।
আরও পড়ুনশাহরিয়ার হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিলেন প্রত্যক্ষদর্শী বন্ধু১৪ মে ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ হব গ থ ন প রক ত হত য র
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক কার্যকরের সময়সীমা বাড়ল
যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক এড়াতে আলোচনার জন্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বেঁধে দেওয়া ৯০ দিনের সময়সীমা শেষ হচ্ছে আগামী বুধবার (৯ জুলাই)। এরই মধ্যে কিছু দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করেছে। তবে বাংলাদেশসহ বেশির ভাগ দেশের সঙ্গে এখনো আলোচনা চলছে ওয়াশিংটনের। এমন পরিস্থিতিতে পাল্টা শুল্ক কার্যকরের সময়সীমা বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।
শুল্ক কার্যকরের সময়সীমা বাড়ানো হলেও ৯ জুলাইয়ের মধ্যে বেশ কিছু দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প। আর যেসব দেশের সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ে কোনো সমঝোতা হয়নি, তাদের নতুন শুল্কের পরিমাণ জানিয়ে চিঠি দেওয়া হবে। ট্রাম্পের ভাষ্য অনুযায়ী, স্থানীয় সময় সোমবার প্রথম ধাপে এমন ১৫টি দেশকে চিঠি দেওয়ার কথা।
সপ্তাহান্তের গলফ উপভোগ শেষে স্থানীয় সময় রোববার নিউ জার্সি অঙ্গরাজ্য থেকে ওয়াশিংটনে ফেরেন ট্রাম্প। এর আগে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘১২টি দেশকে চিঠি দেওয়া হবে। তা ১৫টিও হতে পারে।’ এ সময় সাংবাদিকেরা জানতে চান, নতুন শুল্ক ৯০ দিনের সময়সীমা শেষে, নাকি ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে? তবে এ প্রশ্নের স্পষ্ট কোনো জবাব দিতে পারেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ট্রাম্পের মুখে অস্পষ্টতা দেখে প্রশ্নের জবাব দেওয়া শুরু করেন মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক। তিনি বলেন, ‘শুল্ক ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। প্রেসিডেন্ট এখন শুল্কের হার নির্ধারণ এবং বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে কাজ করছেন।’ ট্রাম্প এ নিয়ে আর কোনো কথা না বললেও পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে জানান, সোমবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টায় চিঠি পাঠানো শুরু করবে যুক্তরাষ্ট্র।
শুল্ক নিয়ে ছোট আরও ১০০টি দেশকে ট্রাম্প প্রশাসন চিঠি দেবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট। সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে তিনি বলেন, এই দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের তেমন একটা বাণিজ্য হয় না। চিঠিতে তাদের নতুন উচ্চ শুল্কহারের কথা জানিয়ে দেওয়া হবে। ১ আগস্ট থেকে পাল্টা শুল্ক কার্যকরের কথা উল্লেখ করে বেসেন্ট বলেন, এদিন থেকে ২ এপ্রিলের হারে শুল্ক ফিরে আসবে।
গত ২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি করা দেশগুলোর ওপর ন্যূনতম ১০ শতাংশ হারে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। বাণিজ্য–ঘাটতির অজুহাতে অনেকে দেশের ওপর সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত পাল্টা শুল্ক চাপিয়ে দেওয়া হয়। পরে ৯ এপ্রিল পাল্টা শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করা হয়। এ সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য দেশগুলোকে সুযোগ দেন ট্রাম্প।
৯০ দিন শেষে ৯ জুলাইয়ের পরই পাল্টা শুল্ক কার্যকরের কথা ছিল। তবে ১ আগস্ট পর্যন্ত পেছানোয় বাণিজ্য আলোচনার জন্য আরও তিন সপ্তাহ সময় পেল বিভিন্ন দেশ। এখন পর্যন্ত শুধু যুক্তরাজ্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করতে পেরেছে। ভিয়েতনামও চুক্তিতে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। বাকি দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো অগ্রগতির কথা জানা যায়নি।
বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে বাংলাদেশেরও আলোচনা চলছে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান ও বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। গত শুক্রবার বাণিজ্য উপদেষ্টা প্রথম আলোকে জানিয়েছিলেন, ৯ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় বৈঠকে বসবেন তাঁরা। বৈঠক থেকে শুল্ক নিয়ে ভালো ফল পাওয়ার আশা করা হচ্ছে।
শুল্ক নিয়ে আগামী ১ থেকে ২ দিনের মধ্যে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সংক্ষিপ্ত বাণিজ্য চুক্তি করার সিদ্ধান্ত হতে পারে। রোববার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি-টিভি১৮-এর খবরে বলা হয়েছে, ওই চুক্তি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা ভারতীয় পণ্যের ওপর গড়ে ১০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হতে পারে। আর ৩৬ শতাংশ হারে শুল্ক এড়াতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও বেশি পণ্য কেনাসহ নানা প্রস্তাব দিয়েছে থাইল্যান্ড।
নানা জটিলতার পরও শুল্ক নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। আজ ইইউর বাণিজ্য মুখপাত্র ওলোফ গিল বলেছেন, রোববার ট্রাম্প ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডার লিয়েনের মধ্যে ‘ভালো আলাপ’ হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দ্রুত একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর আশা করা হচ্ছে।