নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে আরও একটি মামলা হয়েছে। গতকাল সোমবার উপজেলা শ্রমিক দলের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি সবুজ মিয়া বাদী হয়ে থানায় মামলাটি করেন।

বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা এই মামলায় ১৯৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এতে প্রধান আসামি করা হয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র আসাদুল হক ভূঁইয়াকে। অন্য মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে তিনি কারাগারে আছেন। আসামিদের মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মী ও সাংবাদিকও আছেন। মামলায় ৭২ নম্বর আসামি করা হয়েছে সাংবাদিক জিয়াউর রহমানকে। তিনি দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার কেন্দুয়া উপজেলা প্রতিনিধি। এ ছাড়া তিনি দেশ টিভি ও প্রতিদিনের বাংলাদেশ পত্রিকার নেত্রকোনা প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্বে আছেন।

এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ৪ আগস্ট সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত আসামিরা পৌরসভার চিরাংমোড়, খেলার মাঠের পাশে সিএনজি স্টেশন, সাউদপাড়া মোড়, বাদে আঠারোবাড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ভয়ভীতি দেখানোসহ রাস্তা বন্ধ করে যানবাহন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। ওই ঘটনায় কিছুটা দেরিতে হলেও তিনি মামলাটি করেছেন।

এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার সকালে বাদী সবুজ মিয়া মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত হয় মামলা করতে হবে। তাই আমি মামলার বাদী হয়েছি।’

গত বছর আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ১৭ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত জেলায় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অন্তত ৫৮টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ছয় হাজারের মতো আসামি করা হয়েছে। গতকালের মামলার প্রধান আসামি আসাদুল হক ভূঁইয়াসহ অনেকেই বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন। আবার অনেকেই আত্মগোপনে গেছেন।

কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।

‘আসামি অনেককেই আমি চিনি না’

মামলার আসামি সাংবাদিক জিয়াউর রহমান বলেন, ‘এজাহারে যে সময় ও ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে, সে সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না। আমাকে অহেতুক এসব তকমা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ফেসবুকের প্রোফাইল লাল করায় ক্ষমতাসীন দলের নেতা–কর্মীরা আমাকে হয়রানি করেছিলেন।’

এ সম্পর্কে মামলার বাদী সবুজ মিয়া বলেন, ‘এজাহারে উল্লেখ করা আসামি অনেককেই আমি চিনি না। সাংবাদিক জিয়াউর রহমানকেও আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি না। দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মামলার বাদী হয়েছি।’

এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব রফিকুল ইসলাম (হিলালী) বলেন, জিয়াউর রহমানকে সাংবাদিক হিসেবে মামলা দেওয়া হয়নি। তিনি স্বেচ্ছাসেবক লীগের পদে রয়েছেন। তবে কোন পদে রয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি জেনে বলতে হবে। পরে তিনি হোয়াটসঅ্যাপে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার সঙ্গে জিয়াউর রহমানের ছবি পাঠান।

কেন্দুয়া রিপোর্টার্স ক্লাবের সাবেক সভাপতি মামুনুর রশিদ বলেন, জিয়াউর রহমান একজন পেশাদার সাংবাদিক। সহিংসতাসংক্রান্ত অপরাধের অভিযোগ এনে তাঁকে এভাবে আসামি করা স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থী। এটা তাঁর জন্য এটা অত্যন্ত অসম্মানের।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র রহম ন উল ল খ উপজ ল আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

কর্কশিট বক্সের অন্য রকম ব্যবসা

২ / ৯মাছ বাজার থেকে সংগ্রহ করা শোলার বক্স। প্রতিটি সংগ্রহ করা হয়েছে ৩০ টাকায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ