যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধ দ্রুত অবসানের আশা ক্রমশ ম্লান হতে যাওয়ায় ‘বাকযুদ্ধে’ জড়িয়ে পড়েছে ওয়াশিংটন ও মস্কো। খবর আল জাজিরার।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কিয়েভের সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি আলোচনায় অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ‘আগুন নিয়ে খেলছেন’ বলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মন্তব্য করার পর, মস্কোর একজন জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা ট্রাম্পকে তিরস্কার করেছেন এবং আরেকটি বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

মঙ্গলবার (২৭ মে) রাতে ট্রাম্পের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়ার শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেছেন, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধই একমাত্র ‘সত্যিকার খারাপ জিনিস।’ ট্রাম্প এর আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় পুতিনের উদ্দেশ্যে একটি সতর্কবার্তায় বলেছিলেন যে, তার হস্তক্ষেপ ছাড়া ‘রাশিয়ার সঙ্গে ইতিমধ্যেই অনেক খারাপ ঘটনা ঘটতো’। 

আরো পড়ুন:

পুতিন ‘আগুন’ নিয়ে খেলছেন: ট্রাম্প

পুতিন পাগল হয়ে গেছেন: ট্রাম্প

মঙ্গলবার (২৭ মে) ট্রাম্প তার মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ একটি পোস্টে বলেন, “ভ্লাদিমির পুতিন যা বুঝতে পারেন না তা হলো, আমি না থাকলে রাশিয়ার সঙ্গে ইতিমধ্যেই অনেক খারাপ ঘটনা ঘটে যেত এবং আমি বলতে চাইছি সত্যিই খারাপ কিছু। তিনি আগুন নিয়ে খেলছেন।” 

ট্রাম্পের এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ একটি পোস্টে মেদভেদেভ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “আমি কেবল একটি সত্যিকার খারাপ জিনিস সম্পর্কে জানি- তা হলো তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ। আমি আশা করি ট্রাম্প এটি বুঝতে পেরেছেন!”

মেদভেদেভ বর্তমানে রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান এবং পুতিনের একজন গুরুত্বপূর্ণ মিত্র। মেদভেদেভ ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং তিনি তার কঠোর মন্তব্যের জন্য পরিচিত।

ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধে তিনি বারবার সতর্ক করে বলেছেন যে, মস্কো তার পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে।

২০২৪ সালের মার্চ মাসে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে পুতিন পারমাণবিক সংঘর্ষের সম্ভাবনাও তুলে ধরেন। সেসময় তিনি পশ্চিমা দেশগুলোকে রাশিয়ার পারমাণবিক ক্ষমতা সতর্ক করে দেন যে, কেউ যদি ইউক্রেনের সমর্থনে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে এটি ঘটতে পারে।

এর আগে গত রবিবার (২৫ মে) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক পোস্টে বলেছিলেন, যুদ্ধবিরতির জোড়ালো আহ্বান ও শান্তিচুক্তির জন্য ওয়াশিংটনের মধ্যস্থতার মধ্যেও ইউক্রেনে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়ে পুতিন ‘একেবারে পাগল’ হয়ে গেছেন।

ট্রাম্প তার রবিবারের পোস্টে বলেন, “রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আমার সবসময়ই খুব ভালো সম্পর্ক ছিল, কিন্তু তার সঙ্গে কিছু ঘটেছে। তিনি পুরোপুরি পাগল হয়ে গেছেন! তিনি অপ্রয়োজনে অনেক মানুষকে হত্যা করছেন- শুধু সৈনিক নয়, বেসামরিক নাগরিকও। কোনো কারণ ছাড়াই ইউক্রেনের শহরগুলোতে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ছোড়া হচ্ছে।” 

তবে, রবিবার ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ ট্রাম্পের সমালোচনাকে ‘আবেগজনিত অতিরিক্ত চাপ’ বলে উড়িয়ে দেন।

এদিকে, গতকাল মঙ্গলবার কিয়েভ আবারো যুদ্ধক্ষেত্রে ধাক্কা খেয়েছে। রাশিয়ান বাহিনী ইউক্রেনের উত্তর-পূর্ব সুমি অঞ্চলের চারটি গ্রাম দখল করে নিয়েছে।

সুমির গভর্নর ওলেহ হ্রাইহোরভ ফেসবুকে লিখেছেন, নোভেনকে, বাসিভকা, ভেসেলিভকা এবং ঝুরাভকা গ্রাম রাশিয়া দখল করেছে, যদিও বাসিন্দাদের অনেক আগেই সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।

সোমবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, তারা নিকটবর্তী বিলোভোদি গ্রামটিও দখল করেছে, যা তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান যুদ্ধে ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডে আরো অগ্রসর হওয়ার ইঙ্গিত দেয়।

ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা কয়েক সপ্তাহ ধরে বলে আসছিলেন যে, রাশিয়ান সৈন্যরা সুমি অঞ্চলে প্রবেশের চেষ্টা করছে, যার প্রধান শহরটি রাশিয়ার সীমান্ত থেকে ৩০ কিলোমিটার (১৯ মাইল) এরও কম দূরে অবস্থিত।

ইউক্রেনীয় বাহিনী গত বছর রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে প্রবেশের জন্য সুমি অঞ্চলকে লঞ্চপ্যাড হিসেবে ব্যবহার করেছিল। গত মাসে কুরস্কে রাশিয়ান বাহিনী কর্তৃক বিতাড়িত হওয়ার আগে ইউক্রেনীয় বাহিনী সেখানে বিশাল এলাকা দখল করেছিল।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র শ য় ইউক র ন য দ ধ য ক তর ষ ট র ইউক র ন ইউক র ন য ইউক র ন র

এছাড়াও পড়ুন:

আমি কখনোই এনসিপিকে সমর্থন করব না: সায়ান

জামায়াতের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কোলাকুলি করে ভোটের রাজনীতি করতে গিয়ে এই দেশে কিছুদিন আগেই একটা বড় দলের ত্রাহি মধুসূদন দশা হয়েছিল। আওয়ামী এমন নতুন ধারাবাহিক-গুরুতর পাপকর্ম করেছে দেশের মানুষের বিপক্ষে যে সেই দলের গুরু পাপকে ভুলিয়ে দিয়েছে প্রায়। নতুন দল এনসিপির সারজিস, হাসনাতরা প্রথম থেকেই তাদের রাজনীতি পরিষ্কার করে দিয়েছে। ধন্যবাদ। সেই হিসেবে দেশের মানুষের, আমাদের মতো সাধারণ মানুষের অনেক সুবিধা হলো। দিনের শেষে ভোটেই তো দাঁড়াতে হবে আপনাদের।
জামায়াতকে বুকের সঙ্গে আগলে রেখে, রাজাকারের ‘বেকসুর খালাসকে’ সেলিব্রেট করে আপনারা আমাদের ভোট চান? বিবেকবান স্বাভাবিক সাধারণ মানুষের? একাত্তরের পরে জন্মেছি বলে কি জামায়াত চিনি না? আলবদর চিনি না? বীরাঙ্গনার ব্যথা বুঝি না? এই দেশের ছোট ছোট বাচ্চারাও ইতিহাসবিদদের মতো দিন–তারিখের রেফারেন্স দিয়ে জামায়াতের জন্ম–ইতিহাস বলতে পারবে না হয়তো। কিন্তু জামায়াত কী, তাদের আদর্শ কী, তারা এই দেশের মানুষকে নিয়ে কী করতে চায়, তা আজকে সকালে জন্ম নেওয়া বাচ্চটাও কালকে বিকেলের মধ্যে শিখে যায়।

আরও পড়ুনক্ষমতার সঙ্গে সখ্য শিল্পীর জন্য ক্ষতিকর: সায়ান২৮ ডিসেম্বর ২০২৩

এনসিপি যে এই জায়গাটা ধরতে পারে নাই, তা তাদের বুদ্ধিমত্তার নির্দেশক। তারা নতুন দেশ গড়ার কথা বলে নিজেদের ভোটের জন্য জামায়াতকে বুকে টেনেছে বলে মনে হয়। আবার তাদের আরেকটি সঞ্চয় হলো ‘আওয়ামী-ঘৃণা’। আজকে দেশে অনেক অন্যায় ঘটছে। তাদের সেসবে হেলদোল নেই। কিন্তু জামায়াত আর আলবদরকে ভালোবাসায় তারা আগুয়ান। ধন্যবাদ এই স্বচ্ছতার জন্য।

আমি প্রতিমুহূর্তে নিজের রাজনীতিকে পরিবর্তন করার পক্ষে। আজকে যাকে ভালো লাগছে, কালকে তাকে ছুড়ে ফেলে দিতে দ্বিধা করি না, মাটির প্রশ্নে। সেই হিসাবে আমার রাজনৈতিক ইমান খুব তরল এবং সেটাই আমি চাই। নাহিদরা যখন বুক পেতে দিয়ে এগিয়ে গিয়েছিল গত জুলাইতে, ওদের জন্য ভালোবাসা ছিল, সমর্থন ছিল। সেদিন সেটাই ছিল আমার রাজনীতি। ওদের সেই মৃত্যুর মুখে দাঁড়ানো, সেটাকে সেই সময়ের সত্যিকারের দেশপ্রেম, আর মানুষপ্রেম, মাটিপ্রেম মনে হয়েছিল। তার জন্য আমি একটুও দুঃখিত হব না কোনো দিন। আমার সেই দিনের সমর্থনের জন্য আমি কোনো দিন অনুতপ্ত হব না। নেভার! কিন্তু গত কয়েক মাসের তাদের অনেক আচরণ, অনেক কিছু দেখতে দেখতে দেখছি, আজকে সেই একই দলের ছেলেমেয়েরা যে আজহারের বেকসুর খালাসকে উদ্‌যাপন করল, আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের সমর্থন করল, (এমনকি লজ্জায় বা কৌশলে চুপ করে থাকল না, প্রকাশ্যে সমর্থন করল), আর নাদিরা ইয়াসমিনের অন্যায়ভাবে বদলির বিরুদ্ধে একটা কথাও বলল না, এই দেশের একজন মানুষ হিসেবে এটাই আমার আপাতত রাজনীতি যে এরপর এই নতুন দলটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে আজকে থেকে বর্জন করলাম। এইটুকু করার কথা ভেবেই নিজের অশান্ত মনকে আমি খানিকটা শান্তি দিতে পারছি। আগামী নির্বাচনে আমি এনসিপি, জামায়াত, এই সমমনা দলগুলোকে ভোট নিজে তো দেবই না; বরং মানুষকে অনুরোধ করব যেন তারা এই দলগুলো থেকে দূরে থাকে। একজন একক ব্যক্তি হিসেবে এটাই আমার সাধ্য। আমি এনসিপিকে সমর্থন করব না।

আরও পড়ুনআমি ভোট দেব, তবে আজীবনের আনুগত্য দেব না২২ নভেম্বর ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১৭ দিনের ছুটিতে যাচ্ছে রাবি, হল বন্ধ নিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
  • আপস করে তো ভিতু মানুষ, আপস করে তো মেরুদণ্ডহীন প্রাণী: হুমায়ুন ফরীদি
  • চট্টগ্রামে ছাত্র জোটের কর্মসূচিতে হামলার মামলার এক আসামির জামিন
  • ‘ব্যবসায় বাজিমাত’ শুধু গান নয়, এটি ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের জোরালো বার্তা
  • মস্কো থেকে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতকে ‘স্ট্যান্ড রিলিজ’
  • বাংলাদেশ ব্যাংকে ‘আয়নাবাজি’
  • বাংলাদেশ ব্যাংকে আয়নাবাজি
  • ভুয়া নিয়োগে একযুগ ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি
  •  বলয় নাটকের জোড়া মঞ্চায়ন
  • আমি কখনোই এনসিপিকে সমর্থন করব না: সায়ান