‘স্যার, আমি জাহালম। আমি আবু সালেক না…আমি নির্দোষ।’ ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এ বিচারকের উদ্দেশে তাঁকে বারবার বলতে দেখা যায়, ‘আমি আবু সালেক না।’ পরে জানা যায়, আবু সালেকের বিরুদ্ধে সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির ৩৩টি মামলা হয়েছে। কিন্তু আবু সালেকের পরিবর্তে জেল খাটেন জাহালম, আদালতে হাজিরাও দেন তিনি।

জাহালম ছিলেন পেশায় পাটকলশ্রমিক। পরে মুক্তি পান জাহালম, এ জন্য ক্ষতিপূরণও পান। ২০১৭ সালে ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর তখন দেশজুড়ে বেশ আলোচনা তৈরি হয়।

একই রকম ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশ ব্যাংকে। তবে সেটি এক আসামির পরিবর্তে অন্যজনের জেল খাটার ঘটনা নয়। এবারের ঘটনাটি একজনের পরিবর্তে আরেকজনের চাকরি করে যাওয়ার, তা–ও এক যুগ ধরে। ছবি  পরিবর্তে এক যুগ ধরে একজনের পরিবর্তে বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি করেছেন আরেক ব্যক্তি। অবশেষে তদন্তে ধরার পর সম্প্রতি সেই নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে।

জানা যায়, ২০১৩ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে চাকরি হয় মো.

আব্দুল ওয়ারেছ আনসারীর। তবে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগ না দিয়ে যোগ দেন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা হিসেবে। বর্তমানে তিনি নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক। নিয়োগ পেয়েও মো. আব্দুল ওয়ারেছ আনসারী বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগ না দেওয়ায় সেই সুযোগটিকে কাজে লাগান বাংলাদেশ ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা মো. শাহজাহান মিঞা। আব্দুল ওয়ারেছ আনসারীর জায়গায় নিজের ভাগনেকে নিয়োগ দেন। এ জন্য ভাগনের নাম বদলে আব্দুল ওয়ারেছ আনসারী রাখা হয়। আবদুল ওয়ারেছ আনসারী নামে শাহজাহান মিঞার ভাগনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চাকরি করেন ১২ বছর, দুটি পদোন্নতি পেয়ে হয়েছেন যুগ্ম পরিচালক। সম্প্রতি এক তদন্তে এই তথ্য বেরিয়ে আসার পর মো. শাহজাহান মিঞাকে বরখাস্ত ও তাঁর ভাগনের নিয়োগ বাতিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি নজরে আসায় তাঁর নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। আরও কেউ এমন সুযোগ নিয়েছেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ব্যবস্থা নেবে।

মো. আব্দুল ওয়ারেছ আনসারী

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মস্কো থেকে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতকে ‘স্ট্যান্ড রিলিজ’

অন্তর্বর্তী সরকার ওয়াশিংটনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসাদ আলম সিয়ামকে পরবর্তী পররাষ্ট্রসচিব হিসেবে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একটি ফেসবুক পোস্টে সরাসরি ওই নিয়োগের সমালোচনা করেছেন রাশিয়ায় বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত (চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স-সিডিএ) মো. ফয়সাল আহমেদ। সরকারের রীতি-নীতি ভঙ্গ করে সরাসরি নীতিনির্ধারণী মহলের সিদ্ধান্তের সমালোচনার জন্য মো. ফয়সাল আহমেদকে গতকাল মঙ্গলবার ‘স্ট্যান্ড রিলিজ’ করা হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আজ বুধবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে এ তথ্য জানিয়েছেন। গত সোমবার মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে একটি দাপ্তরিক আদেশ জারি করেছে।

ফয়সাল আহমেদকে স্ট্যান্ড রিলিজের পর দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঢাকায় ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা জানান, আগামী সপ্তাহের শুরুতে তাঁকে ঢাকায় ফিরতে হবে।

মস্কোর বাংলাদেশ দূতাবাসের সিডিএ ফয়সাল আহমেদকে স্ট্যান্ড রিলিজের পর দূতাবাসের কাউন্সেলর (রাজনৈতিক) মো. নিয়াজ মোর্শেদকে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে।

গত ২২ মে ফয়সাল আহমেদ ফেসবুকে লেখেন, ‘হযবরল সেগুনবাগিচায় কে পররাষ্ট্রসচিব হবেন, নিশ্চিত নয়। একজন অতিরিক্ত সচিব আসাদ আলম সিয়ামকে ১০ জন সচিবকে ডিঙিয়ে কেন তড়িঘড়ি করে পররাষ্ট্রসচিব করা হচ্ছে বোধগম্য নয়। আসাদ আলম সিয়াম শেখ হাসিনার লয়ালিস্ট হিসেবে তিন বছর চিফ অব প্রটোকল ছিলেন। আওয়ামী লীগের ইন্টারেস্ট সার্ভ (স্বার্থ রক্ষা) করার জন্যই পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আসাদ আলম সিয়ামকে নির্বাচনকালীন সময়ে পররাষ্ট্রসচিব করতে চান।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাইফ, এই সিনেমা আপনি কেন করলেন
  • শাওনের ‘বিজ্ঞানপ্রিয়’ গড়ে তোলার গল্প
  • গড়ে ৩৭ বছর বয়সে মারা যাচ্ছেন প্রবাসী কর্মীরা: রামরুর সংলাপ
  • ১৭ দিনের ছুটিতে যাচ্ছে রাবি, হল বন্ধ নিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
  • আপস করে তো ভিতু মানুষ, আপস করে তো মেরুদণ্ডহীন প্রাণী: হুমায়ুন ফরীদি
  • চট্টগ্রামে ছাত্র জোটের কর্মসূচিতে হামলার মামলার এক আসামির জামিন
  • ‘ব্যবসায় বাজিমাত’ শুধু গান নয়, এটি ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের জোরালো বার্তা
  • মস্কো থেকে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতকে ‘স্ট্যান্ড রিলিজ’
  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন দাবি নোয়াখালী কলেজ শিক্ষার্থীদের