পরকীয়ার জের ধরে ২২ দিনের শিশুকে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে মা ও তার প্রেমিকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে মিরপুর থানা পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দুপুরে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ চিথলিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন, পোড়াদহ চিথলিয়া এলাকার সেরেবুল ইসলাম (২৮), মা মিতা খাতুন (২৫), সাইদুল ইসলাম (৫০) ও চাঁদনী খাতুন (৩৫)।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আট মাস আগে জেলার খলিসাকুন্ডি এলাকার রাজুর সঙ্গে মিতা খাতুনের বিয়ে হয়। মিতা খাতুন সম্প্রতি এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। এই বাচ্চা নিয়ে রাজু ও মিতার মাঝে ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকে। যার পরিপ্রেক্ষিতে মিতা বাচ্চা নিয়ে বাবার বাড়ি চিথলিয়া চলে আসে। মিতা বাবার বাড়িতে আসার পর ‘বাচ্চাটির বাবা কে’ এ নিয়ে প্রেমিক সেরেবুলের সঙ্গে তার ঝামেলা শুরু হয়। পরবর্তীতে মিতা ও সেরেবুল বাচ্চাটিকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়।

আরো পড়ুন:

পরকীয়ার জেরে কবিরাজকে খুন: দেবর-ভাবীর মৃত্যুদণ্ড

ময়মনসিংহে মুক্তিযোদ্ধা ও নারীকে কুপিয়ে হত্যা, আহত ৪

এ ঘটনায় সেরেবুলের বাবা ও তার ভাবি শিশুকে হত্যায় সহায়তা করে। গত ২৫ মে মেয়েটিকে হত্যা করে সেরেবুল ও মিতা। পরে পাশের খালে লাশ ফেলে দেয়। তারা অপপ্রচার করতে থাকে মিতার স্বামী রাজু বাচ্চাটি চুরি করে নিয়ে গেছে। ২৫ মে রাতে মিতা খাতুন মিরপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। তাৎক্ষণিক মিরপুর থানা পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করে। আজ বৃহস্পতিবার (২৯ মে) জিজ্ঞাসাবাদে মিতা ঘটনার বিষয়ে স্বীকার করে।  

মিরপুর থানার ওসি মমিনুল ইসলাম, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল আজিজ ও মামলা তদন্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুর লাশ উদ্ধার করে চার আসামিকে গ্রেপ্তার করে।

মিরপুর থানার ওসি মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিকভাবে শিশুটির মা মিতা খাতুনের স্বীকারোক্তিতে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামিদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে খাল থেকে শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আসামিদের শুক্রবার (৩০ মে) স্বীকারোক্তি দেয়ার জন্য আদালতে পাঠানো হবে।

ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য মরদ হ গ র প ত র কর ল ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ