Samakal:
2025-07-31@07:22:14 GMT

বিষমুক্ত দেশি ফল তাল শাঁস

Published: 30th, May 2025 GMT

বিষমুক্ত দেশি ফল তাল শাঁস

নাটোরে গ্রীষ্মকালীন ফল হিসেবে তালের শাঁসের কদর বেড়েছে। মধু মাসখ্যাত বাংলার জ্যৈষ্ঠ মাসে এই তাল শাঁস বাজারে আসে। এই মধু মাসে রসালো আম, জাম, কাঁঠাল ও লিচু অন্যান্য ফলের সমাগম হয়। তবে এসব ফলে ফরমালিন ও কীটনাশক ছিটানো হলেও তাল শাঁসে ফরমালিনের কোনো বিষ থাকে না। এ কারণে মানুষের কদর বাড়ছে তাল শাঁসে। অপরিপক্ব এই তালের শাঁসকে স্থানীয় ভাষায় তালকুড় বলা হয়। তালের শাঁসের পুষ্টিগুণও রয়েছে বলে জানান চিকিৎসকরা।
‘ঐ দেখা যায় তাল গাছ, ঐ আমাদের গাঁ, ঐ খানেতে বাস করে কানা বগির ছা’ খান মঈনুদ্দীনের ‘কানা বগির ছা’ ছড়াতে গাঁয়ের তাল গাছে এখন বকের ছানা থাক বা না থাক, তাল গাছগুলো কিন্তু কচি তালে ভরে গেছে। তাই গাছে কচি তাল ভরে উঠতে দেখে গাছি বা ব্যবসায়ীরা এসব কচি তাল কিনে হাট-বাজারে তাল শাঁস বিক্রি করেন। 
একমাত্র ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ এই দুই মাস গ্রীষ্মকাল। এই গ্রীষ্মকালের পুরো বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠের শুরুর দিকে যেমন কাঁচা আম পাওয়া যায় তেমন জ্যৈষ্ঠ মাসের মাঝামাঝি থেকে পাওয়া যায় রসালো আম, জাম, কাঁঠাল ও লিচু। এ কারণে এই মাসকে মধু মাস বলা হয়। এই মধু মাসে মৌসুমি ফল আম, জাম, কাঁঠাল ও লিচুর পাশাপাশি পাওয়া যায় তালের নরম শাঁস। রসে ভরা এসব ফল সুন্দর ও তাজা রাখতে অসাধু ব্যবসায়ীরা ফলে ফরমালিন বা রাসায়নিক মিছিয়ে দেন। ফলে এসব ফল বিষ যুক্ত হয়ে স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। এ সব কারণে মানুষ ঝুঁকে পড়ছেন পুষ্টিগুণসম্পন্ন গ্রীষ্মকালীন ফল তালের শাঁসে (তাল কুড়)। তাই কদরও বেড়েছে এই ফলের।
তাল কুড় বিক্রেতা মো.

খোকন আলী জানান, গ্রীষ্ণ মৌসুমে তিনি প্রতিদিন সদর উপজেলার ঠাকুর লক্ষিকুল গ্রাম থেকে তাল বিক্রি করতে শহরে আসেন। প্রতিদিন ৩শ থেকে ৪শ তাল নিয়ে আসেন। তিনি প্রতি বছরই এ সময়ে তালের শাঁস বিক্রি করেন। গ্রামাঞ্চলে ঘুরে ঘুরে তাল কিনে নিয়ে আসেন। গাছে উঠতে কষ্ট হলেও ওই গাছ থেকে তাল তাদেরই পাড়তে হয়। হাট-বাজারে নিয়ে তারা তাল কেটে বের হওয়া নরম শাঁস বিক্রি করেন। বৈশাখ থেকে জ্যৈষ্ঠ মাসে গাছে তাল কুড় থাকে। 
সদর উপজেলার পাইকেরদোল এলাকার মাহতাব বলেন, তিনি মৌসুমের আগে তাল গাছ কিনে থাকেন। একেকটি গাছ তিনশ থেকে চারশ টাকায় কেনেন। প্রতিদিন ওই সব গাছ থেকে তাল নামিয়ে এনে বাজারে তালের শাঁস বা তালকুড় বিক্রি করেন। ২শ থেকে ৩শ পিস তালের শাঁস বিক্রি করেন। একটি তালে সর্বোচ্চ তিনটি করে তাল শাঁস থাকে। বিষমুক্ত ও পুষ্টিগুণ হওয়ায় এই তালকুড়ের চাহিদা বেড়েছে। বিক্রেতাদের অনেকেই বিভিন্ন হাটবাজারে, অটোরিকশা, অটো ভ্যানস্ট্যান্ড এবং অলিগলিতে তালের শাঁস (তালকুড়) বিক্রি করেন। ফেরি করেও বিক্রি করেন কেউ কেউ।
শহরের বড়গাছা এলাকার বাসিন্দা মাসুদুর রহমান মাসুদ এবং আবু মুসা নামে দুই ক্রেতা বলেন, বর্তমানে বাজারে অধিকাংশ ফল-ফলাদি ও শাকসবজিসহ মাছ-মাংস সব কিছুই কোনো না কোনোভাবে ফরমালিন বা কীটনাশক ছিটিয়ে বাজারজাত করা হয়; যা মানুষের শরীরের জন্য বিষ।  তালের শাঁস বা তালকুড়ে ভেজাল কিছুই থাকে না । শতভাগ নেচারাল ফল এবং পুষ্টিগুণও রয়েছে এতে। এ কারণে এখন অনেকেই এই তালকুড় খেতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছেন। অনেকেই তালকুড় কাটার সঙ্গে সঙ্গে বিক্রেতার সামনেই খান। অনেকেই পার্সেল করে বাড়ি নিয়ে যান। এই ফল এখন সব বয়সী মানুষের কাছে প্রিয় খাদ্য। ফলটা লোভনীয় হওয়ায় বাজারে এখন এ তালকুড়ের চাহিদা বেড়েছে। পরিবারের জন্য পার্সেল করে বাসায় নিয়ে যান।
নাটোর সদর হাসপাতালের অবসরপ্রাপ্ত আরএমও ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘তাল শরীরের জন্য খুব উপকারী একটি ফল। তালের শাঁসে থাকা জলীয় অংশ পানিশূন্যতা দূর করে। তালে থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। কচি তালের শাঁস রক্তশূন্যতা দূর করে এবং চোখের দৃষ্টিশক্তি ও মুখের রুচি বৃদ্ধি করে। এছাড়া তালে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন সি এবং ভিটামিন বিসহ নানা ধরনের ভিটামিন রয়েছে।’ v
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফরম ল ন এই ত ল র জন য অন ক ই ত লক ড়

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ

গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।

ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে। 

আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন। 

ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন। 

অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। 

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।

ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”

প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।

মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”

তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”

মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।

মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলের অভিযান সমর্থন করেছিলেন।

গ্যালাপের মতে, পরিচয় প্রকাশ করে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান বলেছেন জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ