সুষ্ঠু ও ভয়মুক্ত নির্বাচন না হলে রাষ্ট্র ব্যর্থতার দিকে ধাবিত হবে বলে মনে করে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। আগামী নির্বাচন কারচুপি, পেশিশক্তি ও কালোটাকার প্রভাবমুক্ত চায় দলটি।

আজ রোববার রাজধানীর পুরানা পল্টনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় এসব বিষয় উঠে আসে। সভায় সভাপতিত্ব করেন দলের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ। এ সময় বিভিন্ন সাংগঠনিক বিভাগের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ বলেন, প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। সেই নির্বাচন কারচুপি, পেশিশক্তি ও কালোটাকার প্রভাবমুক্ত হতে হবে।

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আরও বলেন, জনগণ ২০১৪, ২০১৮ কিংবা ২০২৪ সালের মতো আর কোনো প্রহসনের নির্বাচন দেখতে চায় না। এমনকি এক-এগারোর মতো অস্বাভাবিক পরিস্থিতিও গ্রহণযোগ্য নয়। যেনতেন নির্বাচন হলে সেটি দেশকে ব্যর্থতার দিকেই ঠেলে দেবে।

বৈঠকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রিকশা প্রতীকে নির্বাচন করতে আগ্রহী সম্ভাব্য প্রার্থীদের সাংগঠনিক প্রস্তুতি, মাঠপর্যায়ের কার্যক্রম ও জনপ্রিয়তা নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। এ ছাড়া ২১ জুনের মধ্যে ৩০০টি আসনে দলীয় প্রার্থীর তালিকা চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত হয়।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মুফতি শরাফত হোসাইন, মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা এনামুল হক মূসা, মাওলানা আবুল হাসনাত জালালী, মাওলানা মুহাম্মাদ ফয়সাল, মাওলানা আবু সাঈদ নোমান, মাওলানা নেয়ামতুল্লাহ প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

প্রধান উপদেষ্টার উপস্থিতিতে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকের ভেতরে কী বলেছে বিএনপি

রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের আলোচনায় বিএনপির পক্ষ থেকে বিচার, সংস্কার ও আগামী জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে বিস্তারিতভাবে বলেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। সবকিছুর বিবেচনায় কালবিলম্ব না করে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করার জন্য পথনকশা চেয়েছেন তিনি।

গতকাল সোমবার বিকেল পাঁচটার দিকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে আলোচনা শুরু হয়। সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে শেষ হয় আলোচনা সভা। ফরেন সার্ভিস একাডেমি মিলনায়তনে এ আলোচনায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ ৩০টির বেশি দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বৈঠকের ভেতরে কে কী বক্তব্য দিয়েছেন, তা সাংবাদিকদের অবহিত করা হয়।

বিএনপির পক্ষ থেকে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল গতকালের বৈঠকে অংশ নেয়। বৈঠকের ভেতরে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা এখানে দ্বিতীয়বারের মতো আলোচনার শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসেছি। এরপর পুনর্বার হবে কি না জানি না। কিন্তু সংস্কার কমিশনের যে গতি, সেই গতি নিয়ে আমরা মোটেও সন্তুষ্ট হতে পারিনি। কারণ, এই সংস্কারের জন্য আমরাই প্রধান প্রবক্তা। আপনারা যদি সৌভাগ্যক্রমে দায়িত্ব গ্রহণ না করতেন, তাহলে যখনই ফ্যাসিবাদের পতন হতো, তখন অঙ্গীকার অনুসারে আমাদের যেতে হতো। এখানে ৩১ দফা (বিএনপির সংস্কার প্রস্তাব) নিয়ে আমি কথা বলব না। আপনাদের এমন কোনো সংস্কার নেই যেটা এই ৩১ দফার সঙ্গে মেলে না। তবে এর বাইরে আপনারা অনেক বেশি সংস্কার নিয়ে প্রস্তাব দিয়েছেন। যে সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে আমরা তিন দিন অবিরত আলাপ করেছি, বিশেষ করে আমাদের দলের পক্ষ থেকে।’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, বিএনপি এর আগে লিখিতভাবে জবাব দিয়েছে। ঐকমত্য কমিশনের সংক্ষিপ্ত ভার্সনের সঙ্গে তারা খুব একটা একমত হয়নি, যেহেতু এখানে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছিল কিছু। যেভাবে তারা জবাব দিয়েছে, সেখান থেকে কম্পাইল করে জানানো যেত যে এগুলো একমত হওয়া গেছে বা অধিকাংশ একমত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘যাই হোক সংস্কার নিয়ে বেশি কথা বলব না, বললে রীয়াজ ভাই (অধ্যাপক আলী রীয়াজ) কষ্ট পাবেন।’

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমি এখানে প্রশংসা করতে আসিনি। আমরা এখানে আলোচনা করতে এসেছি। এখন আপনাদের যে বিষয়গুলো বোঝাতে পারিনি অবিরত, সেটা কি আজকে বোঝাতে পারব? মনে হয় না। একটি কারণও নেই ডিসেম্বরের পরে নির্বাচনের। আমরা কেন, কী উদ্দেশ্যে ডিসেম্বরের আগে নির্বাচন চাই, যৌক্তিকভাবে আমরা বহুবার উপস্থাপন করেছি। জাতির মধ্যে কেউ কেউ ষড়যন্ত্রের এটা সুযোগ নিচ্ছে এবং বিভিন্ন রকমের অস্থিরতা সৃষ্টিরও পাঁয়তারা আছে, অভ্যন্তরীণভাবেই আছে, বহির্বিশ্বেরও আছে। অনেকে বক্তব্য রেখেছে যে পার্শ্ববর্তী একটি দেশ নির্বাচন চায়। ওরা নির্বাচন চায় না বলে কি আমরা অনির্দিষ্টকালের জন্য নির্বাচন চাইব না। তারা কেন নির্বাচন চায় তারা জানে, তারা বলছে তারা ইনক্লুসিভ নির্বাচন চায়। আপনারা তো কাউকে কাউকে এক্সক্লুড করেই দিয়েছেন। সুতরাং বোঝাই যায় তারা কী বলছে। কিন্তু যদি ইউরোপ-আমেরিকা নির্বাচন চায়, তখন তো আপনারা কিছু বলেন না এবং দেশের ভেতরে ও বাইরে বহু বিবৃতি আছে নির্বাচন চাওয়ার ব্যাপারে। সে জন্য আমাদের দলের পক্ষ থেকে, সমমনা রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে...আমরা বলেছি। কিন্তু দুঃখজনকভাবে প্রধান উপদেষ্টা যেটা বলেছেন যে একটিমাত্র দল শুধু ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায়। ক্ষমা করবেন এই বক্তব্য বোধ হয় আমাদের আহত করেছে।’

আরও পড়ুনডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায় বিএনপিসহ অনেক দল ৮ ঘণ্টা আগে

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘...এ দেশের মানুষ উপদেষ্টামণ্ডলীর কাছে নিরপেক্ষ আচরণ আশা করে। সেটা আপনাকে দেখতে হবে। আমরা যে শুধু শুধু কমপ্লেইনের বাস্কেট খুলে আপনার কাছে যাই, তা নয়; সেটা আপনার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য যাই।...দয়া করে সবকিছু বিবেচনা করে কালবিলম্ব না করে একটা রোডম্যাপ দেবেন ডিসেম্বরের ভেতরে নির্বাচনের জন্য, সেটা আমাদের দাবি। আর যদি কোনো যুক্তি থাকে, তাহলে সেটা জাতির কাছে উপস্থাপন করবেন।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রধান উপদেষ্টার উপস্থিতিতে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকের ভেতরে কী বলেছে বিএনপি
  • স্রোতের টানে পানিতে ডুবে এক কিশোরের মৃত্যু, অল্পের জন্য বাঁচল আরেক কিশোর
  • সিলেটের পশুর হাটে নজর কাড়ছে ‘বিগ বস’ ও ‘পুষ্পা’
  • উপদেষ্টা পরিষদে ছাত্রদের রাখা বিরাট ভুল হয়েছে: মেজর হাফিজ
  • ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বড়লেখা প্লাবিত, পানিবন্দি লাখ মানুষ
  • জকিগঞ্জ-কানাইঘাটবাসীর জন্য আলোকবর্তিকা ফাহিম আল চৌধুরী ট্রাস্ট
  • হজযাত্রীদের সর্বোত্তম সেবা দিতে চায় সরকার: ধর্ম উপদেষ্টা
  • প্রধান উপদেষ্টা আবার ডেকেছেন, আনুষ্ঠানিকতা থাকলেও ‘কাজের খবর নেই’
  • ২ জুন প্রধান উপদেষ্টা আবার ডেকেছেন, এভাবে সংস্কারের কলা দেখানো হচ্ছে: সালাহউদ্দিন আহমদ