লন্ডনের রাস্তায় নামছে উবারের চালকবিহীন ট্যাক্সি
Published: 12th, June 2025 GMT
রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠান উবার জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে তারা চালকবিহীন ট্যাক্সিসেবা চালু করতে যাচ্ছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক ব্রিটিশ স্টার্টআপ ‘ওয়েভ’–এর সঙ্গে যৌথভাবে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে প্রতিষ্ঠানটি।
শুরুতে প্রতিটি গাড়িতে একজন মানবচালক উপস্থিত থাকবেন, যিনি প্রয়োজনে হস্তক্ষেপ করতে পারবেন। তবে পর্যায়ক্রমে তা হয়ে উঠবে পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয়। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অপেক্ষাকৃত সহজ রাস্তায় শহরে উবার চালকবিহীন বা সেলফ ড্রাইভিং ট্যাক্সির পরীক্ষামূলক চলাচল চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু লন্ডনের মতো জটিল ও ব্যস্ত শহরের সড়কে এ প্রযুক্তির বাস্তব প্রয়োগ এক নতুন চ্যালেঞ্জ। উবারের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ড বলেন, ‘লন্ডনের রাস্তা বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত ও জটিল নগর পরিবেশ। তাই এ শহরে সেলফ ড্রাইভিং যানবাহনের পরীক্ষা আমাদের ভবিষ্যতের দিকে একটি বড় পদক্ষেপ। আমাদের লক্ষ্য সেলফ ড্রাইভিং প্রযুক্তিকে এমন একটি নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য পরিবহন হিসেবে গড়ে তোলা, যা সবার জন্য সহজলভ্য হবে।’
ব্রিটিশ সরকার সম্প্রতি জানিয়েছে, ২০২৬ সালেই সেলফ ড্রাইভিং ট্যাক্সি ও বাসসদৃশ পরিবহনের পরীক্ষামূলক চলাচল শুরু হচ্ছে ইংল্যান্ডে। আগের পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই কার্যক্রম শুরুর কথা ছিল ২০২৭ সালের দ্বিতীয়ার্ধে, যখন ‘অটোমেটেড ভেহিকলস অ্যাক্ট’ আইনে রূপ নেবে।
ওয়েভের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী অ্যালেক্স কেনডেল বলেন, ‘এই পরীক্ষামূলক চালু আমাদের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। এর মাধ্যমে আমরা যুক্তরাজ্যে নিরাপদ ও বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন সেলফ ড্রাইভিং যাত্রাকে বাস্তবের কাছাকাছি নিয়ে যাচ্ছি।’
ব্রিটিশ পরিবহনমন্ত্রী হেইডি আলেকজান্ডার বলেন, ‘ভবিষ্যতের পরিবহন এখন কল্পনা নয়, বাস্তবতা। সেলফ ড্রাইভিং গাড়ি শুধু প্রযুক্তিগত উন্নয়নই নয়, এটি কর্মসংস্থান, বিনিয়োগ এবং যুক্তরাজ্যের প্রযুক্তি খাতে নেতৃত্বের সুযোগ তৈরি করবে।’
ব্রিটিশ পরিবহনমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সড়ক নিরাপত্তা আমাদের অগ্রাধিকার। তাই এ প্রযুক্তির সব পরীক্ষায় আমরা সেই দিকটিকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি। আমরা উদ্ভাবনে বিশ্বাস করি এবং সে পথেই এগিয়ে যাচ্ছি।’
তবে অটোমেটেড ভেহিকলস অ্যাক্ট আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হওয়ার পর ব্যক্তিগত মালিকানায় সেলফ ড্রাইভিং গাড়ির ব্যবহার শুরু হবে। ওই আইন অনুযায়ী, সেলফ ড্রাইভিং যানবাহনের নিরাপত্তা মান কমপক্ষে একজন দক্ষ ও সচেতন মানবচালকের সমতুল্য হতে হবে। যুক্তরাজ্যের পরিবহন বিভাগ বলছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক এ গাড়িগুলোর প্রতিক্রিয়া সময় হবে মানুষের চেয়ে অনেক দ্রুত। ক্লান্তি, অমনোযোগ কিংবা ভুল সিদ্ধান্তের ঝুঁকিও থাকছে না। ফলে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি কমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, সেলফ ড্রাইভিং যানবাহন প্রযুক্তির বিকাশ ২০৩৫ সালের মধ্যে যুক্তরাজ্যে প্রায় ৩৮ হাজার নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে এবং অর্থনীতিতে যোগ করতে পারে প্রায় ৪ হাজার ২০০ কোটি পাউন্ড।
সূত্র: ডেইলি মেইল
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর জ য পর বহন পর ক ষ আম দ র র পর ব র পর ক
এছাড়াও পড়ুন:
মাতামুহুরী নদীর তীরে মিলল পর্যটকের লাশ, এখনো নিখোঁজ ২
বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার মাতামুহুরী নদীর তীর থেকে এক পর্যটকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার নাম শেখ জুবাইরুল ইসলাম। তিনি নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ধলইতলা পাচুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। ইউএনও’র দাবি, এখনো দুই পর্যটক নিখোঁজ আছেন।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) ভোর ৪টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাজার পাড়ার ফরেস্ট ঘাট সংলগ্ন মাতামুহুরী নদীর তীরে লাশটি ভেসে আসে। আলীকদম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহাদাৎ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বান্দরবান সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে। আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
আরো পড়ুন:
কক্সবাজার উপকূলে ২৪ ঘণ্টায় ৬ মরদেহ উদ্ধার
ঈদের দিন নিখোঁজ, পরদিন মাদ্রাসাছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার
স্থানীয় ট্যুর গাইড ও পুলিশ জানান, ‘ট্যুর এক্সপার্ট’ গ্রুপের এডমিন বর্ষার নেতৃত্বে ৩৩ জন পর্যটকের একটি দল গত বুধবার (১১ জুন) আলীকদমে পৌঁছান। এই দলে কো-হোস্ট হিসেবে ছিলেন হাসান নামে একজন এবং স্থানীয় গাইড ছিলেন সিদ্ধার্থ তঞ্চঙ্গ্যা। তাদের উদ্দেশ্য ছিল আলীকদম উপজেলার ক্রিসতং পাহাড় ও থানচির লিমান লিবলু এবং সাকাহাফং চূড়া জয় করা।
পর্যটকদের দলটি দুইটি গ্রুপে বিভক্ত হয়। একটিতে ২২ জন এবং অন্যটিতে ১১ জন সদস্য ছিলেন।
বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য সাইফুল ইসলাম রিমন জানান, বর্তমানে ২২ জনের একটি দলের ১৯ জন সদস্য আলীকদম থানায় রয়েছে। নিখোঁজ তিনজনের মধ্যে জুবাইরুল ইসলামের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, তবে কো-হোস্ট হাসানসহ বাকি দুইজন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।
তিনি থানায় অবস্থানরত ১৯ জন পর্যটকের সঙ্গে কথা বলে জানান , গত বুধবার রাতে তারা তৈনখাল পার হচ্ছিলেন। ১৯ জন নিরাপদে খাল পার হতে পারলেও কো-হোস্ট হাসানসহ তিনজন তৈনখাল পার হতে পারেননি। এই তিনজনের একজন হলেন শেখ জুবাইরুল ইসলাম, যার মরদেহ বৃহস্পতিবার ভোরে আলীকদম সদরের ফরেস্ট ঘাট থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
আলীকদম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিন বলেন, “গত ১১ জুন ২২ জনের একটি পর্যটক টিম দোসারি দিকে ভ্রমণে যায়। তাদের মধ্যে ১৯ জন পর্যটক আলীকদম থানার হেফাজতে আছেন। তিনজন নিখোঁজ ছিলেন। আজ শেখ জুবাইরুল ইসলাম নামের একজনের মরদেহ পাওয়া গেছে। বাকি দুইজন এখনো নিখোঁজ। তাদেরকে উদ্ধারে পুলিশ ও স্থানীয় ট্যুর গাইড তৎপরতা চালাচ্ছে।”
ঢাকা/চাইমং/মাসুদ