বাগমারায় জামায়াতের বিরুদ্ধে বিএনপির কর্মীকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ
Published: 12th, June 2025 GMT
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় জামায়াতের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে বিএনপির এক কর্মীকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে জামায়াতের নেতারা দাবি করেছেন, মাদক ব্যবসার কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে এলাকার লোকজন ওই ব্যক্তিকে মারধর করেছেন। তাঁদের কেউ ওই ঘটনায় জড়িত নন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার আচিনঘাট এলাকার একটি পুকুরপাড়ে সাহেব আলী (৫০) নামের বিএনপির এক কর্মীকে কুপিয়ে জখম করা হয়। আহত অবস্থায় তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সাহেব আলী ওই গ্রামের বাসিন্দা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ দুপুরে আচিনঘাট এলাকার একটি পুকুরপাড়ে বিএনপির কর্মী সাহেব আলী বসে ছিলেন। তাঁকে সেখান থেকে ধরে এনে পাশের রাস্তায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। পরে লোকজন ছুটে এসে তাঁকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
ঘটনার পর বিকেলে স্থানীয় বাসিন্দা ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্যসচিব শামসুজ্জোহা সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে অভিযোগ করেন, জামায়াতের বাগমারার গণিপুর ইউনিয়ন শাখার আমির মাহবুব আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, জামায়াতের কর্মী আতাউর রহমান, মাসুদসহ কয়েকজন ধারালো অস্ত্র নিয়ে সাহেব আলীর ওপর হামলা করেন। তাঁরা তাঁর পায়ের রগ কেটে ফেলেছেন। তখন সাহেব আলীর চিৎকারে বিএনপির কর্মীরা ছুটে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
বিকেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাহেব আলী ও জামায়াত নেতা মাহবুব আলমের পরিবারের মধ্যে বিরোধ আছে। জামায়াত নেতার আমবাগানের কিছু অংশ সাহেব আলীর পুকুরের ভেতরে ধসে যাওয়ায় বিরোধ তৈরি হয়। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে মারামারির ঘটনাও ঘটেছে। পুকুরপাড়ে কয়েকটি খুপরি ও বসার জায়গা দেখা যায়। ওই ঘরে মাদক কেনাবেচা করার অভিযোগ আছে।
এ বিষয়ে বিএনপির নেতা শামসুজ্জোহা সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওরা (জামায়াত) ন্যক্কারজনক ঘটনাটি ঘটিয়েছে। রগ হয়তো কাটেনি, তবে কাছাকাছি গেছে। সাহেব আলী দলের সক্রিয় কর্মী। গত বছরের জুলাই মাসে আন্দোলনের সময় পুলিশ তাঁকে আটক করেছিল। ৫ আগস্টের পর মুক্তি পেয়েছে।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে জামায়াত নেতা মাহবুব আলম বলেন, সাহেব আলী একজন মাদকসেবী ও ব্যবসায়ী। আচিনঘাটের একটি পুকুরপাড়ে খুপরি করে সেখানে মাদক কেনাবেচা করেন। আজ স্থানীয় লোকজন ধরে তাঁকে মারধর করেছেন বলে শুনেছেন। জামায়াত-শিবিরের কেউ এতে জড়িত নন। উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অহিদুল ইসলামও একই ধরনের মন্তব্য করে বলেন, জামায়াত-শিবিরকে নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, তিনি ঘটনাটি শুনেছেন। সাহেব আলীর ওপর হামলাকারীরা জামায়াতের রাজনীতি করেন। এর আগে সাহেব আলী জামায়াতের এক কর্মীর ওপর হামলা করেছেন। ওই ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা আছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স হ ব আল র ব এনপ র কর ছ ন র কর ম ব গম র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারের প্রস্তাবিত নীতিতে ইন্টারনেটের দাম ২০% বাড়বে: আইএসপিএবি
সরকারের প্রস্তাবিত নীতিমালায় বিভিন্ন ফি ও চার্জ আরোপের কারণে গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেট সেবার খরচ আরও অন্তত ২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়বে বলছেন দেশের ইন্টারনেট সেবাদাতারা।
ইন্টারনেটের দাম বাড়ার বিষয়টি দায়িত্বশীল নেতৃত্বের হাতে ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন সেবাদাতারা।
আজ সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন (আইএসপিএবি) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানায়।
সম্প্রতি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ফিক্সড টেলিকম সার্ভিস প্রোভাইডারদের (এফটিএসপি) জন্য একটি গাইড লাইনের খসড়া করেছে। এ নিয়ে আপত্তি তুলেছে আইএসপিএবি।
নতুন গাইডলাইনে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ রেভিনিউ শেয়ার এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলের জন্য ১ শতাংশ দিতে হবে। এ ছাড়া এফটিএসপি অপারেটরদের ক্রয়মূল্য ১৪ শতাংশ বাড়বে।
আইএসপিএবির সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, টেলিযোগাযোগ খাত নিয়ে সরকার তার উদ্দেশ্য থেকে বেরিয়ে এসেছে এবং জনগণের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না। সরকার ভুল পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
আমিনুল হাকিম বিদ্যমান নীতির সঙ্গে প্রস্তাবিত নীতির তুলনামূলক উপস্থাপনা তুলে ধরে বলেন, বিদ্যমান নীতিতে সরকার এই খাত রেভিনিউ শেয়ারিং, সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল এবং ভ্যাটসহ ২১ দশমিক ৪৫ শতাংশ পায় কিন্তু নতুন নীততে তা ৪০ দশমিক ২৫ শতাংশ হবে। সরকারি নীতিতে শহর ও গ্রামে বৈষম্য বাড়বে।
আমিনুল হাকিম বলেন, বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসা সরকার বৈষম্য উপহার দিচ্ছে। সরকার একদিকে ইন্টারনেটের দাম কমানোর কথা বলছে, অন্যদিকে নিজেরা দাম বাড়াচ্ছে। তিনি আরও বলেন, স্টারলিংকের জন্য সরকার লাইসেন্স ফি ধরেছে ১০ হাজার ডলার অর্থাৎ ১২ লাখ টাকা। কিন্তু দেশের আইএসপিদের জন্য তা ২৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। তাঁর প্রশ্ন, স্টারলিংককে এত সুবিধা দেওয়ার কারণ কি?
সংবাদ সম্মেলনে আইএসপিএবি বলেছে, প্রস্তাবিত খসড়া গাইডলাইনে মোবাইল অপারেটরদের ফিক্সড ওয়্যারলেস একসেস এবং লাস্ট মাইল ফাইবার সংযোগের মাধ্যমে ফিক্সড কানেক্টিভিটি দেওয়ার স্পষ্ট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যা দেশীয় এবং নিজস্ব বিনিয়োগে গড়ে ওঠা আইএসপিগুলোর জন্য চরম অসম প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করবে। এ ছাড়া বড় প্রভাব পড়বে সাধারণ গ্রাহকের ওপর।