জড়তার চাইতে মৃত্যুর অধিকার অনেক সবুজ
Published: 15th, June 2025 GMT
অদ্ভুত জীবন গান
মনে হয় বলি, অনেক ক্লান্ত আমি অন্ধের শহরে বিক্রি করা এক মানুষ।
আয়না ভেঙে চুরচুর দেখি, ওদের চোখের মণি জেগে গেছে।
বেগানা রাত্রি এসে ঢেকে দেয় স্তন, ধেয়ে ওঠে নীলগিরি,
এ এক অদ্ভুত শীত ভাবতে ভাবতে ঘুম মরে যায় রোজ।
পাহাড় পাহাড় ডাকি শব্দহীন প্রতিবিম্ব কান বুজে দেয়।
ঘুম কিনবেন ঘুম? ফেরিওয়ালার হাতে ঝাঁপাতেই বেসমাল
হয়ে দেখি, সব উড়ে গেছে, বিহ্বল চোখ তার পূর্ণিমায় স্থির,
ভিড় করে আমরাও উড়তে থাকি অদ্ভুত এক ঈশ্বরীর দিকে
দেখি, যেখানে মানুষের প্রাণ নেই সেখানে প্রকৃতি আরও সুন্দর
মন আমাকে ছেড়ে বলে, পরজনমে এর চেয়ে বেশি সুন্দর নেই।
পরকাল লোভীদের দেখিনি তো, এ জনমে কোনো ছাড় দিতে?
সব জগতেই আমরা বিড়ালের সামনে প্রতিদিন ইঁদুর।
ঢোলকলমি ফণা তোলে আর প্রাণ হোঁচট খায় প্রেম ছুঁতে গিয়ে
মন বসে থাকে শৈশবে, তরুণে, দেহ বৃদ্ধ হতে থাকে রোজ,
মনে হয়, জড়তার চাইতে মৃত্যুর অধিকার অনেক সবুজ।
আলোবালুকা বনে
সেদিন রাতে জলের পাশে বসে
যা বলেছিলাম,
আর যা বলতে পারিনি রাতের ঘ্রাণে বুঁদ হয়ে,
শোনো, এসবের কিছুই আসলে বলতে চাইনি,
মনে হচ্ছে শুধু মুখ দেখি,
তাও না,
আর যুদ্ধপিপাসুর কথা বলি,
আর শান্তি পছন্দ না যাদের,
যারা শিশির চিনতে ভুলে গেছে,
যারা পরকালের বিশ্বাসে মরতে
মারতে কাটতে লুটে ফেলে টুটে ফেলে, আর, নিজের নামের সমাধি রাখে,
তাদের কথা বলতে বলতে
সে ফিরে আসে সে ফিরে যায়,
অথবা পেছন এসে সমুখে দাঁড়ায়,
আলোবালিকা বনে,
মনে হচ্ছে আঁধার নামছে,
বলেছিলে, বরং এসব বাদ দিই,
এরপর প্রান্তর ছড়িয়ে,
আলোকে শরীরে জড়িয়ে,
বলছিলে দুপুরে খেয়েছ?
তাতেই শরীর উন্মাতাল হলো,
ছিটকে গেল তরঙ্গ, মন কামড়ে ধরল
শরীর, আর একটা অদ্ভুত ঠান্ডা
যা জেলের মতো, প্রাণ পিছল গেল, জুড়িয়ে গেল
আলোবালুকা গুনগুন করে,
সব সমুদ্র জল লাল হয়ে গেছে জানো?
শূন্য-ছায়ার রাত্রি
পাতা ভেসে যায় আয়না গড়িয়ে পড়ে
ভাঙনের সুর যতই নিভৃতে হাঁটে
মন থেকে রোজ মননের ছায়া সরে,
শিলালিপিহীন রংলিপিহীন কাটে।
মরে যাই রোজ মরুঝড় কুয়াশায়
পুরাণ পুড়িয়ে প্রেতাত্মা হেসে ওঠে,
ডানাভাঙা রাত নিঃসীম নিশানায়
পতনের পর পতন গড়ানো ঠোঁটে।
যতই বলো না উল্লাসে কাটো তুমি
রাত্রি ভাসিয়ে আমি উড়ালের চাঁদে,
বেবাক শূন্য-বলে জীবনের ভূমি
গুমোট বৃক্ষ ততোই ফুঁপিয়ে কাঁদে।
দ্বিধার শেওলা
প্রতিদিন মনে হয়,
দ্বিধার শেওলা সরিয়ে সাঁতার পরিষ্কার করি,
কিন্তু,
রক্তের নহরের পর,
চুপচাপ দেখে যাওয়া দল,
আর রক্তের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়া দল,
জটে জড়িয়েছিল
বন্যা এল,
বিভেদের ফিতে ভেঙে এক হয়েছিল এক আকাশের নিচে,
কার প্রতি কার পক্ষপাত কার পছন্দ বেদনার গান কার রক মিউজিক?
অতীতকে ফেলে অথবা জড়িয়ে তারা কিন্তু মানুষ হয়ে এগিয়ে এসেছিল।
বৃষ্টি! বৃষ্টি!
এই যে টিএসসিতে মানুষের জন্য মানুষের মাদল,
বন্যা শেষ হলে কথা দিতে পারো, আর কোনো
বিদ্বেষে যাবে না?
আমরা আসলেই স্বস্তি থাকতে বুঝতেই পারি না স্বস্তির স্বস্তি কী?
ফের এখন অসভ্যের চূড়ান্ত হচ্ছে।
আমি কিন্তু ভেসে যাওয়া সেই লাশ,
তোমাদের শস্যের পলি হয়ে ভেসে উঠেছি।
যার যায় সে বোঝে,
কেঁদে খানখান আমাকে হারিয়ে যাওয়া যারা, তাদের বিলাপের ওপরেই রাজনীতি নিয়ে কী কাপের ধোঁয়াই না উড়ছে!
আমার ওপর দারুণ ফসল হবে।
আনন্দে নাচবে আমার ওপর, আমি কিন্তু পলি,
চিৎকার করলেও আমার কান্না তোমাদের ধানের আনন্দের উচ্ছ্বাস কমতে দেবে না।
তুমি বিছিয়ে রেখেছ আঁচল, আমি তার খুঁটের পয়সা চুরি করেছি মা,
আমি অনেক রক্তের মধ্যে শুয়ে ছিলাম,
অনেক ঝড়ের মধ্যে বক ছিলাম,
মানুষের এত অসহ্য গর্জন আর নিতে পারছি না।
ওদের তুমি ছায়ায় দাঁড়াতে বলো মা,
ভরদুপুরে মাথার মধ্যে একটানা ঘুঘু ডেকে যায়।
আমি বৃক্ষের কথা বলি
এসো পাতাদের কথা বলি,
অতীতকে রোজ সন্ধ্যা বানিয়ে বনস্পতির বন্যায়,
ভেসে ভেসে যায় অস্থি, এসো রাত্রির কথা বলি।
শ্রবণবধিরা গভীর কথায় ঘুমায়,
ছিটানো ভস্ম ভেসে ভেসে যায়,
দীর্ঘশ্বাসের ডালপালায়,
প্রতিদিন মন জন্মায়।
ছুড়ে দেওয়া ছায়ায় জল হয়রান
কুমিরের মাথা গুঁড়ো হয়ে ভেঙে খানখান,
চুরমার জল, খেজুরপাতার ফাঁক গলে
আজ বৈতরণির বাঁক।
আজ টকটকে সাদা রক্তে ভেসে সব খাক,
মাথাকে খাচ্ছে শরীর, বাকল মর্মমূলে।
এসো ভস্মের কথা বলি,
পাপের প্রতীক কেউ হয় না,
ঋতুবিচ্ছুরণ আলো দেয় না।
ওই ওড়ে দেখো পিশাচের দেহ! গাছ রৌদ্রছায়ায়,
সবুজ পাতারা শিকড়শুদ্ধ পাতালে গড়ায়
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
৪৪তম বিসিএসের ৪০০ রিপিট ক্যাডার বাদ দিচ্ছে সরকার, নতুন সিদ্ধান্ত আসছে
৪৪তম বিসিএসে পুনরাবৃত্তি হওয়া ৪০০ ক্যাডারকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। তারা ৪৩তম বিসিএসে বা আগের বিসিএসে যে ক্যাডারে আছেন ৪৪তম বিসিএসেও একই ক্যাডার পেয়েছিলেন। এই ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে সিদ্ধান্ত দ্রুতই হবে বলে জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা।
প্রথম আলোকে ওই কর্মকর্তা আজ বৃহস্পতিবার বলেন, ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে পিএসসির কিছু সুপারিশ আমরা পেয়েছি। এগুলো বাদ দিতে সরকার কাজ করছে। বাদ দিলে কি করা হবে তা নিয়েও কাজ করছে সরকার। এখন পিএসসিকে এ বিষয় নিয়ে একটি মতামত দিতে বলা হয়েছে। পেলেই তা পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে প্রজ্জাপন দেওয়া হবে। এটি যাতে স্থায়ীভাবে বন্ধ হয় সেজন্য আমরা কাজ করছি।
আরও পড়ুন৪৯তম বিসিএস: অনলাইন আবেদন ও ফি জমাদানে পিএসসির নতুন নির্দেশনা৩০ জুলাই ২০২৫৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল ৩০ জুন প্রকাশিত হয়। এতে বিভিন্ন ক্যাডারে ১ হাজার ৬৯০ জনকে নিয়োগের জন্য সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সাময়িকভাবে মনোনীত করেছে।
প্রকাশিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ১ হাজার ৬৯০ জনের মধ্যে প্রায় ৪০০ জন প্রার্থী একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন (রিপিট ক্যাডার)। এই ৪০০ জনের তালিকা পেয়েছে পিএসসি। এই রিপিট ক্যাডার বন্ধে বিধি সংশোধন করা হচ্ছে। এ–সংক্রান্ত চিঠি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠায় পিএসসি।
পিএসসি জনপ্রশাসনের চিঠিতে বলছে, এই রিপিট ক্যাডারের ফলে নতুন ও অপেক্ষমাণ মেধাবীরা সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এটি প্রশাসনিক কাঠামো ও জনসম্পদের সদ্ব্যবহারে বাধা সৃষ্টি করছে। এখন এটি অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।
একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়া বন্ধ করার জন্য বিদ্যমান বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা ২০১৪–এর বিধি-১৭ এর শেষে নিম্নোক্ত শর্ত যুক্ত করার প্রস্তাব করেছে পিএসসি।
আরও পড়ুনসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের ৩৪০০০ শূন্য পদ পূরণে উদ্যোগ২৯ জুলাই ২০২৫শর্তে কী আছে—পিএসসির চিঠিতে শর্ত হিসেবে বলা আছে, ‘তবে শর্ত থাকে যে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিবার প্রাক্কালে, কিংবা কোনো বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রস্তুতকালে, সংশ্লিষ্ট প্রার্থী কর্তৃক প্রদত্ত লিখিত তথ্যের ভিত্তিতে কিংবা কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত কোনো পদ্ধতির মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে যদি কমিশনের নিকট প্রতীয়মান হয় যে এই বিধির আওতাধীন মনোনয়নযোগ্য কিংবা মনোনীত কোনো প্রার্থী একই ক্যাডার পদ, সমপদ কিংবা প্রার্থীর আগ্রহ নেই এমন কোনো সার্ভিস বা ক্যাডার পদে পুনরায় মনোনীত হইবার কারণে মনোনীত সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে যোগদান করিতে অনিচ্ছুক, এইরূপ ক্ষেত্রে কমিশন অনাগ্রহ প্রকাশকারী প্রার্থীকে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিতে পারিবে; আরও শর্ত থাকে যে প্রথম শর্তাংশে বর্ণিত বিধান অনুযায়ী কোনো প্রার্থীকে সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিবার কারণে উদ্ধৃত শূন্য পদে নিয়োগের লক্ষ্যে সুপারিশ প্রেরণ করিবার জন্য উত্তীর্ণ প্রার্থিগণের মধ্য হইতে মেধাক্রম অনুযায়ী প্রার্থী নির্বাচনপূর্বক কমিশন সম্পূরক ফলাফল প্রকাশ এবং সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিতে পারিবে;আরও অধিকতর শর্ত থাকে যে দ্বিতীয় শর্তাংশে উল্লিখিত সম্পূরক ফলাফল দ্বারা বা উহার পরিণতিতে প্রথম ঘোষিত ফলাফলে সার্ভিস বা ক্যাডার পদের জন্য মনোনীত কোনো প্রার্থীর প্রতিকূলে কোনো পরিবর্তন ঘটানো কিংবা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যাইবে না।’
আরও পড়ুনবস্ত্র অধিদপ্তরে বড় নিয়োগ, চাকরির সুযোগ ১৯০ জনের২৯ জুলাই ২০২৫