অদ্ভুত জীবন গান

মনে হয় বলি, অনেক ক্লান্ত আমি অন্ধের শহরে বিক্রি করা এক মানুষ।
আয়না ভেঙে চুরচুর দেখি, ওদের চোখের মণি জেগে গেছে।
বেগানা রাত্রি এসে ঢেকে দেয় স্তন, ধেয়ে ওঠে নীলগিরি,
এ এক অদ্ভুত শীত ভাবতে ভাবতে ঘুম মরে যায় রোজ।
পাহাড় পাহাড় ডাকি শব্দহীন প্রতিবিম্ব কান বুজে দেয়।
ঘুম কিনবেন ঘুম? ফেরিওয়ালার হাতে ঝাঁপাতেই বেসমাল
হয়ে দেখি, সব উড়ে গেছে, বিহ্বল চোখ তার পূর্ণিমায় স্থির,
ভিড় করে আমরাও উড়তে থাকি অদ্ভুত এক  ঈশ্বরীর দিকে
দেখি, যেখানে মানুষের প্রাণ নেই সেখানে প্রকৃতি আরও সুন্দর
মন আমাকে ছেড়ে বলে, পরজনমে এর চেয়ে বেশি সুন্দর নেই।
পরকাল লোভীদের দেখিনি তো, এ জনমে কোনো ছাড় দিতে?
সব জগতেই আমরা বিড়ালের সামনে প্রতিদিন ইঁদুর।
ঢোলকলমি ফণা তোলে আর প্রাণ হোঁচট খায় প্রেম ছুঁতে গিয়ে
মন বসে থাকে শৈশবে, তরুণে, দেহ বৃদ্ধ হতে থাকে রোজ,
মনে হয়, জড়তার চাইতে মৃত্যুর অধিকার অনেক সবুজ।

আলোবালুকা বনে

সেদিন রাতে জলের পাশে বসে
যা বলেছিলাম,
আর যা বলতে পারিনি রাতের ঘ্রাণে বুঁদ হয়ে,
শোনো, এসবের কিছুই আসলে বলতে চাইনি,
মনে হচ্ছে শুধু মুখ দেখি,
তাও না,
আর যুদ্ধপিপাসুর কথা বলি,
আর শান্তি পছন্দ না যাদের,
যারা শিশির চিনতে ভুলে গেছে,
যারা পরকালের বিশ্বাসে মরতে
মারতে কাটতে লুটে ফেলে টুটে ফেলে, আর, নিজের নামের সমাধি রাখে,
তাদের কথা বলতে বলতে
সে ফিরে আসে সে ফিরে যায়,
অথবা পেছন এসে সমুখে দাঁড়ায়,
আলোবালিকা বনে,
মনে হচ্ছে আঁধার নামছে,
বলেছিলে, বরং এসব বাদ দিই,
এরপর প্রান্তর ছড়িয়ে,
আলোকে শরীরে জড়িয়ে,
বলছিলে দুপুরে খেয়েছ?
তাতেই শরীর উন্মাতাল হলো,
ছিটকে গেল তরঙ্গ, মন কামড়ে ধরল
শরীর, আর একটা অদ্ভুত ঠান্ডা
যা জেলের মতো, প্রাণ পিছল গেল, জুড়িয়ে গেল
আলোবালুকা গুনগুন করে,
সব সমুদ্র জল লাল হয়ে গেছে জানো?

শূন্য-ছায়ার রাত্রি

পাতা ভেসে যায় আয়না গড়িয়ে পড়ে
ভাঙনের সুর যতই নিভৃতে হাঁটে
মন থেকে রোজ মননের ছায়া সরে,
শিলালিপিহীন রংলিপিহীন কাটে।
মরে যাই রোজ মরুঝড় কুয়াশায়
পুরাণ পুড়িয়ে প্রেতাত্মা হেসে ওঠে,
ডানাভাঙা রাত নিঃসীম নিশানায়
পতনের পর পতন গড়ানো ঠোঁটে।
যতই বলো না উল্লাসে কাটো তুমি
রাত্রি ভাসিয়ে আমি উড়ালের চাঁদে,
বেবাক শূন্য-বলে জীবনের ভূমি
গুমোট বৃক্ষ ততোই ফুঁপিয়ে কাঁদে।

দ্বিধার শেওলা

প্রতিদিন মনে হয়,
দ্বিধার শেওলা সরিয়ে সাঁতার পরিষ্কার করি,
কিন্তু,
রক্তের নহরের পর,
চুপচাপ দেখে যাওয়া দল,
আর রক্তের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়া দল,
জটে জড়িয়েছিল
বন্যা এল,
বিভেদের ফিতে ভেঙে এক হয়েছিল এক আকাশের নিচে,
কার প্রতি কার পক্ষপাত কার পছন্দ বেদনার গান কার রক মিউজিক?
অতীতকে ফেলে অথবা জড়িয়ে তারা কিন্তু মানুষ হয়ে এগিয়ে এসেছিল।
বৃষ্টি! বৃষ্টি!
এই যে টিএসসিতে মানুষের জন্য মানুষের মাদল,
বন্যা শেষ হলে কথা দিতে পারো, আর কোনো
বিদ্বেষে যাবে না?
আমরা আসলেই স্বস্তি থাকতে বুঝতেই পারি না স্বস্তির স্বস্তি কী?
ফের এখন অসভ্যের চূড়ান্ত হচ্ছে।
আমি কিন্তু ভেসে যাওয়া সেই লাশ,
তোমাদের শস্যের পলি হয়ে ভেসে উঠেছি।
যার যায় সে বোঝে,
কেঁদে খানখান আমাকে হারিয়ে যাওয়া যারা, তাদের বিলাপের ওপরেই রাজনীতি নিয়ে কী কাপের ধোঁয়াই না উড়ছে!
আমার ওপর দারুণ ফসল হবে।
আনন্দে নাচবে আমার ওপর, আমি কিন্তু পলি,
চিৎকার করলেও আমার কান্না তোমাদের ধানের আনন্দের উচ্ছ্বাস কমতে দেবে না।
তুমি বিছিয়ে রেখেছ আঁচল, আমি তার খুঁটের পয়সা চুরি করেছি মা,
আমি অনেক রক্তের মধ্যে শুয়ে ছিলাম,
অনেক ঝড়ের মধ্যে বক ছিলাম,
মানুষের এত অসহ্য গর্জন আর নিতে পারছি না।
ওদের তুমি ছায়ায় দাঁড়াতে বলো মা,
ভরদুপুরে মাথার মধ্যে একটানা ঘুঘু ডেকে যায়।

আমি বৃক্ষের কথা বলি

এসো পাতাদের কথা বলি,
অতীতকে রোজ সন্ধ্যা বানিয়ে বনস্পতির বন্যায়,
ভেসে ভেসে যায় অস্থি, এসো রাত্রির কথা বলি।
শ্রবণবধিরা গভীর কথায় ঘুমায়,
ছিটানো ভস্ম ভেসে ভেসে যায়,
দীর্ঘশ্বাসের ডালপালায়,
প্রতিদিন মন জন্মায়।
ছুড়ে দেওয়া ছায়ায় জল হয়রান
কুমিরের মাথা গুঁড়ো হয়ে ভেঙে খানখান,
চুরমার জল, খেজুরপাতার ফাঁক গলে
আজ বৈতরণির বাঁক।
আজ টকটকে সাদা রক্তে ভেসে সব খাক,
মাথাকে খাচ্ছে শরীর, বাকল মর্মমূলে।
এসো ভস্মের কথা বলি,
পাপের প্রতীক কেউ হয় না,
ঋতুবিচ্ছুরণ আলো দেয় না।
ওই ওড়ে দেখো পিশাচের দেহ! গাছ রৌদ্রছায়ায়,
সবুজ পাতারা শিকড়শুদ্ধ পাতালে গড়ায়

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

‘দূরে থেকেও আমরা কাছে, এটাই বাস্তব’

ঢাকাই চলচ্চিত্রের ‘প্রিয়দর্শিনী’খ্যাত নায়িকা আরিফা পারভীন মৌসুমী। সোমবার (৩ নভেম্বর) ৫২ বছর বয়স পূর্ণ করলেন এই অভিনেত্রী। বিশেষ এই দিনে দেশে নেই, সন্তানদের সঙ্গে এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন মৌসুমী। 

মৌসুমী যুক্তরাষ্ট্রে থাকলেও বাংলাদেশে অবস্থান করছেন তার স্বামী ওমর সানী। সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে চিত্রনায়ক ওমর সানী কয়েকটি ছবি তার ফেসবুকে পোস্ট করে স্ত্রীকে ভালোবাসার বার্তা দিয়েছেন।  

আরো পড়ুন:

মৌসুমীকে বিয়ে করা কি ভুল ছিল ওমর সানীর

তারকাদের ব্যাংক হিসাব জব্দ

এসব ছবির ক্যাপশনে ওমর সানী লেখেন, “শুভ জন্মদিন প্রিয়দর্শিনী মৌসুমী। দূরে থেকেও আমরা কাছে এটাই বাস্তব, আর যারা আমাদেরকে নিয়ে উল্টাপাল্টা নিউজ করে ওরা হচ্ছে…। শুভ জন্মদিন।” 

জন্মদিনের প্রথম প্রহর থেকে ভক্ত-অনুরাগীরা প্রিয় অভিনেত্রীকে সোশ্যাল মিডিয়ায় শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। ওমর সানীর এই পোস্টে নেটিজেনদের পাশাপাশি শোবিজ অঙ্গনের অনেকেই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মৌসুমীকে।  

চিত্রনায়িকা মুনমুন লেখেন, “শুভ জন্মদিন প্রিয়দর্শিনী, প্রিয় অভিনেত্রী মৌসুমী আপা।” শাহনূর লেখেন, “শুভ জন্মদিন আপু।” আইরিন সুলতানা লেখেন, “শুভ জন্মদিন।” এমন অসংখ্য মন্তব্য কমেন্ট বক্সে ভেসে বেড়াচ্ছে।  

১৯৭৩ সালের ৩ নভেম্বর খুলনায় জন্মগ্রহণ করেন মৌসুমী। তার বাবার নাম নাজমুজ্জামান মনি ও মা শামীমা আখতার জামান। ছোটবেলা থেকেই অভিনেত্রী এবং গায়িকা হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন মৌসুমী। এরপর ‘আনন্দ বিচিত্রা ফটো বিউটি কনটেস্ট’ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন, যার ওপর ভিত্তি করে তিনি ১৯৯০ সালে টেলিভিশনের বাণিজ্যিক ধারার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কাজের সুযোগ পান। 

চিত্রনায়িকা হিসেবে ঢাকাই চলচ্চিত্রে মৌসুমীর অভিষেক ১৯৯৩ সালে সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমার মাধ্যমে। এ সিনেমায় সালমান শাহর সঙ্গে জুটিবদ্ধ হন এ অভিনেত্রী। প্রথম সিনেমাতে নিজেদের মেধার জানান দেন সালমান শাহ ও মৌসুমী। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। দুজনই ঢালিউডে নিজেদের অবস্থান তৈরি করে নেন। তারপর তিন দশকের বেশি সময় ধরে ঢালিউডে মেধার দ্যুতি ছড়াচ্ছেন মৌসুমী। 

নারগিস আক্তার পরিচালিত ‘মেঘলা আকাশ’ ও চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত ‘দেবদাস’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য এই অভিনেত্রী পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ