ঈদের ছুটির পর দ্বিতীয় কার্যদিবসে আজ সোমবার শেয়ারবাজারের লেনদেনে কিছুটা গতি ফিরেছে। তাতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) এক মাসের বেশি সময় পর লেনদেন ছাড়িয়েছে ৪০০ কোটি টাকা।

ডিএসইতে আজ সোমবার দিন শেষে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৪১৭ কোটি টাকা। এক মাসের বেশি সময়ের ব্যবধানে এটিই ঢাকার বাজারে সর্বোচ্চ লেনদেন। এর আগে সর্বশেষ গত ৭ মে ডিএসইতে সর্বোচ্চ ৫১৬ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল। লেনদেনের পাশাপাশি বেড়েছে সূচকও। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স এদিন ৬০ পয়েন্ট বা সোয়া ১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৭৮৪ পয়েন্টে। সূচকও এক মাসের বেশি সময় পর এতটা বেড়েছে। এর আগে সর্বশেষ ৮ মে ডিএসইএক্স সূচকটি ১০০ পয়েন্ট বেড়েছিল।

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, টানা দরপতনে ভালো ভালো অনেক কোম্পানির শেয়ার দর অবমূল্যায়িত পর্যায়ে চলে আসায় সম্পদশালী বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ আবার বাজারে সক্রিয় হতে শুরু করেছে। তারা নতুন করে কিছু কিছু বিনিয়োগ করছে। এ কারণে বাজারে লেনদেনে গতি দেখা গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শীর্ষস্থানীয় একটি ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ নির্বাহী জানান, গত রোববারের তুলনায় সোমবার তাঁদের প্রতিষ্ঠানের লেনদেনের পরিমাণ তিন গুণের বেশি বেড়েছে। বিনিয়োগকারীরা এদিন শেয়ার বিক্রির চেয়ে কিনেছেন বেশি। আর ক্রেতাদের বড় অংশই ছিল উচ্চ সম্পদশালী বা বড় বড় বিনিয়োগকারীরা।

একই অবস্থা ছিল শীর্ষস্থানীয় আরও কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউসে। এসব ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ নির্বাহীরা বলছেন, দীর্ঘ সময় ধরে দরপতনের কারণে কিছু শেয়ারের দাম এমন পর্যায়ে নেমেছে যে সেগুলোর দামই বাজারে বিনিয়োগকারী টেনে আনবে। যাঁরা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে আগ্রহী, তাঁরা দাম বেশি কমে গেলে শেয়ার কিনতে এগিয়ে আসেন। তবে বাজারে অস্থিরতা থাকলে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধাগ্রস্ত থাকেন।

শীর্ষস্থানীয় ব্রোকারেজ হাউস লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঢাকার বাজারে সূচকের উত্থানে যেসব কোম্পানি সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে, সেগুলো হলো ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ, লাফার্জহোলসিম সিমেন্ট, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, রবি আজিয়াটা, ওরিয়ন ইনফিউশন, গ্রামীণফোন, আইএফআইসি ব্যাংক ও একমি ল্যাবরেটরিজ। এই ১০ কোম্পানির শেয়ারের দামের উত্থানে এদিন ডিএসইএক্স সূচকটি ১৭ পয়েন্ট বেড়েছে। আর এদিন সূচকে যেসব কোম্পানি সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে, তার মধ্যে ছিল স্কয়ার ফার্মা, ন্যাশনাল ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, সী পার্ল বিচ রিসোর্ট, এসিআই লিমিটেড, ইউনিলিভার কনজ্যুমার কেয়ার, ব্যাংক এশিয়া, ম্যারিকো বাংলাদেশ, এশিয়া প্যাসিফিক ইনস্যুরেন্স ও অ্যাকটিভ ফাইন কেমিক্যালস। এই ১০ কোম্পানির শেয়ারের দরপতনে গতকাল ডিএসইএক্স সূচকটি ৫ পয়েন্ট কমেছে।

তবে লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় এদিন সূচক বেড়েছে। ঢাকার বাজারে আজ ৩৯৭ প্রতিষ্ঠানের লেনদেন হয়। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৩১৫টির, কমেছে ৩৬টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৪৬টির দাম।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ড এসইএক স শ য় রব জ র র ল নদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

পুঁজিবাজারে মূলধন কমেছে ১১ হাজার ১০ কোটি টাকা

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে (২৬ থেকে ৩০ অক্টোবর) সূচকের পতনের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এ সময়ে ডিএসই ও সিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। তবে বিদায়ী সপ্তাহে উভয় পুঁজিবাজারে বাজার মূলধন বেশ কমেছে  ১১ হাজার ১০ কোটি ২০ লাখ টাকা।

শনিবার (১ নভেম্বর) ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

তথ্য মতে, সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৭.৬৭ পয়েন্ট বা ০.৫৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ১২২ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ১০.৩৪ পয়েন্ট বা ০.৫২ শতাংশ কমে ১ হাজার ৯৮৭ পয়েন্টে, ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৫.৯২ পয়েন্ট বা ০.৫৪ শতাংশ কমে ১ হাজার ৮২ পয়েন্টে এবং ডিএসএমইএক্স সূচক (এসএমই ইনডেক্স) ৩৩.৭২ পয়েন্ট বা ৩.৩৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৯৭৬ পয়েন্টে।

বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৯৯ হাজার ৫৪৭ কোটি ১১ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ৫ হাজার ৩৪৩ কোটি ৩ লাখ কোটি টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে ৫ হাজার ৭৯৫ কোটি ৯১ লাখ টাকা।

বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ২৮৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ১৩৮ কোটি ৭১ লাখ টাকার। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ১৪৮ কোটি ১৫ লাখ টাকা।

বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৯২টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১৭৭টির, দর কমেছে ১৭৯টির ও দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৬টির। তবে লেনদেন হয়নি ২১টির।

অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১২৭.৩৩ পয়েন্ট বা ০.৮৮ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ২৮৬ পয়েন্টে। সিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে সিএসই-৩০ সূচক ০.৫৯ শতাংশ কমে ১২ হাজার ৬৫১ পয়েন্টে, সিএসসিএক্স সূচক ০.৭৭ শতাংশ কমে ৮ হাজার ৮১৩ পয়েন্টে, সিএসআই সূচক ০.৯৮ শতাংশ কমে ৮৯৮ পয়েন্টে এবং এসইএসএমইএক্স (এসএমই ইনডেক্স) ২.৮০ শতাংশ কমে ১ হাজার ৯৪৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৯৮ হাজার ৭০৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ৩ হাজার ৯১৭ কোটি ৯২ লাখ টাকা। টাকায়। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে ৫ হাজার ২১৪ কোটি ২৯ লাখ টাকা।

বিদায়ী সপ্তাহে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হয়েছে ৯৮ কোটি ২৪ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৬৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ৩০ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।

বিদায়ী সপ্তাহে সিএসইতে মোট ৩০৬টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১১৫টির, দর কমেছে ১৭০টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২১টির শেয়ার ও ইউনিট দর।

ঢাকা/এনটি/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ডিএসইতে সূচক কমলেও সিএসইতে বেড়েছে
  • ডিএসইতে সাপ্তাহিক দাম বাড়ার শীর্ষে আনোয়ার গ্যালভানাইজিং
  • ডিএসইতে সাপ্তাহিক দাম কমার শীর্ষে প্রিমিয়ার লিজিং
  • ডিএসইতে সাপ্তাহিক লেনদেনের শীর্ষে সিভিও ওরিয়ন ইনফিউশন
  • পুঁজিবাজারে মূলধন কমেছে ১১ হাজার ১০ কোটি টাকা