প্রায় দেড় মাস পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পাথর আমদানি বন্ধ আছে। মূলত দরদামে না মেলায় ও কাঙ্ক্ষিত মানের পাথর না পাওয়ায় আমদানি বন্ধ রেখেছেন পাথর আমদানিকারকেরা। বিকল্প হিসেবে ভুটান থেকে পাথর আমদানির পথ খোলা আছে। অভিযোগ আছে, ভুটান থেকে পাথর আমদানি বন্ধ করতে পাঁয়তারা করছেন ভারতীয় পরিবহন ব্যবসায়ীরা।

গত সোমবার সকাল থেকে ভারতের ফুলবাড়ী স্থলবন্দর এলাকায় ‘লোকাল ট্রাক ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের’ ব্যানারে বিভিন্ন দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন ভারতীয় ব্যবসায়ী ও পরিবহন মালিক-শ্রমিকেরা। ফলে বাংলাদেশগামী ভুটানের পাথরবাহী বেশ কিছু ট্রাক দুপুর পর্যন্ত আটকে থাকে।

ভারতীয় ব্যবসায়ী ও পরিবহন মালিক–শ্রমিকদের দাবি, তাঁরা সরাসরি ভুটানের ট্রাক বাংলাদেশে ঢুকতে দেবেন না। ভারতের ফুলবাড়ী স্থলবন্দরে ভুটানের পণ্য নামিয়ে তা ভারতের ট্রাকে বাংলাদেশে আনতে হবে—এই হচ্ছে তাঁদের দাবি।

কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী ভুটানের ট্রাক সরাসরি বাংলাদেশে ঢুকতে পারবে। এ ছাড়া নেপাল-ভুটানগামী বাংলাদেশি পণ্যবাহী গাড়ি যাওয়ার প্রতিশ্রুতি থাকলেও তা কার্যকর হয়নি। মূলত দাম বেশি ও মান বিবেচনায় ভারতের পাথর আমদানিতে আমদানিকারকদের আগ্রহ কম দেখা যাচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে সর্বশেষ গত ৪ মে ভারত থেকে ৪৬টি ট্রাকে ১ হাজার ৮৩৭ টন পাথর আমদানি হয়েছিল। এরপর দাম ও মান জটিলতায় ৫ মে থেকে ভারতীয় পাথর আমদানি বন্ধ আছে। তবে ভুটান থেকে পাথর আমদানিসহ ভারত ও নেপালের সঙ্গে অন্যান্য পণ্য আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক ছিল। এরপর টানা ১০ দিন পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটি শেষে গত রোববার বন্দরে শুরু হয় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। এরই মধ্যে গত সোমবার সকালে ভারতের ফুলবাড়ী স্থলবন্দরে আন্দোলনে নামেন সেখানকার ব্যবসায়ী ও পরিবহন–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এতে ওই দিন দুপুর পর্যন্ত ভুটানের পাথর নিয়ে গাড়ি আসা বন্ধ থাকলেও পরে তা স্বাভাবিক হয়।

স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ভুটানের পাথর আসেনি। তবে দুপুরের পর ভুটানের ১৯৬টি ট্রাকে মোট ৬ হাজার ৪৬০ টন পাথর আমদানি হয়েছে। পরদিন মঙ্গলবার ভুটান থেকে ১৫০টি ট্রাকে ৪ হাজার ৬১৩ টন ও বুধবার (আজ) বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ৪১টি ট্রাকে ১ হাজার ২২০ টন পাথর এসেছে। এদিন একই সময়ে নেপাল থেকে দুটি ট্রাকে ফুলঝাড়ু এসেছে বলে জানা গেছে।

স্থানীয় পাথর আমদানিকারক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, মূলত ভারতের সঙ্গে দরদামে না মেলায় ভারত পাথর দিচ্ছে না। ভারতের পাথরের মান ভালো না হলেও দাম বেশি। এ ছাড়া বাংলাদেশে পাথরের বাজারও ভালো নয়। এ জন্য ভারতের পাথর আমদানি করলে লোকসান গুনতে হয়।

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ভুটানের পণ্য বাংলাদেশে ঢুকতে দেবে না, এ জন্য ভারতীয় ব্যবসায়ীরা ফুলবাড়ী স্থলবন্দরে আন্দোলন করছেন। এ ছাড়া ভারতের পাথর আকারে ছোট হওয়ায় মান তেমন ভালো নয়। ভুটানের বোল্ডারের (বড় পাথর) চাহিদা অনেক বেশি, তাই ভুটানের পাথরে আগ্রহ বেশি।

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর লিমিটেডের ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ বলেন, গত ৫ মে থেকে এই বন্দর দিয়ে ভারতের পাথর আমদানি বন্ধ আছে। এ ছাড়া ভারত, ভুটান ও নেপালের সঙ্গে অন্যান্য পণ্য আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক রয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবস য় পর বহন

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতের অর্থনীতি মৃত, ট্রাম্প ঠিকই বলেছেন: রাহুল

কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঠিক কথাই বলেছেন, ভারতের অর্থনীতি মৃত।

আজ বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনে গণমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে রাহুল এই মন্তব্য করার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সেও একই কথা লেখেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিই ভারতের অর্থনীতিকে মেরে ফেলেছেন।

গতকাল বুধবার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ স্যোশালে ট্রাম্প লেখেন, ‘ভারত ও রাশিয়া—দুই দেশের অর্থনীতিই মৃত। দুই দেশের মধ্যে কী বোঝাপড়া হয়েছে, তা নিয়ে আমার মাথাব্যথা নেই। তারা একই সঙ্গে মৃত অর্থনীতি নিয়ে রসাতলে যেতে পারে। ভারতের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য খুবই কম। ওদের শুল্কহার প্রচণ্ড চড়া। পৃথিবীর সর্বোচ্চ। রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য হয় না বললেই চলে। অতএব, ও নিয়ে না ভাবলেও চলবে।’

আজ সংসদ ভবন চত্বরে গণমাধ্যম রাহুলকে ট্রাম্পের ওই মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘ভারতের অর্থনীতি যে মৃত, তা সবাই জানেন। আপনারা জানেন না? প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ ছাড়া এই সত্য সবার জানা। আমি খুশি যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সত্যি কথাটা বলেছেন। গোটা পৃথিবী জানে ভারতের অর্থনীতি মৃত। আদানিকে সাহায্য করতে গিয়ে দেশের অর্থনীতির বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে বিজেপি।’

এরপর রাহুল একই কথা ‘এক্স’ মারফতও জানান। সেখানে তিনি লেখেন, ‘ভারতের অর্থনীতি মৃত। মোদি মেরে ফেলেছেন।’ এরপর পাঁচটি কারণ দেখিয়ে রাহুল ব্যাখ্যা করেন, কেন ও কী কারণে ভারতের অর্থনীতির পঞ্চত্বপ্রাপ্তি ঘটেছে—১. আদানি-মোদি অংশীদারত্ব; ২. নোট বাতিল ও ত্রুটিযুক্ত জিএসটি; ৩. ভারতে যন্ত্রাংশ জোড়া লাগানো বা ‘অ্যাসেম্বল ইন ইন্ডিয়া’ নীতি; ৪. মধ্যম ও ক্ষুদ্র শিল্প ধ্বংস করে দেওয়া এবং ৫. কৃষকদের নাভিশ্বাস তুলে দেওয়া।

এই পাঁচ কারণ দেখানোর পর রাহুল লেখেন, ‘দেশের যুব সম্প্রদায়ের ভবিষ্যৎ মোদি তছনছ করে দিয়েছেন। কারণ, কোথাও কোনো চাকরি নেই।’

যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কনীতি নিয়ে রাহুল বলেন, ‘দেখে নেবেন, ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য চুক্তি হবে। ট্রাম্পই সেই চুক্তির সংজ্ঞা ঠিক করবেন, মোদি স্রেফ তাঁর নির্দেশ মেনে নেবেন।’

রাহুল আরও বলেন, ‘মোদি স্রেফ এক ব্যক্তি বিশেষের জন্য কাজ করেন। শিল্পপতি গৌতম আদানি। দেশের অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও পররাষ্ট্রনীতি তিনি ধ্বংস করে দিয়েছেন।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়েতে উড়োজাহাজের সঙ্গে কুকুরের ধাক্কা
  • বুড়িমারী স্থলবন্দরে নিরাপত্তাকর্মী ছাঁটাইয়ের চেষ্টা
  • সিরাজ–কৃষ্ণাতে ম্যাচে ফিরল ভারত
  • ‘বিশ্বব্যাংকের পরবর্তী প্রকল্পে অগ্রাধিকার পাবে সোনামসজিদ স্থলবন্দর সম্প্রসারণ’
  • আখাউড়া স্থলবন্দর পরিদর্শন করলেন ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার
  • ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আবারও হতাশায় ডুবিয়ে এগিয়ে গেল পাকিস্তান
  • জুলাই অভ্যুত্থানের সময় ভিপিএনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল
  • রূপ নয়, সাহস দিয়ে জয় করা এক নায়িকা
  • টানা দুই জয়ের পর এবার হার বাংলাদেশের যুবাদের
  • ভারতের অর্থনীতি মৃত, ট্রাম্প ঠিকই বলেছেন: রাহুল