কক্সবাজারে ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গু
Published: 20th, June 2025 GMT
কক্সবাজারে ডেঙ্গুর প্রভাব ভয়াবহ রুপ নিয়েছে। একদিকে ডেঙ্গু, অন্যদিকে ম্যালেরিয়া-দুটি প্রাণঘাতী মশাবাহিত রোগই যেন চেপে ধরেছে জেলার মানুষকে। একসঙ্গে এই দুই রোগের প্রকোপে উদ্বেগ বাড়ছে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদেরও।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি জুন মাসের মধ্যেই কক্সবাজারে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৪০ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ৮৯ জন বাংলাদেশি এবং ৫১ জন রোহিঙ্গা। এরইমধ্যে ৫ জন রোহিঙ্গা প্রাণ হারিয়েছেন এ রোগে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তদের বেশিরভাগই পার্বত্য এলাকা থেকে ফিরে এসেছেন। বান্দরবানের সীমান্তবর্তী নাইক্ষ্যংছড়িসহ পার্শ্ববর্তী পাহাড়ি এলাকায় কাজ করতে গিয়ে তারা জীবাণুবাহী মশার শিকার হন।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা.
তথ্য বলছে, জেলায় ডেঙ্গু পরিস্থিতিও কম উদ্বেগজনক নয়। ২০২৫ সালের শুরু থেকে এ পর্যন্ত জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ১২৪ জন। এর মধ্যে স্থানীয় ১২০ জন এবং বাকি ২০০৪ জনই রোহিঙ্গা। কেবল ২৯ মে থেকে এ পর্যন্ত ১৫ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৬৪ জন।
কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদুল হক বলেন, ‘রোগী শনাক্ত হওয়ার সাথে সাথেই আমরা বাসায় গিয়ে পরীক্ষা করি। রেজাল্ট পজিটিভ হলে ওষুধ দেই, অনেকেই ভালোও হয়ে যায়। কিন্তু রোহিঙ্গারা অবৈধভাবে বাইরে গিয়ে কাজ করে আক্রান্ত হয়ে ফিরে আসার পর দেরিতে চিকিৎসা নেয়, তখন অনেক সময় তা মরণঘাতী হয়ে ওঠে।’
পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৪ সালে ম্যালেরিয়ায় ৫ জন এবং ২০২৩ সালে ১ জন মারা যান। অপরদিকে, গত বছর (২০২৪ সালে) কক্সবাজারে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন ২১ হাজার ৪৫৪ জন এবং মারা যান ৭ জন।
কক্সবাজারে প্রতিদিন পর্যটকদের ভিড়, আর ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী থাকা—এই বাস্তবতায় মশাবাহিত রোগ যেন দ্বিগুণ হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, এ মুহূর্তে জনসচেতনতাই হতে পারে সবচেয়ে কার্যকর প্রতিরোধ। নতুবা এই দুই রোগে মৃত্যুর মিছিল আরও দীর্ঘ হতে পারে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলকে অস্ত্র দেবে না কানাডা
গাজায় মানবিক পরিস্থিতি অবনতির প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলে সমরাস্ত্র রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখার সিদ্ধান্ত পুনর্ব্যক্ত করেছে কানাডা। রবিবার (৩ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে তুরস্কের বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
শনিবার কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনিতা আনন্দ এক বিবৃতিতে জানান, গাজায় ব্যবহারের সম্ভাবনা আছে- এমন সামগ্রী রপ্তানির জন্য ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে কোনো নতুন লাইসেন্স অনুমোদন করা হয়নি।
তিনি বলেন, “গাজায় ব্যবহৃত হতে পারে- এমন সামরিক পণ্যের লাইসেন্স আমরা ২০২৪ সালের শুরুতেই স্থগিত করেছি এবং এখনও তা স্থগিতই রয়েছে। কোনো অনুমোদন দেওয়া হয়নি।”
আরো পড়ুন:
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ গেল আরো ৬৮ ফিলিস্তিনির
ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি: কানাডার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের হুুঁশিয়ারি
গত ২৯ জুলাই প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, কানাডা থেকে ইসরায়েলে এখনও অস্ত্র যাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে আনন্দ বলেন, ‘প্রতিবেদনের বেশ কিছু দাবি বিভ্রান্তিকর এবং বাস্তবতা বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।’
তিনি ব্যাখ্যা করেন, “প্রতিবেদনে যেগুলোকে গুলি বলা হয়েছে, সেগুলো আসলে পেইন্টবল ধাঁচের। এগুলোর সঙ্গে এমন যন্ত্রও ছিল, যা আগ্নেয়াস্ত্রকে সাধারণ গোলাবারুদ ব্যবহারে অকার্যকর করে তোলে। এগুলো যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহারের উপযোগী নয়। যদি কেউ এমন কিছু ব্যবহারের চেষ্টা করে, তা হলেও সেটির জন্য লাইসেন্স লাগবে- আর সেই লাইসেন্স কখনোই দেওয়া হতো না।”
তিনি আরো নিশ্চিত করেন, “লাইসেন্স স্থগিত হওয়ার আগ থেকেই কোনো কানাডীয় প্রতিষ্ঠান ইসরায়েলে মর্টার সরবরাহ করেনি- সরাসরি বা পরোক্ষভাবে কোনও ভাবেই নয়।”
কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সতর্ক করে আরো বলেন, “বৈধ লাইসেন্স ছাড়া কেউ সামরিক পণ্য রপ্তানি করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর মধ্যে রয়েছে জরিমানা, মালামাল জব্দ এবং ফৌজদারি মামলা।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “আমরা কখনোই কানাডায় তৈরি অস্ত্রকে এই সংঘাতে ব্যবহৃত হতে দেব না।”
ঢাকা/ফিরোজ