বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেছেন, ‘সংস্কার ও বিচার দুটোই চলমান প্রক্রিয়া। কারও মুখে আমরা এটা শুনতে চাই না যে “আগে সংস্কার হবে, আগে বিচার হবে, পরে গণতন্ত্র হবে, পরে নির্বাচন হবে।” এই কথা আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মুখে শুনতে চাই না।’

আজ শনিবার দুপুরে রাজশাহী নগরের মালোপাড়া এলাকায় বিএনপির নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন উপলক্ষে আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মঈন খান এসব কথা বলেন।

তরুণ সমাজ ভোট দেওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে—মন্তব্য করে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘দেশের মানুষ আপনাদের ওপর আস্থা রেখেছে, আপনারা যত দ্রুত সম্ভব তাদের সেই আস্থার প্রতিদান প্রদান করুন। যত দ্রুত সম্ভব একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের আকুতি, গণতন্ত্রকে জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিন।’

তিনি বলেন, বিগত ১৬ বছর বাংলাদেশের তরুণ সমাজ ভোট দিতে পারেনি। কাজেই আজকে বাংলাদেশের তরুণ সমাজ ভোট দেওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। বাংলাদেশের প্রবীণ সমাজ, তারা ভোট দেওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। এই সরকারে যারা এসেছে, জনগণ তাদের এই গুরুদায়িত্ব দিয়েছে যে দেশে একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন করে তারা বাংলাদেশকে পুনরায় গণতন্ত্রের পথে ফিরিয়ে আনবে।

বিএনপির নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে মঈন খান বলেন, ‘১৬ বছর ধৈর্য রেখেছেন। আগামী কয়েক মাস ধৈর্য রাখবেন। নিয়মের বাইরে যাবেন না, শৃঙ্খলার বাইরে যাবেন না। কারও ওপর জোর করে কোনো কিছু চাপিয়ে দেবেন না। কেননা এটা গণতন্ত্র নয়, স্বৈরাচার। সেই স্বৈরাচারের রাজনীতিতে বিএনপি বিশ্বাস করে না।’

আওয়ামী লীগকে পথভ্রষ্ট দল দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এই যে আওয়ামী লীগের যে পরিণতি হয়েছে, দেশ থেকে পালিয়ে যেতে হয়েছে, আজকে দীর্ঘ ১১ মাস অতিক্রান্ত হয়েছে। সেই ১১ মাসের মধ্যে একজন আওয়ামী লীগের কর্মী, নেতা কাউকে দেখাতে পারবেন যে সৎসাহস নিয়ে বলতে পেরেছে, আমরা বাংলাদেশের মানুষের প্রতি অন্যায় করেছি, আমরা ক্ষমা চাই? কেউ বলেছে? বলেনি। সেই রাজনৈতিক দলকে বাংলাদেশের মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাই আপনাদের সতর্ক থাকতে হবে, হুঁশ রাখতে হবে, বিএনপি কোনো দিন যেন আওয়ামী লীগের মতো এই ধরনের আচরণ না করে।’

রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো.

এরশাদ আলীর সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে সাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী বিভাগ) সৈয়দ শাহীন শওকত, মহানগরের সদস্যসচিব মো. মামুন-অর-রশিদ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা প্রমুখ বক্তব্য দেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গণতন ত র ব এনপ র মঈন খ ন আওয় ম সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

এমন তো হবার কথা ছিল না: তারেক রহমান

জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে জনমনে সৃষ্ট সংশয়, সন্দেহ গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে সংকটপূর্ণ করে তুলতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

শেষ পর্যন্ত কোনো অগণতান্ত্রিক কিংবা অপশক্তির কাছে বিনা শর্তে আত্মসমর্পণের পথে হাটতে হয় কি-না, এমন শঙ্কাও জানিয়েছেন তারেক রহমান। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে মাঠে থাকা সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোকে এমন বিপদের কথাও স্মরণ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

প্রবাসে বিএনপির সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তারেক রহমান। লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তিনি। আজ রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিএনপি।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে মানুষের উদ্বেগের কথা তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, ‘পরাজিত পলাতক স্বৈরাচারের শাসন আমলে জনগণের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনোই আগ্রহ ছিল না। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় জনমনে কোনো কোনো ক্ষেত্রে জিজ্ঞাসা বাড়ছে, যথাসময়ে কি নির্বাচন হবে?... এমন তো হবার কথা ছিল না।’

বিএনপির বিজয় ঠেকাতে সংঘবদ্ধ অপপ্রচার ও অপকৌশল দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে বলে উল্লেখ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘উদ্বেগ এবং আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশেও বর্তমানে বিএনপির বিজয় ঠেকাতে সংঘবদ্ধ অপপ্রচার এবং অপকৌশল দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে।’

দেশে প্রতিনিয়ত একের পর এক নিত্য নতুন শর্ত জুড়ে দিয়ে গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে সংকটাপূর্ণ করে তোলা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তারেক রহমান। তবে তাঁর বিশ্বাস, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শক্তিতে বিশ্বাসী নাগরিকেরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো ষড়যন্ত্রই বিএনপিকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না।

শুধু বিএনপির বিজয় ঠেকাতে গিয়ে পতিত পরাজত পলাতক স্বৈরাচার দেশে ‘ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিগত ১৫ বছরে দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে বিএনপি দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, তবে বিএনপির প্রতি দেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতাপ্রিয় জনগণের আস্থা, ভালোবাসা থাকায় সে সংকট কাটিয়েছে তাঁর দল।

তারেক রহমান বলেন, ‘দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি শুরু থেকেই ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য বজায় রাখার স্বার্থে সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে একদিকে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার পথ বেছে নিয়েছে। অপরদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেও যতটুকু সম্ভব, যতটুকু যথাসাধ্য সম্ভব আমাদের অবস্থান থেকে আমরা সহযোগিতা করে আসছি।’

প্রবাসে বিএনপির সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৩০০ আসনে প্রার্থী বাছাই প্রায় চূড়ান্ত: তারেক রহমান
  • গণতন্ত্রের পথে সংকট দেখছেন তারেক
  • এমন তো হবার কথা ছিল না: তারেক রহমান
  • সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠাই এখন জাতির দাবি
  • জনগণের বৃহত্তর ঐক্য ছাড়া এই ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থার পতন হবে না: সাকি