রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক-বাঘাইহাট সড়কের নন্দারাম, চাইল্যাতলী ও চম্পক নগর এলাকায় পাহাড়ের মাটি ধসে খাগড়াছড়ির সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়েছে। এতে পর্যটন স্পট সাজেকে আনুমানিক ৪২৫ জন পর্যটক আটকা পড়েছেন।

বুধবার (২৩ জুলাই) রাতভর ভারী বৃষ্টির ফলে সাজেক- বাঘাইহাট সড়কের তিনটি স্থানে পাহাড়ের মাটি ধসে পড়েছে। এতে কেউ হতাহত না হলেও সড়কে বহু যানবাহন আটকা পড়েছে। ফলে, চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন নারী-শিশুসহ অসংখ্য মানুষ। সংবাদ পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মী, সেনাবাহিনী ও উপজেলা প্রশাসন মাটি সরানোর কাজ শুরু করেছে।

সাজেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অতুলাল চাকমা বলেছেন, সড়কের তিনটি স্থানে পাহাড়ের মাটি ধসে পড়েছে। সড়কে বড় বড় পাথর ও গাছও উপড়ে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের মাটি সরানোর কাজে লাগিয়েছি। তবে, ভারী যন্ত্রপাতি ও বুলডোজার ছাড়া এসব পাথর ও গাছ সরানো সম্ভব নয়। বিষয়টি সেনাবাহিনীর ৬ বেঙ্গল বাঘাইহাট জোন ও বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরীন আক্তারকে জানানো হয়েছে। 

আরো পড়ুন:

পাহাড় ধসে মারিশ্যা-দীঘিনালা সড়কে যান চলাচল বন্ধ

টানা বর্ষণে রাঙামাটিতে পাহাড় ধসের শঙ্কা, আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে অনীহা

এ বিষযে খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, সড়কটি তাদের কর্মএলাকার মধ্যে নয়। 

এটি ইসিবির সড়ক, এ তথ্য জানিয়ে সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দিয়েছে খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। 

বাঘাইছড়ি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরীন আক্তার বলেছেন, গত রাতে বাঘাইছড়িতে ভারী বর্ষণ হয়েছে। এতে সাজেক-বাঘাইহাট সড়কের অন্তত তিনটি স্থানে পাহাড়ধস হয়েছে। সাজেকের সঙ্গে বাঘাইছড়ি ও খাগড়াছড়ির সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে, সাজেকে ৪২৫ জন পর্যটক আটকা পড়েছেন। 

তিনি জানান, পাহাড়ধসের খবর পেয়ে দিঘিনালা ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী ও বাঘাইছড়ি উপজেলা প্রশাসন সড়ক থেকে মাটি সরানোর কাজ শুরু করেছে। বড় বড় পাথর সরাতে সময় লাগছে। সেনাবাহিনীর সহায়তা চাওয়া হয়েছে, তারা কাজ শুরু করেছেন। সড়কের মাটি সরানো হলেই পর্যটকরা ফিরতে পারবেন।

ঢাকা/শংকর/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প হ ড় ধস পর যটক ব ঘ ইছড় উপজ ল সড়ক র

এছাড়াও পড়ুন:

মতলব দক্ষিণে এক বিদ্যালয়ের ২০ এসএসসি পরীক্ষার্থীর রোল নম্বরে অন্য শিক্ষার্থীদের নাম

চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় একটি বিদ্যালয়ের ২০ পরীক্ষার্থীর রোল নম্বরে অন্য শিক্ষার্থীর নাম পাওয়া গেছে। এ কারণে তাদের ফলাফল আসেনি। নিবন্ধন প্রক্রিয়ার ত্রুটির কারণে এমনটি হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে।

ওই বিদ্যালয়ের নাম আলহাজ তোফাজ্জল হোসেন ঢালী উচ্চবিদ্যালয়। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে ২০ জুলাই লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী। এ ছাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে গতকাল রোববার মৌখিক অভিযোগ করে বিদ্যালয়টির আরও ১৯ পরীক্ষার্থী। ফলাফল না পেয়ে এসব পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থীরা হলো সামিয়া, নাদিয়া আক্তার, আঁখি, মীম, মাহিয়া আক্তার মাহী, রিফাতুল ইসলাম, আরাফাত রহমান, তানজিনা আক্তার, অন্তরা, ফারিয়া ইসলাম, সাবিকুন্নাহার জুমা, জাকিয়া আক্তার মুন্নী, ইয়াসমিন আক্তার, নুসরাত, আসমা আক্তার, দ্বীপ চক্রবর্তী, মাহমুদা, শিরিনা আক্তার, আহাদ ঢালী ও খাদিজা আক্তার ফাতেমা।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আলহাজ তোফাজ্জল হোসেন ঢালী উচ্চবিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় সব বিভাগ হতে মোট ৮৪ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে ৬৪ জনের ফলাফল পাওয়া যায়। বাকি ২০ জনের ফলাফল পাওয়া যায়নি। ওই ২০ জনের রোল নম্বরের বিপরীতে অন্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নাম-তথ্য পাওয়া যায়, যারা এবার এসএসসি পরীক্ষাতেই বসেনি। ছাত্রীর রোল নম্বরের বিপরীতে ফলাফল শিটে ছাত্রের নাম এবং ছাত্রের ফলাফল শিটে ছাত্রীর নাম দেখা যায়।

সাবিকুন্নাহার অভিযোগে জানায়, ১০ জুলাই প্রকাশিত ফলাফল শিটে তার রোল নম্বর সার্চ দিলে ফারদিন হোসেন নামের আরেক ছাত্রের নাম আসে, অথচ সে এবার এসএসসি পরীক্ষা দেয়নি। ছাত্রটি একই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে পড়ছে। পরীক্ষা দিয়ে ফলাফল না পেয়ে হতাশ ও ক্ষুব্ধ জুমা।

জানতে চাইলে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ মাজহারুল হক বলেন, হাফিজুর রহমান নামের এক শিক্ষক শিক্ষার্থীদের অনলাইনে নিবন্ধনের কাজ করেন। এসএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র ডাউনলোড করে তাদের কাছে পৌঁছানোর দায়িত্বও তাঁকে দেওয়া হয়। তাঁর দায়িত্বহীন কর্মকাণ্ড ও ভুলের কারণে ওই পরীক্ষার্থীরা ফলাফল পাচ্ছে না। নবম শ্রেণিতে তাদের নিবন্ধনই ঠিকমতো হয়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে ওই পরীক্ষার্থীদের নিবন্ধন কার্ড সংশোধন করে ফলাফল সংশোধনের জন্য আবেদন করা হয়েছে।

এদিকে বিদ্যালয়টির একাধিক শিক্ষকের দাবি, এসএসসির ফলাফল প্রকাশের পর থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক হাফিজুর রহমান বিদ্যালয়ে আসছেন না। তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোনটিও বন্ধ। এই প্রতিবেদকও তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পেয়েছেন।

অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে ইউএনও আমজাদ হোসেন বলেন, বিষয়টি তদন্ত করতে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তদন্ত প্রতিবেদন কয়েক দিনের মধ্যে জমা দেওয়া হবে জানিয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গাউছুল আজম পাটওয়ারী বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ওই পরীক্ষার্থীদের নিবন্ধনই করা হয়নি। যেসব নিবন্ধন কার্ড ও প্রবেশপত্র পরীক্ষার্থীদের দেওয়া হয়েছে, সেগুলো ভুয়া। ঘটনাটির পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে আগামীকাল মঙ্গলবার কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের একটি প্রতিনিধিদল ওই বিদ্যালয়ে যাবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মতলব দক্ষিণে এক বিদ্যালয়ের ২০ এসএসসি পরীক্ষার্থীর রোল নম্বরে অন্য শিক্ষার্থীদের নাম
  • কাজির আগে হাজির ইউএনও, বন্ধ হলো স্কুলছাত্রীর বিয়ে
  • জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে চলাচল উপযোগী হলো সখিপুর-ভালুকা সড়ক