উত্তরায় বিমান বিধ্বস্ত: ছেলেকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল নিহত মাসুমার
Published: 27th, July 2025 GMT
ঢাকার উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় গুরুতর দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া কর্মচারী মাসুমা বেগমকে (৩৮) তাঁর গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়েছে। আজ রোববার সকাল সাড়ে ৯টায় ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার বড় মানিকা ইউনিয়নের বাটামারা গ্রামে জানাজার পর পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
এর আগে গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
পারিবারিক সূত্র জানায়, গতকাল রাত সাড়ে ১২টার দিকে মাসুমার লাশবাহী গাড়ি গ্রামে পৌঁছায়। স্বামী মো.
শোকে বিহ্বল স্বামী মো. সেলিম (৪১) বলেন, ‘ও (মাসুমা) যদি চাইত, পেছন দিক দিয়ে বেরিয়ে নিজেকে বাঁচাতে পারত। কিন্তু নিজের কথা না ভেবে স্কুলের শিশুদের বাঁচাতে গিয়ে নিজেই অগ্নিদগ্ধ হয়। ওর ভীষণ ইচ্ছে ছিল ছেলেটাকে মানুষের মতো মানুষ করবে। লেখাপড়া করাতে চেয়েছিল। ছেলেমেয়েদের নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল। কিন্তু অভাবের কারণে অনেক কিছুই পারেনি। তিল তিল করে সে স্বপ্ন পূরণ করছিল। সে স্বপ্ন একদম ভেঙে গেছে। দুটি সন্তান এতিম হয়ে গেল।’
আরও পড়ুনউত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দগ্ধ চারজনের অবস্থা সংকটাপন্ন, বাসায় ফিরেছে দুই শিক্ষার্থী১৯ ঘণ্টা আগেসেলিম বলেন, ‘আমার তো কিছু নাই, সব শেষ হয়ে গেছে। আমার ও আমার স্ত্রীর অনেক আশা, অনেক স্বপ্ন ছিল। ভবিষ্যতে আরও এগিয়ে যাব। আমরা তো এমনিতেই অসহায় পরিবার। আমার স্ত্রীকে হারিয়ে এই অসহায়ের মধ্যে আরও অসহায় হয়ে পড়েছি। আমার ছেলেটা ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। সেই সন্তানকে কীভাবে মানুষ করব, এটাই বুঝতে পারছি না।’
সেলিম আরও বলেন, ‘ঘটনার দিন বেলা ১টা ১০ মিনিটে ফোনে খবর পাই, স্কুলের ওপর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। বার্ন ইউনিটে গিয়ে দেখি, আমার স্ত্রী ইমার্জেন্সিতে। সেদিন বেলা আড়াইটায় ওর সঙ্গে শেষ কথা হয়। ও আমার কাছে ক্ষমা চায়, সন্তানদের খেয়াল রাখতে বলে। ও বলে, “আমি হয়তো আর বাঁচব না।”’
মাসুমা বেগমের জানাজায় অংশ নেন বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রায়হানুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘এই শোক আমরা সবাই ভাগ করে নিয়েছি। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটির পাশে থাকার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। সরকারি সহায়তা যথাসময়ে পৌঁছে দেওয়া হবে।’
আরও পড়ুনউত্তরায় যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার আগে ঠিক কী করেছিলেন পাইলট তৌকির২৬ জুলাই ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব ম ন ব ধ বস ত
এছাড়াও পড়ুন:
‘দূরে থেকেও আমরা কাছে, এটাই বাস্তব’
ঢাকাই চলচ্চিত্রের ‘প্রিয়দর্শিনী’খ্যাত নায়িকা আরিফা পারভীন মৌসুমী। সোমবার (৩ নভেম্বর) ৫২ বছর বয়স পূর্ণ করলেন এই অভিনেত্রী। বিশেষ এই দিনে দেশে নেই, সন্তানদের সঙ্গে এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন মৌসুমী।
মৌসুমী যুক্তরাষ্ট্রে থাকলেও বাংলাদেশে অবস্থান করছেন তার স্বামী ওমর সানী। সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে চিত্রনায়ক ওমর সানী কয়েকটি ছবি তার ফেসবুকে পোস্ট করে স্ত্রীকে ভালোবাসার বার্তা দিয়েছেন।
আরো পড়ুন:
মৌসুমীকে বিয়ে করা কি ভুল ছিল ওমর সানীর
তারকাদের ব্যাংক হিসাব জব্দ
এসব ছবির ক্যাপশনে ওমর সানী লেখেন, “শুভ জন্মদিন প্রিয়দর্শিনী মৌসুমী। দূরে থেকেও আমরা কাছে এটাই বাস্তব, আর যারা আমাদেরকে নিয়ে উল্টাপাল্টা নিউজ করে ওরা হচ্ছে…। শুভ জন্মদিন।”
জন্মদিনের প্রথম প্রহর থেকে ভক্ত-অনুরাগীরা প্রিয় অভিনেত্রীকে সোশ্যাল মিডিয়ায় শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। ওমর সানীর এই পোস্টে নেটিজেনদের পাশাপাশি শোবিজ অঙ্গনের অনেকেই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মৌসুমীকে।
চিত্রনায়িকা মুনমুন লেখেন, “শুভ জন্মদিন প্রিয়দর্শিনী, প্রিয় অভিনেত্রী মৌসুমী আপা।” শাহনূর লেখেন, “শুভ জন্মদিন আপু।” আইরিন সুলতানা লেখেন, “শুভ জন্মদিন।” এমন অসংখ্য মন্তব্য কমেন্ট বক্সে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৯৭৩ সালের ৩ নভেম্বর খুলনায় জন্মগ্রহণ করেন মৌসুমী। তার বাবার নাম নাজমুজ্জামান মনি ও মা শামীমা আখতার জামান। ছোটবেলা থেকেই অভিনেত্রী এবং গায়িকা হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন মৌসুমী। এরপর ‘আনন্দ বিচিত্রা ফটো বিউটি কনটেস্ট’ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন, যার ওপর ভিত্তি করে তিনি ১৯৯০ সালে টেলিভিশনের বাণিজ্যিক ধারার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কাজের সুযোগ পান।
চিত্রনায়িকা হিসেবে ঢাকাই চলচ্চিত্রে মৌসুমীর অভিষেক ১৯৯৩ সালে সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমার মাধ্যমে। এ সিনেমায় সালমান শাহর সঙ্গে জুটিবদ্ধ হন এ অভিনেত্রী। প্রথম সিনেমাতে নিজেদের মেধার জানান দেন সালমান শাহ ও মৌসুমী। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। দুজনই ঢালিউডে নিজেদের অবস্থান তৈরি করে নেন। তারপর তিন দশকের বেশি সময় ধরে ঢালিউডে মেধার দ্যুতি ছড়াচ্ছেন মৌসুমী।
নারগিস আক্তার পরিচালিত ‘মেঘলা আকাশ’ ও চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত ‘দেবদাস’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য এই অভিনেত্রী পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
ঢাকা/শান্ত