‘কোনো দিন জন্মদিন পালন করা হতো না, কেক কাটাও হতো না’
Published: 27th, July 2025 GMT
মঞ্চনাটক, টিভি ও চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা সৈয়দ হাসান ইমাম। রবিবার (২৭ জুলাই) তার ৯০তম জন্মদিন। ষাটের দশকে সিনেমার পর্দায় নায়ক হিসেবে আবির্ভূত হওয়া এই গুণী শিল্পী দীর্ঘ পাঁচ দশকের বেশি সময় অভিনয়ের নানা মাধ্যমে দ্যুতি ছড়িয়েছেন।
জন্মদিন নিয়ে তার ভাবনা প্রসঙ্গে হাসান ইমাম বলেছিলেন, “কোনো দিন জন্মদিন পালন করা হতো না। কেক কাটাও হতো না। তবে এই দিনে বাড়ির মধ্যে ভালো ভালো রান্না হতো। সবাই মিলে খেত, এই আরকি।”
ছোটবেলার স্মৃতিচারণা করে সৈয়দ হাসান ইমাম বলেন, “আমাকে ছেলেবেলায় কেউ কিছু করতে নিষেধ করেননি। সচেতন পরিবার। আমার মামারা কমিউনিস্ট পার্টি করতেন। বড় নেতা ছিলেন। কেউই আমাদের বাধা দেননি। আমি খেলাধুলা করেছি। গানবাজনা করেছি। পরে ছাত্ররাজনীতি করেছি। কলেজে গিয়ে নাটক করেছি। আমি নিজের মতো করে বাঁচতে পেরেছি, এটাই আমার সৌভাগ্য।”
আরো পড়ুন:
পরিচালককে অভিনেত্রীর জুতাপেটা (ভিডিও)
তিশার সিনেমা থেকে সরে দাঁড়ালেন খায়রুল বাসার
“নিজের মতো বাঁচতে পারার জন্য প্রথমত নিজের ইচ্ছাশক্তি লাগে। দ্বিতীয়ত, সবার সহযোগিতা। দুটিই আমি সব সময় পেয়েছি। অনেকের পরিবার তাদের সন্তানদের বাধা দেয়, নিজের মতো করে চলতে দেয় না। আমার পরিবার তা করেনি, আমরা যেটা করতে চেয়েছি, সেটাই করেছি।” বলেন সৈয়দ হাসান ইমাম।
অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা, সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী এবং একজন সৎ ও মূল্যবোধনিষ্ঠ মানুষ। জীবনের বিচিত্র পথচলায় গান, নাটক, চলচ্চিত্র, মঞ্চ ও আবৃত্তির মাধ্যমে সংস্কৃতির নানা শাখায় অবদান রেখেছেন।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে পরিবারের সঙ্গে অবস্থান করছেন এই শিল্পী। শারীরিক অসুস্থতার কারণে অভিনয় থেকে দূরে থাকলেও মন আজও তরুণ, ভরপুর উদ্দীপনায় বাঁচতে ভালোবাসেন তিনি।
স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও আজীবন সম্মাননাসহ অসংখ্য পুরস্কার লাভ করেছেন সৈয়দ হাসান ইমাম।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট ভ ন টক চলচ চ ত র পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
লাইলীকে বিশ্ব দরবারে নিয়ে যেতে চান আনোয়ার
বরগুনার বিষখালী নদীর পাড়ে বেড়ে উঠেছেন লাইলী বেগম। বাবার মৃত্যুর পর ভাইয়েরা অসুস্থ মায়ের দায়িত্ব নিতে অস্বীকৃতি জানান, তখন কন্যা হয়েও লাইলী সেই দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন। অভাব, ক্ষুধা আর সমাজের অবহেলা তার নিত্যসঙ্গী হয়। তারপরও থেমে যাননি লাইলী।
জীবনের চাকা ঘুরাতে, মাছ ধরা থেকে বর্গাচাষ—সবই করেছেন লাইলী। গত ২১ বছর ধরে নদী ও সাগরে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করছেন। বরগুনা জেলার সরকারিভাবে নিবন্ধিত একমাত্র নারী জেলে তিনি। এই লাইলীকে নিয়ে নির্মিত হয়েছে প্রামাণ্যচিত্র ‘উত্তরের বৈঠা’। এটি নির্মাণ করেছেন আনোয়ার হোসেন।
পরিচালক আনোয়ার হোসেন
আরো পড়ুন:
জসীমের কবরে রাতুলকে সমাহিত করে দুই ভাইয়ের আবেগঘন পোস্ট
নীনার অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবরে কী বলেছিলেন ক্রিকেটার ভিভ?
এ নিয়ে রাইজিংবিডির সঙ্গে কথা বলেন পরিচালক আনোয়ার হোসেন। তরুণ এই নির্মাতা বলেন, “এই চলচ্চিত্র শুধু একজন নারী জেলের গল্প নয়, এটি একজন মানুষের বেঁচে থাকার অদম্য চেষ্টা, একাকিত্বে গড়ে ওঠা সাহসিকতার প্রতিচ্ছবি। লাইলী বেগম যখন নদীতে জাল ছুঁড়ে দেন, সেই মুহূর্তে তিনি শুধু মাছ খোঁজেন না—তিনি খুঁজে ফেরেন নিজের অবস্থান, নিজের সম্মান, আর অস্তিত্বের উত্তর।”
লাইলীর চোখ দিয়ে বাস্তবতা দেখাতে চেয়েছেন নির্মাতা। তার ভাষায়, “এই ফিল্মে আমি কোনো কৃত্রিম কণ্ঠ বা নাটকীয় ভাষা ব্যবহার করিনি। কারণ আমি চেয়েছি দর্শক যেন লাইলীর চোখ দিয়েই এই বাস্তবতা দেখেন। তার নীরবতা, তার কথাবার্তা, তার দৃষ্টি—সবই যেন একেকটি দৃশ্যপট হয়ে ওঠে। একজন নির্মাতা হিসেবে আমার দায়িত্ব ছিল শুধু একটি ফ্রেম তৈরি করে দেওয়া, বাকিটা বলে গেছেন লাইলী নিজেই—তার জীবনযাত্রা, নদী এবং অব্যক্ত যন্ত্রণা দিয়ে।”
‘লাইলী’-কে বিশ্ব দরবারে নিয়ে যেতে চান পরিচালক। তা জানিয়ে আনোয়ার হোসেন বলেন, “এই ফিল্মটি তাদের জন্য, যারা নিঃশব্দে লড়াই করেন এবং যারা কখনো আলোয় আসেন না। এখানে আমি সংক্ষিপ্ত আকারে প্রামাণ্য চিত্রটি তৈরি করেছি, পূর্ণদৈর্ঘ্য আকারে তৈরি করার প্রস্তুতি চলছে। আপনাদের সহযোগিতা ও আগ্রহ আমাকে অনুপ্রাণিত করবে। এই জীবন সংগ্রামের কথা বিশ্ব দরবারে নিয়ে যেতে চাই।”
সমাজের বাঁকা চোখ উপেক্ষা করে লাইলী প্রমাণ করেছেন, নারীর স্থান কেবল ঘরে নয়, সাহস আর সংগ্রামেও। লাইলী কেবল একজন নারী জেলে নন, এক অনুপ্রেরণার নাম। নারী চাইলে সব পারে—লাইলী তা নিঃশব্দে প্রমাণ করেছেন বলেও মনে করেন নির্মাতা।
ঢাকা/শান্ত