ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজের শেষ টেস্টে মাত্র ৬ রানে রুদ্ধশ্বাস জয় পেয়েছে টিম ইন্ডিয়া। সিরিজ ২-২ সমতায় শেষ হলেও শেষ টেস্টের উত্তেজনা ও নাটকীয়তা ভোলার নয়। এই জয়কে ঐতিহাসিক করে তুলেছেন ভারতীয় পেসার মোহাম্মদ সিরাজ। যার ঝলমলে বোলিং পারফরম্যান্সে ইংল্যান্ডের শেষ স্বপ্নটুকু মাটিতে মিশে যায়।

শেষ দিনে ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল মাত্র ৩৫ রান, হাতে ছিল ৪ উইকেট। সেই কঠিন সময়েই হায়দরাবাদের এই পেসার একাই তুলে নেন তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট— জেমি স্মিথ, জেমি ওভারটন ও গাস অ্যাটকিনসনকে। এই তিন শিকারই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। আর সিরাজের হাত ধরে আসে ভারতের টেস্ট ইতিহাসে সবচেয়ে কম রানে পাওয়া জয়।

ম্যাচ শেষে সিরাজ বলেন, “আমি সবসময় বিশ্বাস করতাম যে, যেকোনো পরিস্থিতি থেকে ম্যাচ জেতানো সম্ভব। নিজের বোলিংয়ের উপর আস্থা ছিল, আর লক্ষ্য ছিল শুধু একটি; ভারতের জন্য ম্যাচ জেতানো।”

আরো পড়ুন:

রুদ্ধশ্বাস জয়ে সিরিজ সমতায় সফর শেষ ভারতের

নাটকীয় রোমাঞ্চে জমে উঠেছে ওভাল টেস্ট

এই টেস্টে সিরাজ দ্বিতীয় ইনিংসে নেন ৫টি উইকেট। পুরো সিরিজে তার শিকার ২৩ উইকেট। গড় ৩২.

৪৩। এমন ধারাবাহিকতায় সিরাজ নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন দলের অন্যতম নির্ভরযোগ্য পেসার হিসেবে।

রবিবারের খেলা চলাকালে যখন ইংল্যান্ড ১৩৭ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে খেলছিল, তখন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণার বলে হ্যারি ব্রুকের একটি ক্যাচ ফেলেছিলেন সিরাজ। যেটি ছক্কায় পরিণত হয়। এরপর ব্রুক ও রুট মিলে যোগ করেন আরও ১৬৪ রান। সিরাজ বলেন, “সেই ক্যাচ মিস করার পর মনে হয়েছিল ম্যাচটা হয়তো হাতছাড়া হয়ে গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমরা হাল ছাড়িনি।”

রবিবার খেলা শেষ হয় আলো স্বল্পতায়। সোমবার সকালেও আকাশ ছিল মেঘলা। কিন্তু সিরাজ যেন নিজেই ছিলেন আলো হয়ে। দিনের দ্বিতীয় ওভারে জেমি স্মিথকে ফেরান, পরের ওভারে ফেরান ওভারটনকে। এরপর প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা তুলে নেন জশ টাঙ-এর উইকেট। তখন ইংল্যান্ডের প্রয়োজন মাত্র ১৬ রান, উইকেটে গাস অ্যাটকিনসন আর চোটে কাহিল ক্রিস ওকস। সেই সময় সিরাজ নিজের ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলেই অ্যাটকিনসনকে ফিরিয়ে ম্যাচে ভারতের সোনালি জয় সিল করে দেন।

সিরাজ জানান, “ভোরে ঘুম থেকে উঠে গুগলে ‘বিলিভ’ শব্দটা লিখে একটা ছবি খুঁজে সেটি ফোনের ওয়ালপেপার করেছিলাম। সেটাই মনে করিয়ে দিচ্ছিল বিশ্বাস থাকলে জয় সম্ভব।”

ঢাকা/আমিনুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

জয়পুরহাটে ৩ থানা ওসি শূন্য

জয়পুরহাটে ঘন ঘন বদলি ও প্রত্যাহারের কারণে প্রায় এক মাস ধরে জেলার তিন থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নেই। সদর, ক্ষেতলাল ও আক্কেলপুর থানায় পরিদর্শক (তদন্ত) পদে থাকা কর্মকর্তারা ওসির দায়িত্ব পালন করছেন।

গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষিতে ২৯ সেপ্টেম্বর একযোগে এ জেলার পাঁচ থানার ওসির বদলি করা হয়। এর দুই দিন পর ১ অক্টোবর পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাবের স্বাক্ষরিত এক আদেশে সদর, পাঁচবিবি, কালাই, ক্ষেতলাল ও আক্কেলপুর থানায় নতুন ওসি পদায়ন করা হয়। ওই চিঠিতে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ওসি শাহেদ আল মামুনকে জয়পুরহাট সদর থানার ওসি, জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিএসবি) পরিদর্শক কাওসার আলীকে পাঁচবিবি থানার ওসি, জেলা ওআর হেডকোয়াটার্সের পরিদর্শক মশিউর রহমানকে ক্ষেতলাল থানার ওসি, সদর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জকে কালাই থানার ওসি এবং সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মইনুল ইসলামকে আক্কেলপুর থানার ওসি হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়।

যোগদানের ৩ মাস ১২ দিনের মাথায় চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি আক্কেলপুর থানার ওসি মইনুল ইসলাম ও ক্ষেতলাল থানার ওসি মশিউর রহমানের বদলি হয়। এরপর পুলিশ পরিদর্শক আরিফুল ইসলাম ক্ষেতলাল থানার ওসি হিসেবে যোগ দেন। এক মাসের মধ্যে আরিফুর রহমানকে প্রত্যাহার করলে মাহবুবুর রহমান সরকার ওসির দায়িত্ব পান।

আরো পড়ুন:

মেহেরপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে কৃষকের মৃত্যু

শরীয়তপুরে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার ১

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জয়পুরহাট সদর থানার ওসি শাহেদ আল মামুন ও পাঁচবিবি থানার ওসি কাওসার আলীকে বদলি করা হয়। আক্কেলপুর থানার সাবেক ওসি মইনুল ইসলামকে আবার পাঁচবিবি থানার ওসি হিসেবে পদায়ন করা হয়। অক্টোবরে যোগদানের পর একটানা শুধু কালাই থানায় জাহিদ হোসেন ওসির দায়িত্বে রয়েছেন।

ওসি শাহেদ আল মামুন বদলির পর সদর থানার দায়িত্ব পান নূর আলম সিদ্দিক। তাকেও বদলি করা হয়। চলতি বছরের ৫ মে ক্ষেতলাল থানায় ওসি হিসেবে যোগদান করা খন্দকার ফরিদ হোসেনকে এক মাস না যেতে তাকে সদর থানায় বদলি করা হয়। কিন্তু ২২ দিন পর তাকেও প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়। তিন দিনের ছুটি শেষে এ বছরের গত ৪ জুলাই তাকে থানায় যোগদানের কথা ছিল। তবে তিনি সেদিন যোগদান করেননি। এদিকে ৫ জুলাই জয়পুরহাট জেলায় আসেন এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা। ওইদিন দুপুরের দিকে খন্দকার ফরিদ হোসেন কর্মস্থলে হাজির হন। এরপর ওই দিনই প্রশাসনিক কারণের কথা উল্লেখ করে এসপি তাকে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করে অফিস আদেশ জারি করেন।

একইভাবে, আক্কেলপুর থানার সাবেক ওসি মইনুলের পর দায়িত্ব পাওয়া আনিসুর রহমানও প্রত্যাহার হন। এরপর দায়িত্ব পান পরিদর্শক (তদন্ত) মাসুদ রানা। কিন্তু বিভাগীয় মামলায় পদাবনতি দিয়ে উপপরিদর্শক (এসআই) করে থানার দায়িত্ব থেকে গত ২৩ জুন তাকে সরিয়ে নেয়া হয়।

গত ১৩ জুন হাসমত আলী ক্ষেতলাল থানার ওসি হিসেবে যোগদান করেন। তিনি ২০১২ সালে জয়পুরহাট থানার এসআই থাকাকালীন জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের মিছিল লাঠিচার্জ করেন। এ সময় গুলিতে শিবিরের এক কর্মী নিহত হন। পুরাতন ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এ ঘটনার পর ২৬ জুন সকালে ওসি হাসমত আলী থানার পরির্দশক (তদন্ত) কামাল হোসেনকে দায়িত্ব বুঝে দিয়ে গোপনে থানা ছেড়ে চলে যান। পরে অবশ্য তাকে থানায় প্রত্যাহার দেখানো হয়।

পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জয়পুরহাট সদর থানা, আক্কেলপুর থানা ও ক্ষেতলাল থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পদায়ন করা হয়নি। জয়পুরহাট সদর থানার পরির্দশক (তদন্ত) নাজমুল কাদের, আক্কেলপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মমিনুল ইসলাম ও ক্ষেতলাল থানার পরির্দশক (তদন্ত) কামাল হোসেন এখন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) দায়িত্ব পালন করছেন।

পুলিশের একটি সূত্র বলছে, ঘন ঘন ওসি বদলি ও প্রত্যাহারের ঘটনায় বাইরে থেকে এ জেলায় অভিজ্ঞ কোনো কর্মকর্তা ওসি হয়ে আসার আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। এ কারণে একমাস হলেও তিন থানায় ওসি পদায়ন করা যায়নি।

জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব জানান, জেলায় এখন এমন অভিজ্ঞ কেউ নেই। আর ওসি পদের জন্য শর্ত থাকে। শর্ত পূরণ হলে থানায় ওসি করা হয়। আর ঢাকা (পুলিশ হেডকোয়াটার্স) থেকে কাউকে (অভিজ্ঞ পরিদর্শক) জেলায় এখনো দেয়া হয়নি। তবে শিগগিরই অভিজ্ঞ ওসি থানায় পদায়ন করা হবে। 

ঢাকা/বাকী/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এশিয়া কাপের প্রিলিমিনারি স্কোয়াডে সোহান-সৌম‌্য-সাইফ
  • হামলার পর সাঁওতালপাড়া ফাঁকা
  • নড়াইলে কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ ও হেনস্তার অভিযোগ, তদন্ত কমিটি
  • দমার চরের বিরল পানিকাটা
  • তেল উৎপাদন বাড়াতে যাচ্ছে ওপেক প্লাস
  • রাবির সাবেক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা মামলা’র অভিযোগ
  • ‘আ. লীগ ক্ষমতায় এলে দেইখ্যা নেব’, ওসিকে ভারতীয় নম্বর থেকে হুমকি
  • সিরাজের ভুলের খেসারত কি দিতে হবে ভারতকে
  • জয়পুরহাটে ৩ থানা ওসি শূন্য