ওভালে ঐতিহাসিক জয়, ম্যাচ জেতানো আত্মবিশ্বাসের গল্প শোনালেন সিরাজ
Published: 4th, August 2025 GMT
ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজের শেষ টেস্টে মাত্র ৬ রানে রুদ্ধশ্বাস জয় পেয়েছে টিম ইন্ডিয়া। সিরিজ ২-২ সমতায় শেষ হলেও শেষ টেস্টের উত্তেজনা ও নাটকীয়তা ভোলার নয়। এই জয়কে ঐতিহাসিক করে তুলেছেন ভারতীয় পেসার মোহাম্মদ সিরাজ। যার ঝলমলে বোলিং পারফরম্যান্সে ইংল্যান্ডের শেষ স্বপ্নটুকু মাটিতে মিশে যায়।
শেষ দিনে ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল মাত্র ৩৫ রান, হাতে ছিল ৪ উইকেট। সেই কঠিন সময়েই হায়দরাবাদের এই পেসার একাই তুলে নেন তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট— জেমি স্মিথ, জেমি ওভারটন ও গাস অ্যাটকিনসনকে। এই তিন শিকারই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। আর সিরাজের হাত ধরে আসে ভারতের টেস্ট ইতিহাসে সবচেয়ে কম রানে পাওয়া জয়।
ম্যাচ শেষে সিরাজ বলেন, “আমি সবসময় বিশ্বাস করতাম যে, যেকোনো পরিস্থিতি থেকে ম্যাচ জেতানো সম্ভব। নিজের বোলিংয়ের উপর আস্থা ছিল, আর লক্ষ্য ছিল শুধু একটি; ভারতের জন্য ম্যাচ জেতানো।”
আরো পড়ুন:
রুদ্ধশ্বাস জয়ে সিরিজ সমতায় সফর শেষ ভারতের
নাটকীয় রোমাঞ্চে জমে উঠেছে ওভাল টেস্ট
এই টেস্টে সিরাজ দ্বিতীয় ইনিংসে নেন ৫টি উইকেট। পুরো সিরিজে তার শিকার ২৩ উইকেট। গড় ৩২.
রবিবারের খেলা চলাকালে যখন ইংল্যান্ড ১৩৭ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে খেলছিল, তখন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণার বলে হ্যারি ব্রুকের একটি ক্যাচ ফেলেছিলেন সিরাজ। যেটি ছক্কায় পরিণত হয়। এরপর ব্রুক ও রুট মিলে যোগ করেন আরও ১৬৪ রান। সিরাজ বলেন, “সেই ক্যাচ মিস করার পর মনে হয়েছিল ম্যাচটা হয়তো হাতছাড়া হয়ে গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমরা হাল ছাড়িনি।”
রবিবার খেলা শেষ হয় আলো স্বল্পতায়। সোমবার সকালেও আকাশ ছিল মেঘলা। কিন্তু সিরাজ যেন নিজেই ছিলেন আলো হয়ে। দিনের দ্বিতীয় ওভারে জেমি স্মিথকে ফেরান, পরের ওভারে ফেরান ওভারটনকে। এরপর প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা তুলে নেন জশ টাঙ-এর উইকেট। তখন ইংল্যান্ডের প্রয়োজন মাত্র ১৬ রান, উইকেটে গাস অ্যাটকিনসন আর চোটে কাহিল ক্রিস ওকস। সেই সময় সিরাজ নিজের ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলেই অ্যাটকিনসনকে ফিরিয়ে ম্যাচে ভারতের সোনালি জয় সিল করে দেন।
সিরাজ জানান, “ভোরে ঘুম থেকে উঠে গুগলে ‘বিলিভ’ শব্দটা লিখে একটা ছবি খুঁজে সেটি ফোনের ওয়ালপেপার করেছিলাম। সেটাই মনে করিয়ে দিচ্ছিল বিশ্বাস থাকলে জয় সম্ভব।”
ঢাকা/আমিনুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ, চালু হলো ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার
সংস্কার শেষে ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার চালু হয়েছে। আজ শনিবার সকালে বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ করার মধ্য দিয়ে এ কারার যাত্রা শুরু হয়। এতে চট্টগ্রাম বিভাগের আটটি কারাগারের সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ও ফেনী জজ আদালতে বিচারাধীন মামলার আসামিদের রাখা হবে।
কারা সূত্র জানায়, দেশের পুরোনো চারটি কারাগারের মধ্যে ফেনী-২ কারাগার একটি। শত বছরের পুরোনো এ কারাগার ভবন ছিল জরাজীর্ণ। এ কারণে ২০১৯ সালে ১২ জানুয়ারি এ কারাগার থেকে বন্দীদের ফেনীর শহরতলির রানীরহাট এলাকার নতুন কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। এরপর থেকে কারাগারটি অনেকটা ‘পরিত্যক্ত’ অবস্থায় ছিল।
নতুন করে চালু হওয়া কারাগারটির অবস্থান ফেনী শহরের মাস্টারপাড়ায়। এটি ১৯১৫ সালে সাবজেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর ১৯৯৮ সালে জেলা এটিকে কারাগারে উন্নীত হয়। এ কারাগারের বর্তমান ধারণক্ষমতা ১৭২ জন। এর মধ্যে ১৭০ জন পুরুষ ও ২ জন নারী। কারাগার চালু করার জন্য গতকাল কুমিল্লা জেলা কারাগার থেকে ২৪ জন ও চট্টগ্রাম থেকে চারজন বন্দীকে আনা হয়েছিল। তাঁরা সবাই সশ্রম সাজাপ্রাপ্ত। এ কারাগারে তাঁরা রান্নার দায়িত্বে থাকবেন।
কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, ধাপে ধাপে সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন বন্দীদের ফেনীর দ্বিতীয় কারাগারে আনা হবে। আপাতত এতে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২৬ জন, কুমিল্লা থেকে ৭৪ জন, নোয়াখালী থেকে ১৫ জন, লক্ষ্মীপুর থেকে ৪ জন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ৩৩ জন বন্দী এখানে স্থানান্তর করা হবে। এতে সেল, রান্নাঘর, কিশোর ওয়ার্ড, মসজিদসহ প্রয়োজনীয় সুবিধা রয়েছে। এ কারাগার নিয়ে বর্তমানে দেশে কারার সংখ্যা ৭১।
জানতে চাইলে ফেনী-২–এর জেল সুপার মো. দিদারুল আলম বলেন, ‘রাষ্ট্র চায়, কারাগার শুধু শাস্তির জায়গা নয়, সংশোধনের কেন্দ্র হোক। এরই অংশ হিসেবে সংস্কার শেষে ফেনী কারাগার-২ চালু হয়েছে।’
কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার ফেরদৌস মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ কারাগারে স্থানান্তরিত বন্দীদের সব সুযোগ-সুবিধা ইতিমধ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে। চিকিৎসক ও প্রশিক্ষিত নার্সও যোগদান করেছেন। বেশির ভাগ পদে কর্মচারীরাও কাজ শুরু করেছেন।’