ট্রাম্পের বলপ্রয়োগের হুমকি ‘উদ্বেগজনক ও কাণ্ডজ্ঞানহীন’: ইরান
Published: 13th, February 2025 GMT
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগের যে হুমকি দিয়েছেন তাকে ‘উদ্বেগজনক ও কাণ্ডজ্ঞানহীন’ বলে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে তেহরান।
জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের স্থায়ী প্রতিনিধি আমির সাঈদ ইরাভানি মঙ্গলবার জাতিসংঘ মহাসচিব ও নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্টের কাছে লেখা এক অভিযোগপত্রে এ নিন্দা জানান। খবর পার্স টুডে ও প্রেস টিভির।
জাতিসংঘে ইরানের স্থায়ী রাষ্ট্রদূত মঙ্গলবার জাতিসংঘের প্রধান এবং নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতিকে লেখা এক চিঠিতে এই মন্তব্য করেছেন।
আরো পড়ুন:
ট্রাম্প-পুতিন ফোনালাপ: ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে আলোচনার ঘোষণা
বরখাস্ত হলেন ইউএসএআইডির মহাপরিদর্শক
অভিযোগে তিনি বলেন, ট্রাম্পের বেপরোয়া ও উস্কানিমূলক কথাবার্তা আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ সনদের স্পষ্ট লঙ্ঘন।
ইরাভানি বলেন, “আমার সরকারের নির্দেশে, আমি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দেওয়া গভীর উদ্বেগজনক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্যের প্রতি নিরাপত্তা পরিষদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য লিখছি। ট্রাম্প ইরানের ইসলামী প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগের প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছেন।”
ট্রাম্প গত শনিবার নিউ ইয়র্ক পোস্টে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে বলেন, তিনি ‘ইরানকে বোমা মেরে ফেলার চেয়ে’ ইরানের সঙ্গে একটি চুক্তি করতে পছন্দ করবেন।
ট্রাম্প আরো বলেন, ইরানিরা মরতে চায় না, কেউই মরতে চায় না। আমি পারমাণবিক শক্তি নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে ইরানের সঙ্গে একটি চুক্তি করতে চাই।” আমি এটিকে বোমা মেরে ফেলা পছন্দ করব," ট্রাম্প নিউ ইয়র্ক পোস্টকে বলেছেন। "তারা মরতে চায় না। কেউ মরতে চায় না।"
এরপর গত সোমবার ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প একই ভাষা প্রয়োগ করে বলেন, “আমি ইরানের বিরুদ্ধে বোমা হামলা না চালিয়ে তাদের সঙ্গে একটি চুক্তি করতে চাই।”
জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের স্থায়ী প্রতিনিধি তার অভিযোগপত্রে বলেন, ট্রাম্প তার বক্তব্যের মাধ্যমে জাতিসংঘ ঘোষণার ২(৪) অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করেছেন যেখানে স্বাধীন দেশগুলোর বিরুদ্ধে হুমকি বা বলপ্রয়োগ নিষিদ্ধ রয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইরানের বিরুদ্ধে ‘সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ’ করার নির্দেশ জারি করে যে ডিক্রিতে সই করেছেন তারও নিন্দা জানান ইরানি কূটনীতিক। তিনি বলেন, ট্রাম্পের এই নীতিটি বেআইনি, একতরফা জবরদস্তিমূলক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে ও ইরানের বিরুদ্ধে শত্রুতা বৃদ্ধি করে; যা আন্তর্জাতিক আইনের মৌলিক নীতি এবং নিয়মগুলোকে স্পষ্টভাবে লঙ্ঘন করে।”
ইরাভানি ট্রাম্পের এ ধরনের নির্লজ্জ বাগাড়ম্বরের ব্যাপারে নীরবতা ভেঙে সমস্বরে নিন্দা জানানোর জন্য জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
ইরানের সিরিয়র এই কূটনীতিক বলেন, “ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান এই বেপরোয়া হুমকিকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান ও নিন্দা জানায়। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এই ধরনের নির্লজ্জ বক্তব্যের মুখে চুপ থাকা উচিত নয়, কারণ বল প্রয়োগের হুমকিকে স্বাভাবিক করা একটি বিপজ্জনক নজির স্থাপন করে এবং এর দ্ব্যর্থহীন নিন্দা করা উচিত।”
তিনি সতর্ক করে বলেন, ইরানের বিরুদ্ধে যেকোনো আগ্রাসনের পরিণতি গুরুতর হবে, যার জন্য যুক্তরাষ্ট্র পূর্ণ দায়িত্ব বহন করবে।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইরান যেকোনো শত্রুতাপূর্ণ পদক্ষেপের বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে তার সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করবে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সায়েমের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে পাকিস্তানের জয়ে শুরু
জয়ের ধারাবাহিকতায় পাকিস্তান। বাংলাদেশের বিপক্ষে ঢাকায় শেষ টি-টোয়েন্টি জয়ের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতেও জয় পেয়েছে তারা।
অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে পাকিস্তানের জয়ের নায়ক সায়েম আইয়ুব। তার ৩৮ বলে ৫৭ রানের ইনিংসে ভর করে পাকিস্তান লাডারহিলে ৬ উইকেটে ১৭৮ রান করে। জবাব দিতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৭ উইকেটে ১৬৪ রানের বেশি করতে পারেননি। দারুণ ব্যাটিংয়ের পর বোলিংয়ে সায়েম ২০ রানে ২ উইকেট নেন। ১৪ রানের জয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে পাকিস্তান।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে পাকিস্তান শুরুতে শাহিবজাদা ফারহানের উইকেট হারায়। ১২ বলে ১৪ রান করে আউট হন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। তিনে নেমে ফখর সায়েমকে সঙ্গ দেন। দুজন ৮১ রানের জুটি গড়েন। এ সময়ে ফখর ২ চার ও ১ ছক্কায় ২৪ বলে ২৮ রান করেন। বাকি রান আসে সায়েমের ব্যাটে। এ সময়ে তিনি তুলে নেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি। হোল্ডারের বলে এলবিডব্লিউ হলে থেমে যায় তার ইনিংস।
এরপর হাসান নওয়াজের ১৮ বলে ২৪, সালমান আগার ১০ বলে ১১, ফাহিম আশরাফের ৯ বলে ১৫ রানে পাকিস্তান লড়াকু পুঁজি পায়। শেষ দিকে ১ বল খেলার সুযোগ পান হারিস। ছক্কায় উড়িয়ে পাকিস্তানের শেষটা ভালো করেন তিনি।
বোলিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সেরা ছিলেন শামার জোসেফ। ৩০ রানে নেন ৩ উইকেট।
লক্ষ্য তাড়ায় উদ্বোধনী জুটিতে ৭২ রান পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর হঠ্যাৎ ছন্দপতন। ৫ রান পেতেই ৩ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। ওই ধাক্কার পর তারা আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। জনসন চার্লস ও জুয়েল অ্যান্ড্রু ৩৫ রানের দুটি ইনিংস খেলেন। শেই হোপ (২), গুদাকেশ মোটি (০), শেফরন রাদারফোর্ড (১১) ও রস্টন চেজ (৫) দ্রুত আউট হন। শেষ দিকে পরাজয়ের ব্যবধান কমান হোল্ডার ও জোসেফ। হোল্ডার ১২ বলে ৪ ছক্কায় ৩০ রান করেন। ১২ বলে ১ চার ও ২ ছক্কায় ২১ রান করেন জোসেফ ।
পাকিস্তানের বোলারদের মধ্যে সেরা ছিলেন হাসান নওয়াজ। ২৩ রানে ৩ উইকেট নেন বাঁহাতি স্পিনার। সায়েমের ২ উইকেট বাদে ১টি করে উইকেট পেয়েছেন শাহীন শাহ আফ্রিদি ও সুফিয়ান মুকিম।
আগামীকাল একই মাঠে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকা/ইয়াসিন