মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগের যে হুমকি দিয়েছেন তাকে ‘উদ্বেগজনক ও কাণ্ডজ্ঞানহীন’ বলে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে তেহরান।

জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের স্থায়ী প্রতিনিধি আমির সাঈদ ইরাভানি মঙ্গলবার জাতিসংঘ মহাসচিব ও নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্টের কাছে লেখা এক অভিযোগপত্রে এ নিন্দা জানান। খবর পার্স টুডে ও প্রেস টিভির।

জাতিসংঘে ইরানের স্থায়ী রাষ্ট্রদূত মঙ্গলবার জাতিসংঘের প্রধান এবং নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতিকে লেখা এক চিঠিতে এই মন্তব্য করেছেন।

আরো পড়ুন:

ট্রাম্প-পুতিন ফোনালাপ: ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে আলোচনার ঘোষণা

বরখাস্ত হলেন ইউএসএআইডির মহাপরিদর্শক

অভিযোগে তিনি বলেন, ট্রাম্পের বেপরোয়া ও উস্কানিমূলক কথাবার্তা আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ সনদের স্পষ্ট লঙ্ঘন।

ইরাভানি বলেন, “আমার সরকারের নির্দেশে, আমি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দেওয়া গভীর উদ্বেগজনক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্যের প্রতি নিরাপত্তা পরিষদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য লিখছি। ট্রাম্প ইরানের ইসলামী প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগের প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছেন।”

ট্রাম্প গত শনিবার নিউ ইয়র্ক পোস্টে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে বলেন, তিনি ‘ইরানকে বোমা মেরে ফেলার চেয়ে’ ইরানের সঙ্গে একটি চুক্তি করতে পছন্দ করবেন।

ট্রাম্প আরো বলেন, ইরানিরা মরতে চায় না, কেউই মরতে চায় না। আমি পারমাণবিক শক্তি নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে ইরানের সঙ্গে একটি চুক্তি করতে চাই।”  আমি এটিকে বোমা মেরে ফেলা পছন্দ করব," ট্রাম্প নিউ ইয়র্ক পোস্টকে বলেছেন। "তারা মরতে চায় না। কেউ মরতে চায় না।"

এরপর গত সোমবার ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প একই ভাষা প্রয়োগ করে বলেন, “আমি ইরানের বিরুদ্ধে বোমা হামলা না চালিয়ে তাদের সঙ্গে একটি চুক্তি করতে চাই।”

জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের স্থায়ী প্রতিনিধি তার অভিযোগপত্রে বলেন, ট্রাম্প তার বক্তব্যের মাধ্যমে জাতিসংঘ ঘোষণার ২(৪) অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করেছেন যেখানে স্বাধীন দেশগুলোর বিরুদ্ধে হুমকি বা বলপ্রয়োগ নিষিদ্ধ রয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইরানের বিরুদ্ধে ‘সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ’ করার নির্দেশ জারি করে যে ডিক্রিতে সই করেছেন তারও নিন্দা জানান ইরানি কূটনীতিক। তিনি বলেন, ট্রাম্পের এই নীতিটি বেআইনি, একতরফা জবরদস্তিমূলক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে ও ইরানের বিরুদ্ধে শত্রুতা বৃদ্ধি করে; যা আন্তর্জাতিক আইনের মৌলিক নীতি এবং নিয়মগুলোকে স্পষ্টভাবে লঙ্ঘন করে।”

ইরাভানি ট্রাম্পের এ ধরনের নির্লজ্জ বাগাড়ম্বরের ব্যাপারে নীরবতা ভেঙে সমস্বরে নিন্দা জানানোর জন্য জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। 

ইরানের সিরিয়র এই কূটনীতিক বলেন, “ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান এই বেপরোয়া হুমকিকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান ও নিন্দা জানায়। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এই ধরনের নির্লজ্জ বক্তব্যের মুখে চুপ থাকা উচিত নয়, কারণ বল প্রয়োগের হুমকিকে স্বাভাবিক করা একটি বিপজ্জনক নজির স্থাপন করে এবং এর দ্ব্যর্থহীন নিন্দা করা উচিত।”

তিনি সতর্ক করে বলেন, ইরানের বিরুদ্ধে যেকোনো আগ্রাসনের পরিণতি গুরুতর হবে, যার জন্য যুক্তরাষ্ট্র পূর্ণ দায়িত্ব বহন করবে।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইরান যেকোনো শত্রুতাপূর্ণ পদক্ষেপের বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে তার সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করবে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারের প্রস্তাবিত নীতিতে ইন্টারনেটের দাম ২০% বাড়বে: আইএসপিএবি

সরকারের প্রস্তাবিত নীতিমালায় বিভিন্ন ফি ও চার্জ আরোপের কারণে গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেট সেবার খরচ আরও অন্তত ২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়বে বলছেন দেশের ইন্টারনেট সেবাদাতারা।

ইন্টারনেটের দাম বাড়ার বিষয়টি দায়িত্বশীল নেতৃত্বের হাতে ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন সেবাদাতারা।

আজ সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন (আইএসপিএবি) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানায়।

সম্প্রতি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ফিক্সড টেলিকম সার্ভিস প্রোভাইডারদের (এফটিএসপি) জন্য একটি গাইড লাইনের খসড়া করেছে। এ নিয়ে আপত্তি তুলেছে আইএসপিএবি।

নতুন গাইডলাইনে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ রেভিনিউ শেয়ার এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলের জন্য ১ শতাংশ দিতে হবে। এ ছাড়া এফটিএসপি অপারেটরদের ক্রয়মূল্য ১৪ শতাংশ বাড়বে।

আইএসপিএবির সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, টেলিযোগাযোগ খাত নিয়ে সরকার তার উদ্দেশ্য থেকে বেরিয়ে এসেছে এবং জনগণের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না। সরকার ভুল পথে এগিয়ে যাচ্ছে।

আমিনুল হাকিম বিদ্যমান নীতির সঙ্গে প্রস্তাবিত নীতির তুলনামূলক উপস্থাপনা তুলে ধরে বলেন, বিদ্যমান নীতিতে সরকার এই খাত রেভিনিউ শেয়ারিং, সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল এবং ভ্যাটসহ ২১ দশমিক ৪৫ শতাংশ পায় কিন্তু নতুন নীততে তা ৪০ দশমিক ২৫ শতাংশ হবে। সরকারি নীতিতে শহর ও গ্রামে বৈষম্য বাড়বে।

আমিনুল হাকিম বলেন, বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসা সরকার বৈষম্য উপহার দিচ্ছে। সরকার একদিকে ইন্টারনেটের দাম কমানোর কথা বলছে, অন্যদিকে নিজেরা দাম বাড়াচ্ছে। তিনি আরও বলেন, স্টারলিংকের জন্য সরকার লাইসেন্স ফি ধরেছে ১০ হাজার ডলার অর্থাৎ ১২ লাখ টাকা। কিন্তু দেশের আইএসপিদের জন্য তা ২৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। তাঁর প্রশ্ন, স্টারলিংককে এত সুবিধা দেওয়ার কারণ কি?

সংবাদ সম্মেলনে আইএসপিএবি বলেছে, প্রস্তাবিত খসড়া গাইডলাইনে মোবাইল অপারেটরদের ফিক্সড ওয়্যারলেস একসেস এবং লাস্ট মাইল ফাইবার সংযোগের মাধ্যমে ফিক্সড কানেক্টিভিটি দেওয়ার স্পষ্ট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যা দেশীয় এবং নিজস্ব বিনিয়োগে গড়ে ওঠা আইএসপিগুলোর জন্য চরম অসম প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করবে। এ ছাড়া বড় প্রভাব পড়বে সাধারণ গ্রাহকের ওপর।

সম্পর্কিত নিবন্ধ