কুড়িগ্রাম ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ অভিযানে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের ১৬ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সকাল থেকে আজ সকাল পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

আজ সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের মিডিয়া কর্মকর্তা ও ডিবি ইনচার্জ মো. বজলার রহমান।

গ্রেপ্তার উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিরা হলেন, চর রাজিবপুর উপজেলার কোদালকাটি ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আছমত আলী, রৌমারী সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক সহসভাপতি সাইদুর রহমান, রাজারহাটের ছিনাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বসুনিয়া, সদর উপজেলার ঘোগাদহ ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুল জব্বার খন্দকার, উলিপুর উপজেলার আওয়ামী ওলামা লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহজালাল, নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের ফুলবাড়ী উপজেলার সহসভাপতি বদরুল ইমাম, ফুলবাড়ী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য মনসুর আলী, ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বঙ্গসোনাহাট ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড শ্রমিক লীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলাম, পাথরডুবি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহজাহান আলী, নাগেশ্বরী উপজেলার বামনডাঙা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন, রায়গঞ্জ ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জুলহাস মিয়া, ছাত্রলীগের কচাকাটা কেদার ইউনিয়নের সহসভাপতি জাহিদুল ইসলাম, ভূরুঙ্গামারী উপজেলা আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক জাহেদুল ইসলাম, উলিপুর উপজেলার পান্ডুল ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শ্রী সুনীল কুমার শর্মা, চিলমারী উপজেলার ঢুষমারা অষ্টমীরচর ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি আলমগীর হোসেন আলম ও সাধারণ সম্পাদক মো.

আনোয়ার হোসেন।

কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের মিডিয়া কর্মকর্তা ও ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. বজলার রহমান জানান, ওই ২৪ ঘণ্টার অভিযানে ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করে জেলার বিভিন্ন থানার পুলিশ সদস্যেরা। জেলা পুলিশের সব থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান চলমান আছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র উপজ ল র ল ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের

ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।

এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।

এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।

সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।

আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।

শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্‌ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।

পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঢাকায় আওয়ামী লীগ ও দলটির অঙ্গসংগঠনের ১২ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার
  • ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের