আসামিদের গ্রেপ্তার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ
Published: 15th, February 2025 GMT
রৌমারীতে জমি নিয়ে সংঘর্ষে শাহাদত হোসেন নামে এক যুবক নিহতের মামলায় আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করা হয়েছে। গত শুক্রবার বিকেলে কর্তিমারী বাজার এলাকায় এ কর্মসূচি পালন করেন এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে নিহত শাহাদতের ভাতিজা রুবেল আহমেদ অভিযোগ করেন, পুলিশের সামনে আবুল হোসেনের ছেলেরা ও ভাড়াটিয়া লোকজন তাঁর চাচা শাহাদত হোসেনের ওপর আক্রমণ করে।
এ সময় এলোপাতাড়ি মারধরসহ ছুরিকাঘাত
করতে থাকে আক্রমণকারীরা। এ ঘটনায় মামলা হওয়ার পরও আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারছে না পুলিশ। দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার করে বিচারের দাবি জানান তিনি।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে যাদুরচর ইউনিয়নের ধনারচর পশ্চিম পাড়া এলাকার আবুল হোসেন ও নুর ইসলামের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি মামলাও হয়েছে। এর মধ্যে গত ১১ ফেব্রুয়ারি সকালে বিরোধপূর্ণ জমির সরিষা তুলে নিয়ে যাচ্ছিল আবুল হোসেনের পক্ষের শতাধিক লোক। সে সময় জাতীয় জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে কল দেয় নুর ইসলামের পক্ষের লোকজন। সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ঘটনাস্থলে যান এসআই খুকিন, কনস্টেবল সোহেল ও রাশেদ। এ সময় পুলিশের সামনে দু’পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে গুরুতর আহত হন শাহাদত, রিতা, শেফালী, বাছিরন, রাবেয়া, মন্টু মিয়া ও শহিদুলসহ অন্তত ১৭ জন। তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। গত ১২ ফেব্রুয়ারি সকাল ৭টার দিকে সেখানে মারা যান শাহাদত হোসেন। এ ঘটনায় ৪২ জনের নামে হত্যা মামলা করেছেন আজিজুল হক। এ মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়ে ৫০-৬০ জনকে।
এদিকে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে রৌমারী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহাদত হাসেন, এসআই খুকিন চন্দ্র, কনস্টেবল রাশেদুল ইসলাম ও সোহেল সৌরভকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
রৌমারী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মমিনুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্র কাছারি বাড়ি দুদিন পর দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র কাছারি বাড়িতে দুই দিন দর্শনার্থীদের প্রবেশ বন্ধ থাকার পর আবারও খুলে দেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে এটি দর্শনার্থীদের প্রবেশের জন্য খুলে দেওয়া হয়। এর পর থেকে আগের মতো দর্শনার্থীরা রবীন্দ্র কাছারি বাড়ি ঘুরে দেখতে পারছেন।
রবীন্দ্র কাছারি বাড়ির কাস্টোডিয়ান হাবিবুর রহমান আজ দুপুর পৌনে ১২টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার কারণে রবীন্দ্র কাছারি বাড়িতে ১১ জুন থেকে দর্শনার্থীদের প্রবেশ বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা দর্শনার্থীরা ফিরে গিয়েছেন। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তি, সাংস্কৃতিক কর্মী, সাংবাদিক ও সুধীসমাজের সঙ্গে কথা বলে এটিকে চালু করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আজ সকাল ১০টার দিকে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের উপপরিচালক (প্রশাসন) শেখ কামাল হোসেন এবং সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম উপস্থিত থেকে কাছারি বাড়ি দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, রবীন্দ্র কাছারি বাড়িতে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার ব্যাপারে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি কাজ করছে। আজ শুক্রবার বিকেলে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে। প্রতিবেদন হাতে পেলে সে অনুযায়ী দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এর আগে ৮ জুন মোটরসাইকেল পার্কিংকে কেন্দ্র করে রবীন্দ্র কাছারি বাড়িতে এক দর্শনার্থীকে আটকে মারধর করার অভিযোগ ওঠে দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী দর্শনার্থী মো. শাহনেওয়াজ কাস্টোডিয়ানসহ কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শাহজাদপুর থানায় ওই দিন রাতেই থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।
এদিকে এ ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে ‘শাহজাদপুরের সর্বস্তরের জনগণ’ ব্যানারে মঙ্গলবার দুপুরে প্রেসক্লাব চত্বরে মানববন্ধন করা হয়। মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল শাহজাদপুরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে রবীন্দ্র কাছারি বাড়িতে ঢুকে পড়ে। এ সময় বিক্ষুব্ধ লোকজন হামলা চালিয়ে কাছারি বাড়ির কাস্টোডিয়ানের কার্যালয়সহ মিলনায়তনের দরজা-জানালা ও আসবাব ভাঙচুর করেন। এ সময় বেশ কয়েকজন কর্মচারীকে মারধর করা হয়। খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুশফিকুর রহমান ও থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এমন অবস্থায় বুধবার সকাল থেকে কাছারি বাড়িতে দর্শনার্থী প্রবেশ বন্ধ করা হয়েছিল।
হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে কাছারি বাড়ির কাস্টোডিয়ান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর বুধবার দুপুরের দিকে কাছারি বাড়ির কাস্টোডিয়ান হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে ১২ জনের নামে থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় ৫০-৬০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। এ মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।