ট্রাম্পের কড়া সমালোচনায় সংবাদ সংস্থা এপি, ‘কট্টর বামপন্থি সংগঠন’ বলে আখ্যা
Published: 22nd, February 2025 GMT
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)-কে একটি 'কট্টর বামপন্থি সংগঠন' বলে অভিহিত করেছেন। শুক্রবার এএফপি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে এপির সম্পর্কের টানাপড়েন বাড়তে থাকে। বিশেষ করে মেক্সিকো উপসাগরের নাম পরিবর্তন করে 'গালফ অব আমেরিকা' রাখার সিদ্ধান্ত কেন্দ্র করে এই বিরোধ শুরু হয়।
ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম মাসেই নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে মেক্সিকো উপসাগরের নাম পরিবর্তন করে ‘গালফ অব আমেরিকা’ রাখার নির্দেশ দেন ট্রাম্প। তবে এপি তাদের প্রতিবেদনে উপসাগরের প্রচলিত নাম 'গালফ অব মেক্সিকো' ব্যবহার অব্যাহত রাখে। এতে অসন্তুষ্ট হয়ে হোয়াইট হাউস এপির সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করে।
হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আইন মেনেই নাম পরিবর্তন করা হয়েছে এবং এপিকে এই পরিবর্তন মেনে নিতে হবে।
বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে রিপাবলিকান গভর্নরদের এক অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেন, এপি নামের একটি সংবাদ সংস্থার সঙ্গে আমাদের লড়তে হচ্ছে। তারা একটি কট্টর বামপন্থি, সংগঠন সবার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে তারা এবং এটা স্বীকার করতে চাইছে না যে গালফ অব মেক্সিকো বর্তমানে গালফ অব আমেরিকা নামে পরিচিত।
তিনি আরও বলেন, আপাতত আমরা তাদেরকে কোনো সংবাদ সম্মেলনে যোগ দিতে দিচ্ছি না। আমি নিশ্চিত, তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে এবং হয়তো তারা সেটাতে জিতেও যাবে। কিন্তু এতে কিছু আসে যায় না। এটি এমন একটি বিষয়, যেটা আমাদেরকে প্রভাবিত করেছে।
তবে ট্রাম্প এপির বিরুদ্ধে সম্ভাব্য আইনি ব্যবস্থা সম্পর্কে কোনো বিস্তারিত তথ্য দেননি।
১৮০ বছর পুরনো বার্তা সংস্থা এপি মার্কিন সাংবাদিকতার অন্যতম প্রধান ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হয়। অসংখ্য সংবাদমাধ্যম এপির প্রতিবেদন ব্যবহার করে।
এদিকে এপি জানিয়েছে, তাদের সম্পাদকীয় নীতিমালা অনুযায়ী, কোনো ভৌগোলিক অবস্থান উল্লেখের ক্ষেত্রে সেটির প্রচলিত ও সর্বাধিক স্বীকৃত নাম ব্যবহার করা হয়। ট্রাম্পের নির্দেশ শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে কার্যকর হলেও আন্তর্জাতিকভাবে এখনো ওই উপসাগর 'গালফ অব মেক্সিকো' নামেই পরিচিত।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব যবহ র
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?