ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে ‘নুন খেয়ে’ পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিভ্রান্তির ধূম্রজাল সৃষ্টি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেন, এই হত্যাকাণ্ডকে নতুন করে এত বছর পর প্রশ্নবিদ্ধ করার অর্থ হলো এই বিচারপ্রক্রিয়াকে চাপা দিতে চাওয়া হচ্ছে।

‘গণহত্যার শাসনামল: ২৮ অক্টোবর ২০০৬–৫ আগস্ট ২০২৪’ শীর্ষক সমাবেশে মিয়া গোলাম পরওয়ার এসব কথা বলেন। আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এই সমাবেশ আয়োজন করে নেক্সাস ডিফেন্স অ্যান্ড জাস্টিস নামের একটি সংগঠন। গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের দাবিতে এই সমাবেশ করা হয়।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আজকে বিভিন্ন মহল থেকে হাসিনাকে রক্ষা করার জন্য, সেই খুনি মাস্টারমাইন্ডকে রাজনীতিতে অ্যাডজাস্ট করার জন্য, নিজের পদ–পদবিকে রক্ষা করার জন্য, অথবা কখনো তাঁর আমলে নুন খেয়েছেন, তাঁর গুণ গেয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য তাঁকে আড়াল করে পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে আপনারা যেভাবে বিভ্রান্তির ধূম্রজাল সৃষ্টি করেছেন, আমরা আজকে এই সভামঞ্চ থেকে সেই কর্তৃপক্ষের প্রতি তীব্র নিন্দা জানাই।’

শেখ হাসিনার শাসনামলে সাড়ে সাত বছর কারাগারে ছিলেন, সে কথা উল্লেখ করে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘হাজার হাজর বিডিআরের কাছে গল্প শুনেছি। কীভাবে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে, লাশগুলো কীভাবে কেটে জলে ভাসিয়ে দিয়েছে। তাঁরা হিন্দিতে কথা শুনেছে। বাংলাদেশি মানুষের মতো দেখা যায়নি। মুখোশ পরে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। ফলে আজ আপনি বলবেন, এই হত্যাকাণ্ড কারা করেছে, এটাকে নতুন করে এত বছর পর প্রশ্নবিদ্ধ করার অর্থ হলো এই বিচারপ্রক্রিয়াকে আপনারা চাপা দিতে চাচ্ছেন।’

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে এই হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি), পিলখানা ও সেনাহত্যার বিষয়ে তদন্তের জন্য সরকার কমিশন গঠন করেছে। এর পেছনে কারা ছিল, এই কমিশনকে অবিলম্বে এই সরকারের আমলেই জাতির সামনে তথ্য দিতে হবে।

সভায় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমির আহমদ আলী কাসেমী বলেন, গত ১৬ বছর এই দেশে দেশপ্রেমী কোনো সরকার ছিল না। ভারতের তাঁবেদার এবং স্বৈরাচার মনোভাব নিয়ে কর্তৃত্ববাদী একটি শাসন প্রতিষ্ঠিত ছিল। যেহেতু জনসমর্থন ছিল না, সে জন্য জোর করে ক্ষমতায় থাকার জন্য তারা বিভিন্ন সময়ে গণহত্যা চালিয়েছে। বিডিআর হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বরের হত্যাকাণ্ড এবং বিরোধী মত দমন করার জন্য সময়–সময় রাজনৈতিক ও দেশপ্রেমী মানুষকে গুম করা এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে তাঁদের হয়রানি করা ছিল সেই সরকারের হাতিয়ার।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন নেক্সাস ডিফেন্স অ্যান্ড জাস্টিসের প্রধান নির্বাহী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.

) মোহাম্মদ হাসান নাসির। তিনি বলেন, স্বৈরাচারী শাসন শুরু হয়েছিল বিডিআর হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে।

মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এই সমাবেশ করে নেক্সাস ডিফেন্স অ্যান্ড জাস্টিস নামের একটি সংগঠন। ঢাকা, ২৫ ফেব্রুয়ারি

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ ল ম পরওয় র ব ড আর সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ফিলিস্তিনি জনগণকে গণহত্যা থেকে রক্ষা করতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার আহ্বান

ফিলিস্তিনি জনগণকে গণহত্যা ও নিষ্ঠুরতম বর্বরতা থেকে রক্ষা করতে অবিলম্বে পরিপূর্ণ যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। 

আজ বুধবার ফিলিস্তিন সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। 

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ইসরায়েল এ পর্যন্ত ৫৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে গণহত্যা অব্যাহত রেখেছে। তিনি ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দায়ী সকলকে বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানান।

আরো পড়ুন:

ইসরায়েলি মানবাধিকার সংগঠনই বলছে, ‘গাজায় গণহত্যা চলছে’

ফিলিস্তিন সংকট সমাধান: সবার দৃষ্টি জাতিসংঘের বিশ্ব সম্মেলনে

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতি বাংলাদেশের অব্যাহত সমর্থন পুর্নব্যক্ত করে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি স্থাপনের একমাত্র পথ হিসেবে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের লক্ষ্যে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়নে কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান। 

গাজা পুনর্গঠনে আরব পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘের নেতৃত্বে গাজা পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে প্রস্তত রয়েছে। তিনি গাজায় জাতিসংঘের ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম বাধা দেয়ার যেকোনো প্রচেষ্টা সর্বাত্বকভাবে প্রতিরোধ করার আহ্বান জানান।

২০২৩ সালের অক্টোবরের পর হতে গাজায় অব্যাহত ইসরায়েলি আক্রমণের প্রেক্ষাপটে ফিলিস্তিনি জনগণের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতি একাত্মতা প্রকাশ এবং একটি স্থায়ী সমাধানের পথ সুগম করতে জাতিসংঘের সদস্যদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করার জন্য ফ্রান্স ও সৌদি আরবের যৌথ উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী ‘জাতিসংঘ হাইলেভেল ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স ফর দ্য পিসফুল সেটেলমেন্ট অব দ্য কোয়েশ্চেন অব প্যালেস্টাইন অ্যান্ড দ্য ইমপ্লিমেন্টেশন অব দ্য টু-স্টেট সল্যুশন’ শীর্ষক মন্ত্রী পর্যায়ের এই সম্মেলন আয়োজন করা হয়।

এতে বাংলাদেশসহ ১১৮টি দেশের প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করছে।

ঢাকা/হাসান/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফিলিস্তিনি জনগণকে গণহত্যা থেকে রক্ষায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টার আহ্বান
  • ফিলিস্তিনি জনগণকে গণহত্যা থেকে রক্ষা করতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার আহ্বান
  • গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৬০ হাজার ছাড়াল
  • গণহত্যার বিচারের পর পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দাবি রেজাউল করীমের