বগুড়ায় রোজা শুরুর আগেই সবজির বাজার চড়া, লেবুর হালি ৬০ টাকা
Published: 1st, March 2025 GMT
রোজা শুরুর আগেই উৎপাদন এলাকা বগুড়ায় পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। বগুড়ার মহাস্থান হাটে পাইকারি পর্যায়ে দুই দিন আগে যে শসার দাম ২০ টাকা ছিল, আজ তা ৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ১২ কিলোমিটার দূরে বগুড়া শহরে খুচরা পর্যায়ে সেই শসা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। ৩০ টাকা হালির লেবু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়।
একইভাবে পাইকারি পর্যায়ে ৩০ টাকার বেগুন ও করলা ৪৫ টাকা বিক্রি হয়েছে, খুচরা বাজারে যা দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া এক দিনের ব্যবধানে পাইকারি পর্যায়ে দাম বেড়েছে কাঁচা মরিচ, আলু, টমেটোসহ অন্য সবজির।
শনিবার পাইকারি পর্যায়ে এক কেজি কাঁচা মরিচ ৩০ টাকা, টমেটো ১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। রোজা শুরু হতে না হতেই ছোলা বুট, তরমুজ ও খেজুরের দামও বেড়েছে। শনিবার পাইকারি পর্যায়ে প্রতি কেজি তরমুজ ৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। খুচরা পর্যায়ে তরমুজ বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে।
আরও পড়ুনরংপুরে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ৩৮ টাকা বেশি দামে বিক্রি১২ ডিসেম্বর ২০২৪শনিবার সকালে দেশের অন্যতম বৃহৎ সবজির পাইকারি মোকাম মহাস্থান হাট ঘুরে দেখা যায়, শীত বিদায় নিলেও হাট এখনো সবজিতে ভরপুর। মুলা, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, শিম, শসা, লেবু, গাজর, করলা, পটোল, টমেটো, পালংশাক, লালশাক, পুঁইশাক, কাঁচা মরিচ, আলুসহ বিভিন্ন সবজির কোনো কমতি নেই। ক্রেতা-বিক্রেতা, আড়তদার ও পাইকারদের হাঁকডাকে সরগরম হাট। কৃষকের এক হাত ঘুরে কিছু সবজি যাচ্ছে স্থানীয় খুচরা বাজারে। বেশির ভাগ সবজি পাইকারি ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বড় মোকামে যাচ্ছে।
মোকামে আসা কৃষক ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানালেন, প্রতি কেজি দেশি পাকড়ি আলু ২০ টাকা, ডায়মন্ড আলু ২০, কাঁচা মরিচ ২৫, করলা ৪৫, বেগুন ৮০, টমেটো ১০, শসা ৪০ ও মাঝারি আকারের প্রতিটি লেবু ১০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। গোল বেগুন বিক্রি হয়েছে ৪৫ টাকা দরে। অথচ এক সপ্তাহ আগেও প্রতি কেজি পাকড়ি আলু ২৫, ডায়মন্ড আলু ২২, কাঁচা মরিচ ৩০, টমেটো ২০ টাকা দরে বিক্রি হয়। রোজায় সবচেয়ে চাহিদা থাকা শসা এক সপ্তাহ আগে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি ২৫, কাঁচা মরিচ ২০ ও প্রতিটি লেবু ৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
আরও পড়ুনরোজা শুরুর আগে আবার দাম বাড়ল ০১ এপ্রিল ২০২২মহাস্থান হাটে ১২ মণ বেগুন বিক্রি করতে এসেছিলেন বগুড়া সদর উপজেলার মোকামতলা এলাকার কৃষক নুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, এক সপ্তাহ আগেও হাটে প্রতি মণ বেগুন ৯০০ টাকায় বিক্রি করেছেন। আজ সেই বেগুন বিক্রি করেছেন ১ হাজার ৯০০ টাকা মণ দরে।
মহাস্থান হাটের আড়তদার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, রমজান মাস শুরু হতে না হতেই শসা, বেগুন, লেবু, কাঁচা মরিচ, গোল বেগুনসহ বেশ কিছু সবজির দাম পাইকারি পর্যায়ে প্রায় দ্বিগুণ দাম বেড়েছে।
পাইকারি বাজারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে খুচরা পর্যায়েও সবজির দাম বেড়েছে। বগুড়া শহরের ফতেহ আলী বাজারে এক কেজি শসা খুচরা পর্যায়ে ৬০ টাকা, লেবু প্রতিটি ১৫ টাকা, কাঁচামরিচ প্রতি কেজি ৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। ধনেপাতার কেজিও ২০০ টাকা ছাড়িয়েছে। রোজাদারদের ইফতারির পদ বেগুনি তৈরিতে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় প্রতি কেজি গোল বেগুন বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে।
ফতেহ আলী বাজারের খুচরা সবজি ব্যবসায়ী মতিউর রহমান বলেন, রোজার এক দিন আগে প্রতি কেজি শসা ৫০, কাঁচা মরিচ ৬০, লেবু প্রতিটি ১৫ টাকা ও গোল বেগুন ৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। গত বছর রোজার এক দিন আগে প্রতি কেজি শসা ৪০, কাঁচা মরিচ ৬০, লেবু প্রতিটি ৮ টাকা ও গোল বেগুন ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।
দাম বেড়েছে রোজাদারদের ইফতারির পদ ছোলা বুট ও খেজুরের। এবার প্রতি কেজি ছোলা বুট ১১০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। গত বছর প্রতি কেজি ছোলা বুট ৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। এ ছাড়া দাম বেড়েছে আমদানি করা সব ধরনের খেজুরের। শহরের সাতমাথা ফলপট্টির ব্যবসায়ী সেকেন্দার আলী বলেন, খুচরা পর্যায়ে এবার এক কেজি মেরজুল খেজুর ১ হাজার ৪০০, মরিয়ম ১ হাজার ১৫০, দাবাস ৪২০, লুলু ৪৮০, মাশকুল ৮০০, তিউনিসিয়ার ডাল খেজুর ৬০০, আজোয়া ১ হাজার ও ইরাকি খেজুর প্রতি কেজি ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবস য় ৬০ ট ক পর য য় সবজ র
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ
গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।
ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে।
আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন।
আরো পড়ুন:
ভারতের ৬ প্রতিষ্ঠানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা
পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্নের ঘোষণা ট্রাম্পের
ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন।
অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।
ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”
প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।
মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”
তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”
মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলি অভিযান সমর্থন করেছিলেন।
গ্যালাপের মতে, মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন দিয়েছেন।
ঢাকা/ফিরোজ