অননুমোদিত আর্থিক ক্ষুদ্র ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠান, সমবায় সমিতি ও ব্যক্তি পর্যায়ে চড়া সুদে লেনদেনসহ দাদন ব্যবসা প্রতিরোধ ও মনিটরিং প্রশ্নে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। রুলে চড়া সুদ নেওয়া অনিয়মিত সুদের কারবারি প্রতিরোধে এবং অননুমোদিত প্রাইভেট আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ক্ষুদ্র ঋণ প্রতিষ্ঠান, সমবায় সমিতি, দেশজুড়ে দাদন ব্যবসার নামে ব্যক্তি পর্যায়ে লাইসেন্স ছাড়া আর্থিক কর্মকাণ্ড পরিচালনাকারীদের মনিটরিং করতে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির চেয়ারম্যানকে দেওয়া আবেদন নিষ্পত্তিতে নিষ্ক্রিয়তা বা ব্যর্থতা কেন বেআইনি হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

বিচারপতি মো.

আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি কাজী ওয়ালিউল ইসলাম সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ রুল জারি করেন। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে এই বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। 

খুলনার সোনাডাঙ্গার বাসিন্দা সচিন্দ্র নাথ শীল দাদন ব্যবস্থা বন্ধসহ এ বিষয়ে রিটটি দায়ের করেন। রিটে অর্থ সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর মাইক্রোক্রেডিট অথরিটির চেয়ারম্যান, পুলিশের মহাপরিদর্শক, খুলনা মহানগর পুলিশের কমিশনার, খুলনার জেলা প্রশাসক, সোনাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সোনাডাঙ্গা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বিবাদী করা হয়েছে। 

রিটে বলা হয়, রিটকারী সচিন্দ্র নাথ শীলের স্ত্রী ২০১৩-১৪ সালের দিকে এক ব্যক্তির কাছে দুই লাখ টাকা ঋণ নেন। প্রতিমাসে সেই টাকার চড়া সুদ দিতে হতো। এক পর্যায়ে সেই সুদের কারবারিদের মামলার ফাঁদেও পড়েন। এ অবস্থায় ২০২৩ সালের ২ মে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির চেয়ারম্যান বরাবরে ‘বেআইনি চড়া সুদের ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে প্রতারণা ও হয়রানিমূলক মামলা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আবেদন’ দেন। কিন্তু সেটি নিষ্পত্তি না হওয়ায় তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন।   

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ফরহাদ উদ্দিন আহমেদ ভূঁইয়া। তিনি জানান, আদালত রুল জারির পাশাপাশি দুই মাসের মধ্যে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির চেয়ারম্যানের কাছে দেওয়া রিটকারীর দেওয়া আবেদন নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অথর ট র চ

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ