রাজশাহীতে এক নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। আজ বুধবার ভোরে তাঁকে নওগাঁর মান্দা থেকে আটক করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।

আটক ব্যক্তির নাম মাসুদ রানা। তাঁর বাড়ি রাজশাহী নগরের কেশবপুর এলাকায়। তিনি কাপড়ের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী ফেসবুক আইডিতে ওই ব্যক্তির একটি ছবি ও ১৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিও পোস্ট করে ঘটনার বর্ণনা দেন। তখন ফেসবুকে অনেকেই তাঁকে আটক করার দাবি জানান। গতকাল রাতে স্থানীয় ছাত্র-জনতা মাসুদ রানার বাড়িতে ভাঙচুর চালান।

এ সম্পর্কে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ওই ব্যক্তিকে নওগাঁ থেকে সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সহযোগিতায় ডিবি পুলিশ আটক করেছে। ওই শিক্ষার্থী ফেসবুকে ঘটনাটি জানানোর পর থেকেই পুলিশ দায়িত্ব মনে করে অভিযানে নামে। আজ এই ব্যাপারে অভিযোগ পাওয়ার পর ওই ব্যক্তিকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।

ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আজ (গতকাল) পরীক্ষা দিয়ে ইফতারি কিনে বাসায় আসার সময় বর্ণালীর মোড়ে এই জানোয়ারের বাচ্চা আমার সামনে বসে। হাতে কাপড়ের বড় বস্তা ছিল। বারবার আমার পায়ে টাচ হচ্ছিল। ভাবলাম এত বড় ব্যাগ, তাই হয়তো সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু কিছুক্ষণ পর আরও বেশি সমস্যা হওয়ার পর পা সরাতে বলি। তারপর সে নিজের গোপনাঙ্গ নিয়ে অশোভন আচরণ করে। যখন বুঝতে পারে ভিডিও করতেছি, তখনই হাত সরায় নেয়।’

এ ব্যাপারে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে গতকাল রাতে তিনি ফেসবুকে আরেকটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘যাঁরা এই অবধি আমার খোঁজখবর নিয়েছেন, আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞ। আমি সেইফলি বাসায় আসছি। যাঁরা জিজ্ঞাসা করতেছেন আমি কিছু করতে পেরেছি কি না, তাঁদের জন্য বলি “না”, আমি তেমন কিছু করতে পারিনি! যাঁরা আমাকে চিনেন, তাঁরা জানেন, আমি ভিতু অনেক। অল্পতে ভয় পাই। ওই ঘটনা ঘটার পর আমার হাত–পা কাঁপছিল। গা ঘিন ঘিন করছিল। দুটি গালি দেওয়া ছাড়া কিছু করতে পারিনি। এই যে সঠিক জায়গায় সঠিক প্রতিবাদ না করতে পারার কষ্ট আমি আজীবন ধরে পেয়ে আসছি। ওই লোকের খোঁজ পাওয়া গেছে। যত দ্রুত সম্ভব আইনি পদক্ষেপ নিব!’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ওই শ ক ষ র থ ফ সব ক গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের

ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।

এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।

এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।

সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।

আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।

শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্‌ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।

পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার অতি আগ্রহের কারণ কী, প্রশ্ন টিআইবির
  • মুসলিম পরিবারে শিশুর নিরাপত্তা
  • পুরোপুরি বিলুপ্তির পর উগান্ডায় আবার ফিরল গন্ডার
  • ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের