ঈদের পর বাজারে হাঁকডাক নেই, কমেছে শাক–সবজির দাম
Published: 2nd, April 2025 GMT
রাজধানীর বাজারগুলোয় ক্রেতা কম। নেই বললেই চলে। কারণ, ঢাকার জনসংখ্যার একটি বিশাল অংশ ঈদ উপলক্ষে ঢাকা ছেড়ে গেছে। এমন হাঁকডাকহীন বাজারে কমেছে শাকসবজির দাম। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে লেবু ও শসা। মাংসের বাজারে মুরগির দাম কেজিপ্রতি ১০ থেকে ৩০ টাকা কমলেও আগের দামে বিক্রি হচ্ছে গরু ও খাসির মাংস। ঈদের পরদিন সব বাজারের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ ছিল। তবে আজ থেকে খুলতে শুরু করেছে দোকানপাট।
সরেজমিনে রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও হাতিরপুল বাজার ঘুরেও দেখা যায়, ক্রেতার আনাগোনা কম। তাই অধিকাংশ বিক্রেতাও অলস সময় পার করছেন। বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাজারে ক্রেতার চাহিদা কম। তাই বেশির ভাগ পণ্যের সরবরাহ কিছুটা কম।
কারওয়ান বাজারের কাঁচাবাজারের বিক্রেতা আবুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘রোজায় পটোল বিক্রি করেছি ১০০ টাকায়, এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। ঢ্যাঁড়স ও বরবটির ঈদের আগে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকায়। এ ছাড়া কাঁচা মরিচ ৮০ থেকে ১২০ টাকা, শিম ৫০ থেকে ৬০ টাকা, টমেটো ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা ও পেঁপে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি পিছ লাউয়ের দাম ৬০ থেকে ৭০ টাকা।’
রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে আকারভেদে প্রতি হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা এবং প্রতি কেজি শসা ৬০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। ঈদের আগে রোজার সময় লেবুর দাম হালিতে ১০ টাকা ও শসার দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেশি ছিল।
কারওয়ান বাজারে কথা হলো ব্যবসায়ী মোহাম্মদ নাছিরের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বাজারে তেমন কিছুর বাড়তি দাম চোখে পড়েনি। সব আগের মতোই আছে। তবে সবজির দাম কিছুটা কমেছে। আমি এক কেজি বরবটি কিনেছি ৩০ টাকায়, আর এক কেজি ঢ্যাঁড়স কিনেছি ৪০ টাকা কেজি দরে।’
তবে টমেটোর দাম কেজিপ্রতি বেড়েছে ২০ টাকা। হাতিরপুলের কাঁচাবাজার সবজি বিক্রেতা আবদুল বাসির বলেন, ‘তিন দিন আগেও টমেটো ৩০ টাকা কেজিপ্রতি বিক্রি হলেও এখন বিক্রি করছি ৫০ থেকে ৬০ টাকায়।’
সরেজমিন দেখা গেছে, ঈদের পরদিন সব বাজারেই অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ ছিল। তবে আজ থেকে খুলতে শুরু করেছে দোকানপাট। ক্রেতাদের বেশির ভাগই জানান, তাঁরা খুব জরুরি প্রয়োজনে বাজারে এসেছেন। অনেকে ঈদের ছুটিতে আত্মীয়স্বজনের বাসায় দাওয়াত করে খাওয়ান। তাই সেই উপলক্ষে অনেকে বাজার করতে আসছেন।
এখন তরমুজের মৌসুম। কিন্তু ঈদের তৃতীয় দিনের বাজার তরমুজের বেচাকেনাও থমকে গেছে। হাতিরপুল বাজারের তরমুজ বিক্রেতা আলিফ মুহাম্মদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘রোজার সময় প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০টি তরমুজ বিক্রি করেছি। তবে আজকে সকাল থেকে এখনো একটিও বিক্রি করতে পারিনি। পচনশীল পণ্যের বিক্রি করার চেষ্টায় দোকান খুলে রাখতে হচ্ছে।’
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে এক সবজি বিক্রেতার সাথে ক্রেতা দামাদামি করছেন.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: তরম জ
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে ঢাকাগামী টিকিটে বাড়তি ভাড়া আদায়, ৩ কাউন্টারকে জরিমানা
রাজশাহীতে ঈদফেরত যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে তিন বাস কাউন্টারকে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় উপস্থিত যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা অতিরিক্ত অর্থ ফেরত দেওয়া হয়।
শুক্রবার দুপুরে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় রাজশাহী বিআরটিএর পক্ষ থেকে এই অভিযান চালানো হয়। বিআরটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আলপনা ইয়াসমিন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
অভিযানে দেশ ট্রাভেলস, গ্রামীণ ট্রাভেলস ও ন্যাশনাল ট্রাভেলসের প্রত্যেক কাউন্টারকে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।
জানা গেছে, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি কয়েকজন যাত্রী গোপনে সেনাবাহিনীকে অভিযোগ করেন। পরে কাউন্টার থেকে আদায় করা অতিরিক্ত টাকা তাদের ফেরত দেওয়া হয়েছে।
বিআরটিএর ম্যাজিস্ট্রেট আলপনা ইয়াসমিন বলেন, কথা ছিল ঈদ উপলক্ষে পরিবহন মালিক সমিতি নতুন করে ভাড়া নির্ধারণ করবে। ভাড়া ঈদের আগে ও পরে একইরকম হওয়ার কথা। কিন্তু এই তিনটি গাড়ির কাউন্টারের এসি গাড়ির ভাড়া অতিরিক্ত আদায় করা হয়েছে। ঈদের আগে তাদের এসি গাড়ির ভাড়া ছিল ১ হাজার ১০০ টাকা। কিন্তু ঈদের পরে তা বাড়িয়ে ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা নেওয়া হচ্ছিল। এ অপরাধের জন্য আইনে সর্বোচ্চ জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে ১০ হাজার টাকা। কাউন্টারগুলোকে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
এর আগে গত বুধবার হিমাচল ট্রাভেলস ও হানিফ ট্রাভেলস নন এসি ভাড়া বেশি আদায় করেছিল। হানিফ ট্রাভেলসের চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকার ভাড়া ছিল ৮৩০ টাকা। কিন্তু তারা রাজশাহী থেকেই ওই পরিমাণ ভাড়া আদায় করছিল। হিমাচল ট্রাভেলসের কোনো কাউন্টার ছিল না। তারা অন্য বাসের সঙ্গে মিলে যাত্রী পরিবহন করছিল। এই দুটি বাসকে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।
শুক্রবার অতিরিক্ত ভাড়া আদায় সম্পর্কে জানতে চাইলে দেশ ট্রাভেলসের ব্যবস্থাপক মাসুদ রানা বলেন, সারা বছর ডিসকাউন্ট দিয়ে ১ হাজার ১০০ টাকায় যাত্রী পরিবহন করেন। ঈদ উপলক্ষে তারা সেই ডিসকাউন্ট উঠিয়ে দিয়েছেন। সেই কারণেই ভাড়া ১ হাজার ৭০০ টাকা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ম্যাজিস্ট্রেট আলপনা ইয়াসমিন বলেন, তারা মিটিংয়ের সময় এই কথাটা বলেননি। তাই তাদের জরিমানা করা হয়েছে।