মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের বেশ কিছু উদ্যোগ নিতে হবে। নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের অবস্থান শক্তিশালী করতে এই অবস্থান নেওয়া জরুরি।

প্রথমত, জরুরি ভিত্তিতে কূটনৈতিক পর্যায়ে বিষয়টি তুলতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উচিত হবে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউএসটিআরের সঙ্গে আলোচনা করে যুক্তরাষ্ট্রগামী বাংলাদেশি পণ্যের শুল্ক শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনা। অবিলম্বে এই কাজ শুরু করতে হবে।

দ্বিতীয়ত, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দীর্ঘ মেয়াদে বাণিজ্য চুক্তি ও কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। যেমন এলএনজি আমদানিতে দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের পাঁচ বছর মেয়াদি চুক্তি করা উচিত।

তৃতীয়ত, যুক্তরাষ্ট্র থেকে সুতা আমদানিতে জলবায়ু-নিয়ন্ত্রিত বন্ডেড ওয়্যারহাউস প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এ বিষয়টি আমাদের জোরেশোরে তুলে ধরতে হবে যে মার্কিন সুতা আমদানিতে বাংলাদেশ শুল্ক আরোপ করে না।

চতুর্থত, যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্য আমদানি বাড়ানোর সুযোগ খুঁজতে হবে; যেমন বিভিন্ন ধরনের শস্য, সয়াবিন ও অন্যান্য পণ্য। বাণিজ্যে ভারসাম্য আনার ক্ষেত্রে আমাদের অঙ্গীকার বোঝাতে এসব পণ্য আমদানি করা যেতে পারে।

পঞ্চমত, অনন্ত গ্রুপসহ অন্যান্য বাংলাদেশি শিল্পগোষ্ঠী যুক্তরাষ্ট্রে কারখানা স্থাপন করে অন্তত ২০ শতাংশ মূল্য সংযোজন করতে চায়, এ ধরনের ইতিবাচক খবর প্রচার করতে হবে।

বিষয়টি হলো, যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতারা শঙ্কিত। এখন ভারত ও পাকিস্তানের মতো দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বজায় রাখতে তারা বাংলাদেশের সরবরাহকারীদের দাম কমানোর চাপ দিতে পারে। এই দেশগুলোতে এফওবি মূল্যের ওপর ১১ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়; এটা বড় সুবিধা। ভারত, পাকিস্তানসহ মিসর, কেনিয়া ও তুরস্ক আগামী বছরের মধ্যে সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বড় ধরনের বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে।

এ মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানিকারকদের জন্য বাংলাদেশ সরকার কী করতে পারে, তার জন্য কিছু নীতিগত পরামর্শ

১.

পরিষেবার মূল্য ও ব্যাংক সুদ হ্রাস: উৎপাদন প্রক্রিয়া আরও সাশ্রয়ী করতে এবং প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ধরে রাখতে পরিষেবা মূল্য ও ব্যাংক সুদ হ্রাস করা যেতে পারে।

২. মুদ্রার অবমূল্যায়ন: বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ধরে রাখতে মুদ্রার অবমূল্যায়ন করা যেতে পারে, যদিও বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক আছে।

৩. বেতন ও চলতি পুঁজির জন্য ঋণ: পরিচালনাগত স্থিতিশীলতা রক্ষায় স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়া যেতে পারে।

৪. এমএমএফ সরবরাহ ব্যবস্থায় উৎসাহ দেওয়া: কৃত্রিম সুতা দিয়ে পোশাক তৈরির অবকাঠামো নির্মাণে প্রণোদনা দেওয়া। নতুন অবকাঠামোর ওপর বর্ধিত হারে পরিষেবা মাশুল প্রত্যাহার; এ ধরনের নীতি উদ্যোগের রাশ টেনে ধরে।

শরিফ জহির, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, অনন্ত গ্রুপ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ষয়ট আমদ ন ধরন র

এছাড়াও পড়ুন:

বিদ্যুৎ না থাকায় ডিইপিজেডে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ

ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ডিইপিজেড) আজ সোমবার দুপুর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এ কারণে দুপুরের পর ডিইপিজেডের সব কারখানায় শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। ডিইপিজেডের জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড পাওয়ারের বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় এ সংকট তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. শরীফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ ইউনাইটেড পাওয়ারের ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রকল্পটিতে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এতে তারা উৎপাদন করতে না পারায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না। ফলে ডিইপিজেডে প্রায় ৯০টি কারখানার এক লাখের মতো শ্রমিককে ছুটি দেওয়া হয়।

বিদ্যুতের সংযোগ না থাকায় বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছে উল্লেখ করে মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার যদি এটি অব্যাহত থাকে, তবে সংকট আরও বাড়বে। শ্রমিকেরা কাজ না করতে পেরে বিক্ষুব্ধ হলে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠবে। কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়া এ ধরনের ঘটনায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘তিতাস বলছে, ইউনাইটেড পাওয়ারের কাছে বিল বকেয়া রয়েছে। তারা বকেয়া পরিশোধ করেনি। এ ব্যাপারে আদালতে দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলছে। কিন্তু আমাদের কথা হচ্ছে, বেপজাকে কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ না দিয়ে হঠাৎ করে এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন। এ ধরনের পদক্ষেপের আগে ডিইপিজেডের গুরুত্ব বিবেচনা করে আলোচনার মধ্য দিয়ে বিষয়টির সমাধান করা উচিত ছিল।’

এ বিষয়ে ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্টের ব্যবস্থাপক মো. মমতাজ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্যাসের কোনো প্রেশার নেই। প্রেশার শূন্য। কিন্তু কেন তিতাস কর্তৃপক্ষ এমনটি করল, সে ব্যাপারে এখানকার (আশুলিয়া অঞ্চলের) তিতাসের লোকজন কিছু বলতে পারেননি। আমরা নিজেরাও বিষয়টি নিয়ে জানি না। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে, বকেয়া নিয়ে কোনো ধরনের মামলা নেই। তিতাস কেন গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিল, সেটি জানা নেই।’

জানতে চাইলে তিতাসের আশুলিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু ছালেহ মুহাম্মদ খাদেমুদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, গ্যাসের বিল বকেয়া থাকায় গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এটি সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের সিদ্ধান্ত। দুপুরের দিকে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আদানির সঙ্গে চুক্তি ক‌রে শুল্ক ফাঁকি
  • শিল্প খাতের উৎপাদন যেন ব্যাহত না হয়
  • কারাগারে গাঁজা সরবরাহ করতে গিয়ে নিজেই কারাগারে
  • ‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা কী
  • ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ নেই, ৯০ কারখানায় ছুটি
  • মঙ্গলবার ৭ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব জায়গায়
  • পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে আরও ২৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কিনছে ভারত
  • পর্তুগাল ও স্পেনে নজিরবিহীন বিদ্যুৎ বিপর্যয়, পর্যুদস্তু জনজীবন
  • হাসপাতালে ডায়রিয়ার প্রকোপ শয্যা ও স্যালাইন সংকট
  • বিদ্যুৎ না থাকায় ডিইপিজেডে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ