সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা ও নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেছেন, নববর্ষের এবারের শোভাযাত্রার থিম হবে কৃষক, যা বাংলাদেশের কৃষি ও কৃষকদের প্রতি সম্মান জানাতে চিহ্নিত করা হবে। এটি কৃষকের অবদান ও তাদের সংগ্রামকে স্বীকৃতি প্রদান করবে।

এবার বাংলা নববর্ষে বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বের জন্য শান্তি কামনা করে উৎসব উদযাপন হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।  বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা সেমিনার কক্ষে চৈত্র সংক্রান্তি ও নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপন উপলক্ষ্যে বিস্তারিত কর্মসূচি নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, 'বিশ্বের একটা দেশ ফিলিস্তিন। সেখানে যেভাবে গণহত্যা চলছে, এই পরিস্থিতিতে শুধু দেশের জন্য শুভকামনা করে নববর্ষ উদযাপন করতে পারি না। তাই আমরা সারাবিশ্বের শান্তি কামনা করে এবারের নববর্ষ বা বৈশাখের অনুষ্ঠান উদযাপন করব।'

ফারুকী বলেন, এবারের শোভাযাত্রায় ২০০ জন বাংলাদেশ ব্যান্ড তারকা উপস্থিত থাকবেন। সেখানে 'ফ্রম দ্য রিভার টু দ্য সি' গান গেয়ে শোভাযাত্রা শুরু হবে। আশা করছি ৫০০ মিউজিশিয়ান এতে যোগ দেবেন।

তিনি বলেন, 'সারাদেশে নানাবয়সী মিউজিশিয়ানরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। তারা তাদের গিটার ও একটি প্যালেস্টাইনের পতাকা নিয়ে নববর্ষে সারা বিশ্বের জন্য শান্তি কামনা করে শোভাযাত্রায় অংশ নিতে পারেন।'

এছাড়াও শোভাযাত্রায় যারা মিউজিশিয়ান আছেন, তাদের অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। বাংলা ব্যান্ড মিউজিশিয়ানস ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলা ব্যান্ড মিউজিশিয়ানসের পক্ষ থেকে ওয়ারফেজ ব্যান্ডের সদস্য শেখ মনিরুল আলম টিপু বলেন, চৈত্র সংক্রান্তি ও নববর্ষকে কেন্দ্র করে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তা নিঃসন্দেহ আশাবহ। এবছর চৈত্র সংক্রান্তি ও নববর্ষের শোভাযাত্রা আরো বড় পরিসরে ও বৈচিত্র্যপূর্ণ করার লক্ষ্যে কিছু আকর্ষণীয় ও ভিন্ন আয়োজন রয়েছে যার অন্যতম তারুণ্য নির্ভর ব্যান্ড সংগীতের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি আর সময়োপযোগী ও ভিন্ন কিছু বার্তা নিয়ে শোভাযাত্রায় শতাধিক শিল্পী হাজির হবে।

একাডেমি সূত্র জানায়, চৈত্র সংক্রান্তি ও নববর্ষ ১৪৩২ বাংলা ব্যান্ড মিউজিশিয়ানসের বিশেষ কিছু আয়োজনের ঘোষণা দেওয়া হয়। যা এই প্রথমবারের মতো নববর্ষে উপস্থাপিত হবে। এবছর চৈত্র সংক্রান্তি ও নববর্ষের শোভাযাত্রা আরো বড় পরিসরে ও বৈচিত্র্যপূর্ণ করার লক্ষ্যে কিছু আকর্ষণীয় ও ভিন্ন আয়োজন রয়েছে যার অন্যতম তারুণ্য নির্ভর ব্যান্ড সংগীতের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি আর সময়োপযোগী ও ভিন্ন কিছু বার্তা নিয়ে শোভাযাত্রায় শিল্পীদের অংশগ্রহণ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ও নববর ষ নববর ষ র উপস থ

এছাড়াও পড়ুন:

ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা

চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাহাড়ি প্রদেশ গুইঝৌতে প্রাচীনকাল থেকে ‘গেলাও’ জনগোষ্ঠীর বসবাস। ভিয়েতনামেও এই জনগোষ্ঠীর মানুষ বাস করেন। চীনে তাঁদের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৭৭ হাজার।

কৃষিনির্ভর গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা আজও প্রাচীনকালের পুরোনো এক ঐতিহ্য আগলে রেখেছেন। বছরের নির্দিষ্ট দিনে তাঁরা গাছকে খাওয়ান, যা চীনা ভাষায় ‘ওয়েই শু’ রীতি নামে পরিচিত।

এই প্রাচীন রীতি মূলত একধরনের প্রার্থনা। স্থানীয় অধিবাসীদের বিশ্বাস, এতে প্রকৃতি তুষ্ট হয়, ফসল ভালো হয়, পরিবারে শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে। প্রতিবছর দুটি উৎসবের সময় এই অনুষ্ঠান পালন করা হয়—চীনা নববর্ষে, যা বসন্ত উৎসব নামে পরিচিত। আর গেলাও নববর্ষে, যা চান্দ্র পঞ্জিকার তৃতীয় মাসের তৃতীয় দিনে পালিত হয়।

অনুষ্ঠানের দিন সকালে আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী পাহাড়ের ঢালে জড়ো হন। তাঁরা সঙ্গে করে চাল থেকে তৈরি মদ, শূকরের মাংস, মাছ ও লাল আঠালো চাল নিয়ে আসেন। পাহাড়ে পৌঁছে প্রথমে আতশবাজি পোড়ানো হয়। এতে করে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

এর মধ্যেই একটি পুরোনো ও শক্তিশালী গাছ বাছাই করা হয়। এরপর সবাই ধূপ জ্বালিয়ে নতজানু হয়ে প্রার্থনা করেন। সবশেষে মূল পর্ব ‘গাছকে খাওয়ানো’ শুরু হয়।

একজন কুঠার বা ছুরি দিয়ে গাছে তিনটি জায়গায় ছোট করে কেটে দেন। সেই ক্ষতস্থানে চাল, মাংস ও মদ ঢেলে দেওয়া হয়, যাতে গাছ তাঁদের দেওয়া ভোগ গ্রহণ করতে পারে। পরে ওই জায়গা লাল কাগজে মুড়ে দেওয়া হয়।

এ ছাড়া গাছের গোড়া ঘিরে আগাছা পরিষ্কার করা হয়, মাটি আলগা করে দেওয়া হয়। এতে নতুন জীবনের বার্তা মেলে বলে মনে করেন গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা।

যে গাছকে খাওয়ানো হয়, সেটি যদি ফলদ হয়, তাহলে ভোগ দানকারীরা একটি আশাব্যঞ্জক শ্লোক উচ্চারণ করেন। বলেন, ‘তোমায় চাল খাওয়াই, ফল দিয়ো গুচ্ছ গুচ্ছ; তোমায় মাংস খাওয়াই, ফল দিয়ো দলা দলা।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা