মুন্সীগঞ্জের টংগিবাড়ীতে প্রেমিকের সঙ্গে ঝগড়া মেটানোর কথা বলে ডেকে নিয়ে এক তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় নয়ন মোল্লা (২০) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

শনিবার (১২ এপ্রিল) দিবাগত রাতে টংগিবাড়ী থানায় ভুক্তভোগীর বাবা মামলা করেছেন। পরে উপজেলার আব্দুল্লাপুরের নিজ বাড়ি থেকে নয়নকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার নয়ন আব্দুল্লাপুর এলাকার মৃত সায়েন মোল্লার ছেলে।

মামলা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মেয়েটির সঙ্গে নয়নের এক সময় প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিচ্ছেদ হলে সিয়াম নামে অপর এক যুবকের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান মেয়েটি। সম্প্রতি সিয়ামের সঙ্গে মেয়েটির ঝগড়া হয়। ঝগড়া মিটিয়ে দেওয়ার কথা বলে গত ২৮ মার্চ মেয়েটিকে বাসায় ডেকে নেন নয়ন। সেখানে নয়ন মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন। এসময় নয়নের সহযোগী মো.

জীবন শেখ (২০), আপন বেপারী (১৯), আরমান (১৮), মিরাজ (১৯) ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে। ওই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তারাও মেয়েটিকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেন।

আরো পড়ুন:

মাগুরার সেই শিশু ধর্ষণ মামলার চার্জশিট দিল পুলিশ

মাগুরার সেই শিশু ধর্ষণ মামলার চার্জশিট প্রস্তুত: আইন উপদেষ্টা

ভয়ে ভুক্তভোগী বিষয়টি কাউকে না জানালেও অভিযুক্তরা ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিলে ঘটনার জানাজানি হয়। শনিবার রাতে ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন।

মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান বলেন, “এটি একটি পরিকল্পিত ধর্ষণের ঘটনা। অভিযোগের পর রাতেই একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ তিনি ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন। মূলত মেয়েটির অপর ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের কারণে ক্ষুব্ধ ছিলেন নয়ন। এ কারণে সহযোগিদের নিয়ে ধর্ষণের ঘটনা ঘটান তিনি। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।”

ঢাকা/রতন/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ