উৎসবমুখর পরিবেশে ১৪৩২ বঙ্গাব্দকে বরণ করতে দিনব্যাপী নানা আযোজন করেছে ফরিদপুর জেলা প্রশাসন, সাহিত্য ও সংস্কৃতি উন্নয়ন সংস্থাসহ বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান।
সোমবার সকাল সাড়ে ছয়টায় ফরিদপুর সাহিত্য ও সংস্কৃতি উন্নয়ন সংস্থার চত্বরে স্বাধীনতা মঞ্চে সংগীত অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সূচনা হয় নববর্ষের অনুষ্ঠানমালার। সংস্থাটির আয়োজনে মঞ্চে কবিতা আবৃত্তি, দেশাত্মবোধক গান, রবীন্দ্র সংগীত, ফলাহারসহ ছিল নানা আয়োজন। সকাল ৮টায় ফরিদপুরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বর থেকে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়।
আনন্দ শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে স্থানীয় অম্বিকা ময়দানে নববর্ষের মিলনমেলায় সমবেত হয়। ফরিদপুরের সকল সাংস্কৃতিক ও সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন তাদের কর্মীদের নিয়ে সেখানে অংশ নেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও শহরের শীর্ষস্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও অংশ নেন আনন্দ শোভাযাত্রায়।
অম্বিকা ময়দানের বর্ষবরণ মঞ্চে জেলা শিল্পকলা একাডেমিসহ বিভিন্ন সংগঠনের শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করেন। সেখানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ কামরুল হাসান মোল্লা ও পুলিশ সুপার মো.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা
চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাহাড়ি প্রদেশ গুইঝৌতে প্রাচীনকাল থেকে ‘গেলাও’ জনগোষ্ঠীর বসবাস। ভিয়েতনামেও এই জনগোষ্ঠীর মানুষ বাস করেন। চীনে তাঁদের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৭৭ হাজার।
কৃষিনির্ভর গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা আজও প্রাচীনকালের পুরোনো এক ঐতিহ্য আগলে রেখেছেন। বছরের নির্দিষ্ট দিনে তাঁরা গাছকে খাওয়ান, যা চীনা ভাষায় ‘ওয়েই শু’ রীতি নামে পরিচিত।
এই প্রাচীন রীতি মূলত একধরনের প্রার্থনা। স্থানীয় অধিবাসীদের বিশ্বাস, এতে প্রকৃতি তুষ্ট হয়, ফসল ভালো হয়, পরিবারে শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে। প্রতিবছর দুটি উৎসবের সময় এই অনুষ্ঠান পালন করা হয়—চীনা নববর্ষে, যা বসন্ত উৎসব নামে পরিচিত। আর গেলাও নববর্ষে, যা চান্দ্র পঞ্জিকার তৃতীয় মাসের তৃতীয় দিনে পালিত হয়।
অনুষ্ঠানের দিন সকালে আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী পাহাড়ের ঢালে জড়ো হন। তাঁরা সঙ্গে করে চাল থেকে তৈরি মদ, শূকরের মাংস, মাছ ও লাল আঠালো চাল নিয়ে আসেন। পাহাড়ে পৌঁছে প্রথমে আতশবাজি পোড়ানো হয়। এতে করে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
এর মধ্যেই একটি পুরোনো ও শক্তিশালী গাছ বাছাই করা হয়। এরপর সবাই ধূপ জ্বালিয়ে নতজানু হয়ে প্রার্থনা করেন। সবশেষে মূল পর্ব ‘গাছকে খাওয়ানো’ শুরু হয়।
একজন কুঠার বা ছুরি দিয়ে গাছে তিনটি জায়গায় ছোট করে কেটে দেন। সেই ক্ষতস্থানে চাল, মাংস ও মদ ঢেলে দেওয়া হয়, যাতে গাছ তাঁদের দেওয়া ভোগ গ্রহণ করতে পারে। পরে ওই জায়গা লাল কাগজে মুড়ে দেওয়া হয়।
এ ছাড়া গাছের গোড়া ঘিরে আগাছা পরিষ্কার করা হয়, মাটি আলগা করে দেওয়া হয়। এতে নতুন জীবনের বার্তা মেলে বলে মনে করেন গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা।
যে গাছকে খাওয়ানো হয়, সেটি যদি ফলদ হয়, তাহলে ভোগ দানকারীরা একটি আশাব্যঞ্জক শ্লোক উচ্চারণ করেন। বলেন, ‘তোমায় চাল খাওয়াই, ফল দিয়ো গুচ্ছ গুচ্ছ; তোমায় মাংস খাওয়াই, ফল দিয়ো দলা দলা।’