হজযাত্রীদের নিয়ে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে সৌদি আরব। চলতি বছরে হজের উদ্দেশে যেসব যাত্রী  বৈধ নথি বা পারমিট ছাড়া সৌদিতে যাবেন, তাদেরকে থাকার জায়গা না দিতে মক্কার সব হোটেল, মোটেল, রেস্টহাউস ও স্থানীয় বাসিন্দাদের নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সরকার। সৌদি আরবের পর্যটন মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে। খবর গালফ নিউজের।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আগামী ২৯ এপ্রিল থেকে এ নির্দেশ কার্যকর হবে। মেয়াদ শেষ হবে হজ সমাপ্ত হওয়ার পর। নির্দেশ পালন হচ্ছে কি না, যাচাই করতে মক্কার আবাসিক এলাকাগুলোতে নিয়মিত টহল দেবেন সৌদির আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

এতে আরও বলা হয়েছে, জননিরাপত্তা ও হজের পবিত্রতার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

মক্কার হোটেল-মোটেল-রেস্টহাউসের মালিক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের নতুন এই নিয়ম মেনে চলতে আদেশ দিয়েছে সরকার। কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে যদি সরকারি আদেশ নাম মানার প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে পর্যটন মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে।

প্রতি বছর হজের মৌসুমে লাখ লাখ মুসল্লি হজ করতে সৌদি আসেন। তবে তাদের সবাই যে বৈধভাবে আসেন তা নয়। অনেকেই প্রয়োজনীয় নথি ব্যতীত অবৈধভাবে প্রবেশ করেন সৌদিতে। তাদের একটি অংশ আবার স্থায়ীভাবে সেখানেই থেকে যাওয়ার চেষ্টা করেন।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই নথিবিহীন অভিবাসীদের ব্যাপারে কঠোর নীতি নিয়েছে সৌদি আরব। অবৈধ অভিবাসীদের ধরতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে দেশটির সরকার। যেসব উমরাহযাত্রীর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাদেরকে আগামী ২৯ এপ্রিলের মধ্যে সৌদি ত্যাগের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: হজয ত র স দ আরব সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা

‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’

এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন। 

এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী  বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’

প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’

প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ