ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পারিবারিক বিরােধের জেরে সৌদি আরব প্রবাসীর স্ত্রী শারমিন আক্তারকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করার অভিযাগ উঠছে।  এ ঘটনায় পুলিশ ভুক্তভোগীর দুই ভাশুর মঙ্গল মিয়া (৪৫) ও জয়নাল আবদীনকে (৪২) গ্রেপ্তার করেছে।

সােমবার (২১ এপ্রিল) বিকেলে সদর উপজলার সুলতানপুর ইউনিয়নের মধ্যপাড়ায় নির্যাতনের ঘটনাটি ঘটে। ভুক্তভোগী গৃহবধূ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডল থানায় মামলা করেছেন। 

নির্যাতনর শিকার গৃহবধূ শারমিন আক্তার সুলতানপুর ইউনিয়নের মধ্যপাড়ার মন্তাজ মিয়ার ছেলে হায়দার আলীর স্ত্রী।

আরো পড়ুন:

সাবেক আইজিপি বেনজীরের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের ‘রেড নোটিশ’ জারি

নড়াইলে প্রতিপক্ষের হামলায় বিএনপি নেতার হাত বিচ্ছিন্ন

ভুক্তভাগীর মা নূরজাহান বেগম জানান, প্রায় ১৭ বছর আগে হায়দার আলীর সঙ্গে শারমিনের বিয়ে হয়। হায়দার ১০ বছর ধরে সৌদি আরবে আছেন। ৯ মাস আগে তিনি ছুটিতে দেশে আসেন। পরে তিনি সৌদি আরব চলে যান।

তিনি আরো জানান, পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রায় শারমিনের সঙ্গে তার শ্বশুর বাড়ির লােকজনদের ঝগড়া হত। পারিবারিক এই বিরােধের কারণে সােমবার বিকেলে তার মেয়ে শারমিনকে দুই ভাশুরসহ শ্বশুর বাড়ির লােকজন মারধর করে। তারা বাড়ির একটি নারকেল গাছের সঙ্গে শারমিনকে বেঁধে নির্যাতন করে। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন নূরজাহান বেগম।

ভুক্তভাগী শারমিন আক্তার বলেন, “শ্বশুর বাড়ির লাকজন আমার স্বামীর কাছ থেকে দুই লাখ টাকা ধার নিয়েছিল। সেই টাকা তারা ফেরত দেয়নি। আমার স্বামী বারণ করায় আমি তাদর কাছে টাকা চাই না। শ্বশুর বাড়ির লােকজন প্রতিনিয়ত আমার সঙ্গে ঝগড়া করে। আমি সােমবার বিকেলে অন্যত্র বাসা নিয়ে চলে যাওয়ার বিষয়ে স্বামীর সঙ্গে কথা বলেছিলাম। এ সময় দুই ভাশুর, জা ও ভাতিজারা এসে আমাকে ঘর থেক ধরে এনে মারধর করে। পরে গাছের সাথে বেঁধে মারধর করা হয় আমাকে। পরে স্থানীয় মেম্বার এসে আমাকে উদ্ধার করেন।”

তিনি আরো বলেন, “আমি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছি। ওই ঘটনায় আমি দুই ভাশুর, তাদের স্ত্রীসহ অন্যদের আসামি করে সােমবার রাতে সদর মডেল থানায় অভিযাগ দিয়েছি। মঙ্গলবার সকালে আমার অভিযোগ মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। আমি এই ঘটনার বিচার চাই।”

সুলতানপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডর ইউপি সদস্য মাে.

রিপন মিয়া বলেন, “শুনেছি শারমিন তার শ্বশুরকে মারধর করেছে, এর জেরে তারা শারমিনকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করে। আমি খবর পেয়ে তাদর বাড়িতে গিয়ে শারমিনকে উদ্ধার করি। ঘটনাটি অত্যন্ত জঘন্য।”

শারমিনের শ্বশুর মন্তাজ মিয়া বলেন, “শারমিন বেপরােয়াভাবে চলাফেরা করত। বিভিন্ন সময় ঘরে তালা দিয় বাড়ির বাইরে চলে যেত। তার বেপরােয়া চলাচলে বাঁধা দেওয়ায় শারমিন আমাকে মারধর করে। এরই জেরে ঘটনার সূত্রপাত হয়।”

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ওসি মো. মাজাফ্ফর হােসেন বলেন, “পারিবারিক বিরােধকে কেন্দ্র করে ঘটনাটি ঘটে। বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সহায়তায় ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। আমরা নির্যাতনের শিকার গৃহবধূর ভাসুর মঙ্গল মিয়া ও জয়নাল আবদীনক গ্রেপ্তার করেছি। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।”

ঢাকা/মাইনুদ্দীন/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ

এছাড়াও পড়ুন:

শেরপুরে কৃষককে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ

শেরপুরের শ্রীবরদীতে সুদের টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে এক কৃষককে বেঁধে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে দহেরপাড় গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। ভুক্তভোগী মো. আকবর আলী রবিবার (২ নভেম্বর) শ্রীবরদী থানায় তিনজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। 

অভিযোগ পাওয়ার তথ্য গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন শ্রীবরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আনোয়ার জাহিদ।

আরো পড়ুন:

‎নামাজরত বাবাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ, ৩ পুলিশ আহত

মুন্সীগঞ্জে ড্রেনের ভেতরে মিলল ২৩টি ককটেল, আটক ১

অভিযুক্তরা হলেন, দহেরপার গ্রামের মৃত নুজ বাউনের ছেলে আবু সামা ওরফে বুইজে (৬০), মৃত তরি মিয়ার ছেলে বনিজ উদ্দিন (৫০) ও মৃত ডায়ে শেখের ছেলে আব্দুল বারেক (৩০)।

ভুক্তভোগী আকবর আলীর বলেন, “প্রায় এক বছর আগে তিনি বারেকের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা সুদে নেন। চুক্তি অনুযায়ী তিনি প্রতি মাসে চার হাজার টাকা করে সুদও পরিশোধ করে আসছেন। সম্প্রতি মূল টাকা ফেরত দিলেও অতিরিক্ত আরো দুই হাজার টাকা দাবি করেন বারেক। এ টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে অভিযুক্তরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।”

তিনি বলেন, “গত বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে পরিকল্পিতভাবে তারা আমার বাড়িতে প্রবেশ করে। তারা আমাকে লাঠিপেটা করে গুরুতর আহত করে। একপর্যায়ে আমাকে রশি দিয়ে বেঁধে টেনে-হিঁচড়ে আবু সামার বাড়িতে নিয়ে যায়। তার বাড়ির সামনের রাস্তার সিমেন্টের খুঁটির সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে নির্যাতন করে। পরে স্থানীয়রা আমাকে শ্রীবরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।”

শ্রীবরদী থানার ওসি আনোয়ার জাহিদ বলেন, “আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

ঢাকা/তারিকুল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ