হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কমিটি গঠন নিয়ে উত্তেজনা চলছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে। দুটি পক্ষের নেতারা নিজ নিজ কমিটির নেতা দাবি করছেন। বিষয়টি নিয়ে সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। বিগত কমিটির সভাপতি মাওলানা আমিরুল ইসলাম নিজেকেই এখনও সভাপতি দাবি করছেন। অপরদিকে নতুন কমিটির সভাপতি হিসেবে মুফতি বেলায়েতুল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মাওলানা মেহেদী হাসানের নাম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন তাদের অনুসারীরা। 

নতুন কমিটি গঠনের লক্ষ্যে ১৫ ফেব্রুয়ারি জেলা নেতাদের উপস্থিতিতে কাউন্সিল অধিবেশন হয়। সেখানে উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণা করা হয়নি। যদিও আজ বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে নিজেকে নবীনগর শাখার সভাপতি দাবি করেন মাওলানা আমিরুল ইসলাম। তিনি আগের কমিটিতেও একই পদে ছিলেন। 

মাওলানা আমিরুল ইসলামের ভাষ্য, কাউন্সিল অধিবেশনে ৯৭ শতাংশ ভোটার তাঁকেই পুনরায় সভাপতি হিসেবে সরাসরি ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেন। তখন মেহেদী হাসান বাধা দেন। একই সঙ্গে হুমকিধমকি দেওয়াসহ মারমুখী আচরণ করেন তিনি (মেহেদী)। গঠনতন্ত্রবিরোধী আচরণ করে মেহেদী কমিটি ঘোষণায়ও নিষেধ করেন। জেলার নেতারা পরিস্থিতি শান্ত রাখতে কমিটি পরে ঘোষণার কথা জানিয়ে কাউন্সিল সমাপ্ত করেন।

সংবাদ সম্মেলনে মাওলানা আমিরুল বলেন, জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের উচিত নবীনগর এসে আবারো কাউন্সিল অধিবেশন ডেকে তৃণমূল নেতাকর্মীর সরাসরি ভোটে কমিটি ঘোষণা করা। 

এদিকে কয়েকদিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে, উপজেলায় হেফাজতে ইসলামের নতুন কমিটি গঠিত হয়েছে। এতে সভাপতি হিসেবে মুফতি বেলায়েতুল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মাওলানা মেহেদী হাসান নির্বাচিত হয়েছেন। এই দুই নেতার অনুসারীরাই এসব ছড়িয়ে দিচ্ছেন বলে জানা গেছে। 

নতুন এই কমিটির অনুমোদন রয়েছে বলে দাবি করেন মাওলানা মেহেদী হাসান। তাঁর দাবি, ১৫ ফেব্রুয়ারি কাউন্সিলের অধিবেশনের পরবর্তী সময়ে জেলা কার্যালয়ে জেলা, উপজেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে সর্বসম্মতিক্রমে কমিটি গঠিত হয়। এতে মুফতি বেলায়েতুল্লাহ  সভাপতি ও তিনি (মেহেদী হাসান) সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। 

কমিটির অনুমোদনের কাগজপত্র বিষয়ে জানতে চাইলে মেহেদী হাসান সাংবাদিকদের বলেন, শিগগিরই তারা একটি সংবাদ সম্মেলন করবেন। সেখানেই অনুমোদনের কাগজ উপস্থাপন করা হবে।

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আলী আজ্জমের ভাষ্য, ‘ওই কাউন্সিল অধিবেশনে আমরা কমিটির ঘোষণা করতে পারিনি। পরবর্তী সময়ে কেন্দ্রীয় ও উপজেলার নেতৃবৃন্দদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত সভায় মুফতি বেলায়েতুল্লাহকে সভাপতি  ও মাওলানা মেহেদী হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে একটি কমিটির সিদ্ধান্ত হয়েছে।’ একই সঙ্গে তিনি স্বীকার করেন বিষয়টি জানিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো চিঠি এখনও তারা দেননি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব র হ মণব ড় য় কম ট র স আম র ল ইসল ম উপস থ

এছাড়াও পড়ুন:

শেরপুরে কৃষককে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ

শেরপুরের শ্রীবরদীতে সুদের টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে এক কৃষককে বেঁধে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে দহেরপাড় গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। ভুক্তভোগী মো. আকবর আলী রবিবার (২ নভেম্বর) শ্রীবরদী থানায় তিনজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। 

অভিযোগ পাওয়ার তথ্য গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন শ্রীবরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আনোয়ার জাহিদ।

আরো পড়ুন:

‎নামাজরত বাবাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ, ৩ পুলিশ আহত

মুন্সীগঞ্জে ড্রেনের ভেতরে মিলল ২৩টি ককটেল, আটক ১

অভিযুক্তরা হলেন, দহেরপার গ্রামের মৃত নুজ বাউনের ছেলে আবু সামা ওরফে বুইজে (৬০), মৃত তরি মিয়ার ছেলে বনিজ উদ্দিন (৫০) ও মৃত ডায়ে শেখের ছেলে আব্দুল বারেক (৩০)।

ভুক্তভোগী আকবর আলীর বলেন, “প্রায় এক বছর আগে তিনি বারেকের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা সুদে নেন। চুক্তি অনুযায়ী তিনি প্রতি মাসে চার হাজার টাকা করে সুদও পরিশোধ করে আসছেন। সম্প্রতি মূল টাকা ফেরত দিলেও অতিরিক্ত আরো দুই হাজার টাকা দাবি করেন বারেক। এ টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে অভিযুক্তরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।”

তিনি বলেন, “গত বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে পরিকল্পিতভাবে তারা আমার বাড়িতে প্রবেশ করে। তারা আমাকে লাঠিপেটা করে গুরুতর আহত করে। একপর্যায়ে আমাকে রশি দিয়ে বেঁধে টেনে-হিঁচড়ে আবু সামার বাড়িতে নিয়ে যায়। তার বাড়ির সামনের রাস্তার সিমেন্টের খুঁটির সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে নির্যাতন করে। পরে স্থানীয়রা আমাকে শ্রীবরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।”

শ্রীবরদী থানার ওসি আনোয়ার জাহিদ বলেন, “আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

ঢাকা/তারিকুল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ