ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের কারণে বিএনপির সক্রিয় কর্মী লাভলু মিয়া হত্যার ঘটনায় উত্তাল রংপুরের বদরগঞ্জ। জড়িতদের শাস্তি চেয়ে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। অনেকে রাস্তায় শুয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বুধবার দুপুরে পৌর শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাশে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

পরে বিক্ষোভকারীরা মামলার অন্যতম আসামি স্থানীয় কালুপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল হক ওরফে মানিককে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণের দাবিতে বদরগঞ্জ ইউএনও কাছে একটি স্মারকলিপি দেন। 

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সাবেক এমপি ও বিএনপি নেতা (সদ্য বহিষ্কৃত) মোহাম্মদ আলী সরকার, হুমায়ুন কবির মানিক, আশরাফুল ইসলাম সংগ্রাম, সুমন সর্দার, বিএনপি নেতা আবুজার গাফ্‌ফারী মন্টু প্রমুখ।

উপস্থিত ছিলেন নিহত লাভলুর স্ত্রী রাহেনা বেগম, মেয়ে লাবনী আক্তার, ছেলে মামলার বাদী রায়হান কবীর ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন।

বক্তারা বলেন, চেয়ারম্যান শহিদুল হক ও তাঁর ছেলে তমালের নেতৃত্বে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় বিএনপি কর্মী লাভলু মিয়াকে। পুলিশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করলেও রহস্যজনক কারণে মূল আসামিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা না হলে আরও বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা।

ঘটনার সূত্রপাত হয় পৌর শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার-সংলগ্ন একটি দোকানঘরকে ঘিরে। দীর্ঘদিন ধরে দোকান মালিক ইশতিয়াক বাবু ও ভাড়াটিয়া জাহিদুল হক জোয়ারদারের মধ্যে ভাড়ার মেয়াদ নিয়ে বিরোধ চলছিল। চুক্তি অনুযায়ী জাহিদুল হক ২০২৮ সাল পর্যন্ত ভাড়া থাকতে পারবেন। কিন্তু মালিক ইশতিয়াক সময়ের আগেই তাঁকে দোকান ছাড়তে বলেন। এতে অস্বীকৃতি জানালে ইশতিয়াক বাবু ঘটনাটি তাঁর মামা সাবেক এমপি ও উপজেলা বিএনপি নেতা মোহাম্মদ আলী সরকারকে জানান। জাহিদুল হক অভিযোগ দেন ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল হক মানিকের কাছে। এর মধ্যে শহিদুল হক মানিকের ছেলে তানভির আহমেদ তমাল ফেসবুক আইডি থেকে সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী সরকারকে নিয়ে আক্রমণমূলক পোস্ট করেন। এর পর থেকে দুই পক্ষের মধ্যে দেখা দেয় চরম উত্তেজনা। গত ৫ এপ্রিল শহিদুল হক মানিকের সমর্থকরা পৌর শহরের আলম মার্কেট এলাকায় বিএনপি নেতা লাভলুসহ আরও পাঁচজনকে কুপিয়ে আহত করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় লাভলুকে রংপুর মেডিকেলে নেওয়া হলে সন্ধ্যায় তিনি মারা যান।

পরদিন লাভলুর ছেলে রায়হান কবির বাদী হয়ে কালুপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল হকসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় হত্যা মামলা করেন। পুলিশ মোরছালিন হোসেন নামের একজন ছাড়া এজাহারনামীয় অন্য আসামিদের এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি। 

থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নুরুল আমীন সরকার জানান, এর মধ্যে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের ধরতে পুলিশ কাজ করছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর হ দ ল হক সরক র ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

মাদারীপুরের শিবচরে জামিনে থাকা আসামি রাকিব মাদবরকে (২৫) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে ২২ জনকে এজাহারভুক্ত ও অজ্ঞাত আরও ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বাদী হয়ে ‍শিবচর থানায় মামলাটি করেন।

এর আগে গত রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের প্রধান সড়কে একটি ব্যাংকের সামনে রাকিব মাদবরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। রাকিব শিবচর উপজেলার চরশ্যামাইল এলাকার নাসির মাদবরের ছেলে। তিনি সরকারি বরহামগঞ্জ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।

দুই দিন পার হয়ে গেলেও এই ঘটনায় কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এর প্রতিবাদে আজ দুপুরে শিবচর পৌর বাজারের সদর রোডে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন। এ সময় বক্তারা বলেন, প্রকাশ্যে শত শত মানুষের সামনে হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। একটা সভ্য স্বাধীন দেশে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড হতে পারে না। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার না করা হলে ভবিষ্যতে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবেন তাঁরা।

মামলার বাদী নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বলেন, ‘রাকিবরে এতগুলো মানুষের সামনে কুপাইয়া মাইরা ফালাইলো। কেউ বাঁচাতে এগিয়ে আসলো না। যারা খুন করছে, তারা রাকিবের পূর্বশত্রু। আবুল কালাম সরদারের নির্দেশে তার লোকজন এই খুন করেছে। পুলিশ এ ঘটনায় কোনো আসামি এখন অবধি গ্রেপ্তার করে নাই। আসামিগো গ্রেপ্তার চাই, ফাঁসি চাই।’

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়নের চরশ্যামাইল গ্রামের আবুল কালাম সরদারের লোকজনের সঙ্গে নিহত রাকিব মাদবরের লোকজনের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত ৬ মে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের হামলায় আবুল কালাম সরদারের ছেলে ইবনে সামাদ নিহত হন। ইবনে সামাদ হত্যা মামলার আসামি রাকিব সম্প্রতি জামিন নিয়ে জেল থেকে বের হয়ে এলাকায় আসেন। রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের একটি সড়কে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাকিব। এ সময় ৪ থেকে ৫ জনের একটি দল ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাকিবের মৃত্যু হয়।

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনায় ২২ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির স্বজন ও স্থানীয় লোকজন মানববন্ধন করে এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

আরও পড়ুনশিবচরে হত্যা মামলায় জামিনে থাকা আসামিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রস্তাবিত কাঠামোয় বিশ্ববিদ্যালয় চান না সাত কলেজের শিক্ষকেরা
  • দুর্গাপূজায় অরাজকতা রোধে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান মহিলা পরিষদের
  • বন কর্মকর্তার ১৭ বিয়ে: আদালতে মামলা, তদন্তে পিবিআই
  • শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
  • সুনামগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান পরিবর্তনের দাবিতে ৫টি পরিবেশবাদী সংগঠনের মানববন্ধন
  • ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনী রোডম্যাপের দাবিতে মানববন্ধন
  • কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও তাঁর মাকে হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন