জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) ফিরছে ৩২ বছর পর। এ জন্য গত বুধবার মধ্যরাতে নির্বাচনী তপশিল ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ৩১ জুলাই সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে ভোট গ্রহণ। একই দিনে ভোট গণনা ও ফলাফল প্রকাশ করা হবে।

তবে নির্বাচনের আগে জুলাই আন্দোলনে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের বিচারের দাবি জোরালো হয়ে উঠেছে। এ নিয়ে অধিকাংশ ছাত্র সংগঠনের মধ্যে ঐকমত্য দেখা গেছে। নির্বাচনের আগে বিচারকার্য সম্পন্ন না হলে নির্বাচন বর্জনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে ছাত্রদল। বিচার না হলে নির্বাচন করতে দেবে না বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ। তবে ছাত্র ইউনিয়ন (অমর্ত্য-ঋদ্ধ) ও ছাত্রশিবির বলছে, নির্বাচন ও বিচারকাজ একসঙ্গে চলতে পারে।

আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এর ভিত্তিতে ২৫৯ শিক্ষার্থী, ৯ শিক্ষক এবং দুই কর্মকর্তা ও এক কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ। তদন্ত কমিটির সুপারিশে জড়িতদের তিন ভাগে শাস্তির কথা বলা হয়েছে। এটি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলার আশ্বাস দিয়ে রেখেছে কর্তৃপক্ষ। আগামী ২৯ জুনের মধ্যে বিচারকাজ সম্পন্ন করার মৌখিক আশ্বাস দিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান।
এ নিয়ে তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, আমরা আশ্বাসে সন্তুষ্ট নই। শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী যেই হোক, বিচারের আওতায় আনতে হবে। কাউকে ছাড় দেওয়ার চেষ্টা করা যাবে না। আগামী দুই মাসের মধ্যে বিচার শেষ করতে হবে। নয়তো প্রশাসনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেব।
নির্বাচন বর্জনের হুঁশিয়ারি ছাত্রদলের
শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর বিচারের দাবিতে শুরু থেকে সরব শাখা ছাত্রদল। এ নিয়ে কয়েক দফায় উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি ও কর্মসূচি পালন করেছে। নির্বাচনকে সাধুবাদ জানালেও বিচারের দাবিতে অনড় সংগঠনটি।

শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো.

রুবেল বলেন, নির্বাচনের আগে প্রশাসনকে বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর বলেন, ‘হামলায় জড়িতদের বিচার করতে হবে। উপাচার্যও অঙ্গীকারবদ্ধ। বিচার শেষ না হলে আমরা নির্বাচন বর্জন করব।’

বিচার ও নির্বাচন একসঙ্গে চায় শিবির ও ছাত্র ইউনিয়ন
জাকসু নির্বাচনের আগে জুলাই হামলায় অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে ঐকমত্য ইসলামী ছাত্রশিবির ও ছাত্র ইউনিয়ন (অমর্ত্য-ঋদ্ধ)।
ছাত্র ইউনিয়নের জাবি সংসদের (অমর্ত্য-ঋদ্ধ) সভাপতি অমর্ত্য রায় বলেন, জাকসু হওয়ার আগে জুলাই হামলার বিচার হোক। যদি প্রশাসন না করতে পারে, তাহলে আমরা পদক্ষেপ নেব। দুটি একসঙ্গেও চলতে পারে।
শাখা ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘জাকসু ও বিচার প্রক্রিয়া পাশাপাশি চলতে পারে। দুটিই জরুরি। প্রশাসনের এখতিয়ারভুক্ত শাস্তিগুলো যথাসময়ে হওয়া উচিত। অন্যথায় তা নির্বাচন বানচালের পরিকল্পনা হবে। বিচারের কারণে নির্বাচন না হলে আমরা ধরে নেব, প্রশাসনের ওপর ছাত্রদল ও বিএনপি থেকে নির্দেশ এসেছে।’

বিচার না হলে জাকসু নয়
বিচার না হলে জাকসু নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ জাবি শাখা। 
সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম বলেন, ‘নির্বাচনের আগে অবশ্যই বিচার করতে হবে। তা না হলে এই প্রশাসনের অধীনে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না। যথাসময়ে বিচার নিশ্চিতের জন্য প্রশাসনের ওপর চাপ প্রয়োগ করে যাব।’
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, ‘গত ২৯ এপ্রিল পরিবেশ পরিষদের সভা অনুযায়ী নির্বাচন ও বিচার একসঙ্গে চলতে হবে। আগামী ২৯ জুনের মধ্যে আশা করি বিচার শেষ করা যাবে। বিচারের পর জাকসুর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে।’

গঠনতন্ত্রে পরিবর্তন
নির্বাচনের তোড়জোড়ের আগে থেকে জাকসুর গঠনতন্ত্র সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছে ছাত্র সংগঠনগুলো। এ নিয়ে কমিটি গঠন করে জাকসু ও হল সংসদের গঠনতন্ত্রের পরিবর্তন আনা হয়েছে। হলের পাশাপাশি গুগল ফরম তৈরি করে শিক্ষার্থীদের কাছে উন্মুক্ত মতামত চাওয়া হয়। এর ভিত্তিতে পরিবর্তন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কমিটি। নতুন গঠনতন্ত্রে ১১টি পদ বাড়িয়ে ২৭টি করা হয়েছে। এর আগে পদ ছিল ১৬টি।
এ ছাড়া নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ’ থেকে ‘ছাত্র’ ছেঁটে ‘শিক্ষার্থী’ যুক্ত করা হয়েছে। তবে শুধু পদ বাড়ানো ছাড়া গঠনতন্ত্র সংস্কারের সব ক্ষমতা নির্বাচিত সংসদের। এ নিয়ে জাকসু-সংক্রান্ত পরিবেশ পরিষদের সদস্য সচিব অধ্যাপক রাশিদুল আলম বলেন, ‘ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিন ধরে জাকসুর কার্যক্রম ছিল না। বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় এনে আমরা কাজ করেছি।’

গঠনতন্ত্রে জাকসুর সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের একচ্ছত্র ক্ষমতা রয়েছে বলে মনে করেন শিক্ষার্থীরা। বায়োটেকনোলজি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল 
মামুন বলেন, ‘গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জাকসু 
সভাপতির স্বৈরাচারী হওয়ার সুযোগ তৈরি করে দেয়। সভাপতির অগ্রহণযোগ্য মাত্রায় বল প্রয়োগের সুযোগ কমানো উচিত।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গঠনতন ত র উপ চ র য ছ ত রদল অমর ত য একসঙ গ র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

বাবাকে একটি সুন্দর দিন উপহার দিতে যা যা করতে পারেন

একজন বাবা তার সন্তানকে সুখী করার জন্য কত কিছুই না করেন। এইতো কয়েকদিন আগে এক বাবা তার আয়ের প্রায় সবটুকু জমিয়ে সন্তানের জন্য সাইকেল কিনে ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। নিজের কাছে বাসের টিকিট কেনারও টাকা ছিলো না। অগত্যা বাবা সন্তানের জন্য কেনা সাইকেল চালিয়ে শত শত মাইল দূরের বাড়ির দিকে রওনা করেছিলেন।– এমন কত ঘটনা ঘটে যাচ্ছে প্রতিদিন। আমরা সব সময় সব খবর পাই না। বাবারা আমাদের সুপারহিরো। বাবাকে সুখী করার জন্য আমরাও ছোট ছোট অনেক কিছুই করতে পারি।

বাবার শৈশবের গল্পটা আজ শুনতে পারেন: আজ বাবা দিবস। এ দিবসে আপনি আপনার বাবার শৈশব সম্পর্কে প্রশ্ন করতে পারেন। একটি প্রশ্নই আপনার বাবাকে তার রঙিন শৈশবের দিকে ফিরিয়ে দেবে। এটা সহজ মনে হতে পারে, কিন্তু গল্প ভাগাভাগি করার সময় আপনিও সেই গল্পের পার্ট হয়ে উঠতে পারবেন। বাবাকে জিজ্ঞাসা করুন ছোটবেলায় তার প্রিয় জিনিসগুলো কেমন ছিলো, সেগুলো কি কি, এখনও বাবা কোন স্মৃতিগুলো লালন করেন সেই সব কিছু জানতে পারেন। এই প্রশ্ন-উত্তরের মুহূর্তগুলো আপনাদের সম্পর্ক সুন্দর করে তুলবে। 

বাবার সাথে গাছ লাগাতে পারেন: বাবা দিবস এমন একটি সময়ে আসে, যখন প্রকৃতিতে বৃষ্টি থাকে। সময়টা গাছ লাগানোর জন্য একেবারে উপযুক্ত। এই দিনে বাবার সঙ্গে গাছ লাগাতে পারেন। বাগান থাকলে বাবার সঙ্গে বাগান পরিচর্যা করতে পারেন। গাছের যত্ন নিন, গাছ সম্পর্কে কথা বলুন। দেখবেন সময়টা উপভোগ্য হয়ে উঠছে।

বাবার প্রিয় মিষ্টি উপহার দিন: বাবার দিনটি মিষ্টি করে তুলতে তার প্রিয় মিষ্টি উপহার দিতে পারেন। নিজেই বাবার জন্য বানিয়ে ফেলতে পারেন কেক, কুকিজ, পুডিং, মৌসুমী ফলের শরবত।  

বিকেলটা একসঙ্গে উপভোগ করুন: বাবার সঙ্গে বিকেলের শান্ত প্রকৃতি উপভোগ করতে পারেন। বাবার সঙ্গে  আকাশের দিকে তাকিয়ে একটা বিকেল কাটান। 

বাবার প্রিয় খাবারের আয়োজন থাকুক ডিনারে:  রাতের খাবারের আয়োজনটি বাবার জন্য বিশেষ করে তুলুন। হয়তো আপনার বাবার এমন কোনো প্রিয় খাবার আছে, সেই খাবার রান্নার চেষ্টা করুন। পরিবেশনায় আলাদা নৈপূন্য যোগ করুন।  

বাবার সঙ্গে প্রকৃতির শান্ত মুহূর্তগুলো উপভোগ করুন: বাবার সাথে প্রকৃতির শান্ত মুহূর্ত উপভোগ করার জন্য দূরবীন ব্যবহার করতে পারেন। বারান্দা বা খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে দূরবীন দিয়ে দূরের পাখি ওরা দেখতে পারেন। আপনি আর আপনার বাবা একসঙ্গে কোনো পার্কে বা বনের মধ্য দিয়ে হেঁটে যেতে পারেন। একসঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে গল্প বলতে পারেন।

শুধু বাবা দিবসে নয় বছরের অন্যান্য দিনগুলোতেও বাবারা তার সন্তানের কাছ থেকে ভালোবাসা, শ্রদ্ধা, মনোযোগ আর প্রাপ্য সম্মানটুকু পাক।
 

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রাক্তন স্বামীর সঙ্গে প্রচারে অংশ নেবেন সামান্থা?
  • ২৮ জুন বিকল্প স্থানে কাউন্সিলের আহ্বান শীর্ষ‌ নেতা‌দের
  • বিচ্ছেদ কী বললেন আমির
  • ভারতের ক্রিকেটে নতুন বিস্ময়, সূর্যবংশীর বন্ধু ২২ ছক্কা ও ৪১ চারে করলেন ৩২৭
  • দুই বাংলাকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে: জয়া আহসান
  • তদন্ত প্রতিবেদন দিতে এক মাস সময় বাড়ালেন ট্রাইব্যুনাল
  • কেন এবার একসঙ্গে পেকে যাচ্ছে ক্ষিরশাপাতি, আম্রপালি, ল্যাংড়া
  • শরীরের পাঁচ থেকে সাতটি অঙ্গ একসঙ্গে ব্যথা হয় যে কারণে
  • বাবাকে একটি সুন্দর দিন উপহার দিতে যা যা করতে পারেন
  • ফেনীতে একসঙ্গে তিন সন্তানের জন্ম দিলেন গৃহবধূ