মাদক চক্রের হাতে ‘ট্রেজার গান’, দেখতে চাওয়ায় খুন সাম্য: পুলিশ
Published: 27th, May 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এস এম শাহরিয়ার আলম সাম্য ও তাঁর দুই বন্ধু ১৩ মে রাত পৌনে ১২টার দিকে একটি মোটরসাইকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যান। সেখানকার একটি মাদক কারবারি চক্রের সদস্য মো. রাব্বি ওরফে কবুতর রাব্বির হাতে ছিল একটি ট্রেজার গান (ইলেক্ট্রিক শক দেওয়ার যন্ত্র)। কৌতূহলবশে সেটি দেখতে চান সাম্য। তবে তিনি দেখাতে রাজি ছিলেন না। এ নিয়ে বাকবিতণ্ডা গড়ায় হাতাহাতিতে। একপর্যায়ে তাকে ছুরিকাঘাত করেন রাব্বী।
মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। এ সময় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো.
গ্রেপ্তাররা হলেন– মো. রাব্বি, মেহেদী হাসান, নাহিদ হাসান পাপেল, মো. রিপন, মো. সোহাগ, মো. রবিন, হৃদয় ইসলাম ও সুজন সরকার। ডিবির একাধিক দল গত কয়েকদিনে কক্সবাজার, মুন্সীগঞ্জ ও ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন স্থানে ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। তাদের মধ্যে দুজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। হত্যায় ব্যবহৃত দুটি সুইচ গিয়ার চাকু উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে ঘটনার রাতেই শাহবাগ থানা পুলিশ হত্যায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। তারা হলেন– তামিম হাওলাদার, সম্রাট মল্লিক ও পলাশ সরদার।
অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনেক ফুডকোর্ট ছিল। সেখানে অনেক রাত পর্যন্ত খাবার পাওয়া যেত। আমরা জানতে পেরেছি, সাম্য ও তাঁর দুই সহপাঠী খাবারের জন্য সেখানে যান। তখন ট্রেজার গান নিয়ে বাকবিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে অন্য মাদক কারবারিরাও এসে রাব্বীর সঙ্গে যোগ দেন। তাৎক্ষণিকভাবে এ ঘটনা ঘটে বলে এখন পর্যন্ত আমরা জানতে পেরেছি। তবে এর নেপথ্যে আর কোনো ঘটনা বা অন্য কোনো বিষয় আছে কিনা সেটি নিবিড়ভাবে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
ডিবির এই কর্মকর্তা জানান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মাদক কারবারিদের তিনটি দল আছে। একটি দল তিন নেতার মাজার এলাকায়, একটি উদ্যানের মাঝে, আরেকটি ছবির হাট ঘিরে সক্রিয়। এর মধ্যে একটি দলের নেতা মেহেদী হাসান। গ্রেপ্তার অপর সাতজন তার দলের। মেহেদীই মূলত সুইস গিয়ার সাপ্লাই দেন। ঘটনার দিন তিনি একটি ব্যাগে করে সুইস গিয়ারগুলো আনেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে সহযোগীদের কাছে সরবরাহ করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্যকে ১৩ মে রাতে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছুরিকাঘাত করা হয়। রাত ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ড এমপ
এছাড়াও পড়ুন:
সেতু থেকে পড়ে নিখোঁজের ১৫ ঘণ্টা পর ইছামতী নদী থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার
ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার একটি সেতু থেকে পড়ে ইছামতী নদীতে নিখোঁজের প্রায় ১৫ ঘণ্টা পর এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। আজ শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে যন্ত্রাইল এলাকা থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।
মৃত যুবকের নাম তানজিদ হোসেন (২৬)। তিনি উপজেলার যন্ত্রাইল ইউনিয়নের আজিজপুর গ্রামের চান মিয়ার ছেলে।
পুলিশ ও কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে ইছামতী নদীর ওপর নির্মিত নবাবগঞ্জ-যন্ত্রাইল ব্রিজের রেলিংয়ে একা বসে ছিলেন তানজিদ। একপর্যায়ে সেখান থেকে নদীতে লাফিয়ে পড়েন তিনি। পথচারীদের কয়েকজন দৌড়ে গিয়ে তানজিদকে ডুবতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দাদের জানায়। পরে পুলিশকে খবর পাঠালে সেখানে গিয়ে খোঁজাখুঁজি করেও রাত ৯টা পর্যন্ত তাঁর সন্ধান মেলেনি। পরে আজ সকাল সাতটা থেকে ইছামতী নদীতে উদ্ধার অভিযানে নামে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি ডল। একপর্যায়ে যন্ত্রাইল এলাকা থেকে তাঁর মরদেহ খুঁজে পাওয়া যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
তানজিদের বাবা চান মিয়া বলেন, ‘আমার ছেলেটা কেমনে পড়ে গিয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নিল? কিছুদিন আগে সড়ক দুর্ঘটনায় তাঁর একটি হাত পঙ্গু হয়ে যায়। আমার ধারণা, সে লাফ দেয়নি। হাতে ভর রাখতে না পেরে নিচে পড়ে গেছে।’
নবাবগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক রাজিবুল ইসলাম জানান, কোনো অভিযোগ না থাকায় তানজিদের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।