পাকিস্তান ও ভারত নিজেদের সীমান্তে মোতায়েন করা বাড়তি সেনাসংখ্যা কমিয়ে প্রায় আগের পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। আজ শুক্রবার পাকিস্তানের এক শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা এক সাক্ষাৎকারে রয়টার্সকে এ কথা জানিয়েছেন। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, সাম্প্রতিক সংঘাত ভবিষ্যতে উত্তেজনা বৃদ্ধির ঝুঁকি তৈরি করেছে।

চলতি মাসে দুই দেশের মধ্যে কয়েক দিন ভয়াবহ সংঘাত চলে। এতে উভয় পক্ষ যুদ্ধবিমান, ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও কামান ব্যবহার করেছে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে চার দিন ধরে চলা এই সংঘাত ছিল সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ। গুরুতর আকার ধারণ করার আগেই যুদ্ধবিরতি ঘোষণার মধ্য দিয়ে সংঘাতের অবসান হয়।

সংঘাতের সূত্রপাত হয়েছিল গত ২২ এপ্রিল। ওই দিন ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাঁদের প্রায় সবাই ছিলেন পর্যটক। হামলার জন্য পাকিস্তান-সমর্থিত ‘সন্ত্রাসীদের’ দায়ী করে ভারত। কিন্তু ইসলামাবাদ এই অভিযোগ অস্বীকার করে।

ভারত ৭ মে পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। তাদের দাবি, তারা পাকিস্তানভিত্তিক ‘সন্ত্রাসী অবকাঠামো’তে হামলা চালিয়েছে। পরে পাকিস্তানও পাল্টা হামলা চালায়। এরপর দুই দেশই সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করে।

পাকিস্তানের জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, দুই দেশের সেনাবাহিনী সীমান্তে সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রায় ২২ এপ্রিলের আগের পরিস্থিতিতে ফিরে এসেছি.

..আমরা সেই অবস্থার দিকে এগোচ্ছি, কিংবা ইতিমধ্যে পৌঁছেও গেছি।’

পারমাণবিক শক্তিধর দুই দেশের মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘাতের পর উচ্চপদস্থ পাকিস্তানি সামরিক কর্মকর্তা হিসেবে শামশাদ মির্জাই প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে মুখ খুললেন।

সীমান্ত থেকে বাড়তি সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে জানতে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং দেশটির চিফ অব ডিফেন্স স্টাফের দপ্তরের সঙ্গে রয়টার্সের তরফে যোগাযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু তারা কোনো মন্তব্য করেনি।

সিঙ্গাপুরে নিরাপত্তা সম্মেলন শাংরি-লা ডায়ালগ ফোরামে অংশ নিতে এসে রয়টার্সকে সাক্ষাৎকার দেন জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জা। এতে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সংঘাতে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তবে পরিস্থিতি ছিল বিপজ্জনক।

পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘এবার কিছু হয়নি। কিন্তু যেকোনো সময় কৌশলগত ভুল যে হবে না, সেই শঙ্কা আপনি উড়িয়ে দিতে পারেন না। কারণ, হঠাৎ উদ্ভূত সংকটকালীন মুহূর্তের প্রতিক্রিয়াও ভিন্ন হয়।’

মির্জা আরও বলেন, এবারের সংঘাত কেবল কাশ্মীরেই সীমাবদ্ধ ছিল না। মূলত এ কারণেই ভবিষ্যতে উত্তেজনা বৃদ্ধির ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।

হিমালয় অঞ্চলে অবস্থিত কাশ্মীরের কিছু অংশ পড়েছে ভারতে, আর কিছু অংশ পাকিস্তানে। কিন্তু দুই দেশই অনিন্দ্যসুন্দর এই অঞ্চলের পুরোটা নিজেদের দাবি করে। কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে এর আগেও দুই দেশ দুইবার পূর্ণমাত্রার যুদ্ধে জড়িয়েছে। বিভিন্ন মাত্রার অনেকগুলো সংঘাত হয়েছে। তবে এবারের সংঘাতে কেবল কাশ্মীর নয়, দুই দেশই একে অপরের মূল ভূখণ্ডের সামরিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। কিন্তু কোনো পক্ষই বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির কথা স্বীকার করেনি।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চলতি মাসে পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ভারতের ওপর নতুন কোনো হামলা হলে সীমান্ত পেরিয়ে আবারও ‘সন্ত্রাসীদের আস্তানায়’ আঘাত হানা হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত রয়ট র স

এছাড়াও পড়ুন:

স্টিভ জবসের মডেল কন্যাকে কতটা জানেন?

মার্কিন ফ্যাশন মডেল ইভ জবস। অ্যাপল কম্পিউটারের সহপ্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবসের কন্যা তিনি। স্টিভ জবস ও লরেন পাওয়েল জবস দম্পতির কন্যা ইভ।

কয়েক দিন আগে বয়সে ছোট প্রেমিকের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ২৭ বছরের ইভ। তার বরের নাম হ্যারি চার্লস। যুক্তরাজ্যের নাগরিক হ্যারি অলিম্পিকে স্বর্ণপদকজয়ী অশ্বারোহী। বয়সে ইভের চেয়ে এক বছরের ছোট হ্যারি। গ্রেট ব্রিটেনে এ জুটির বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। 

 

ডেইলি মেইল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইভের জাঁকজমকপূর্ণ বিয়েতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধনাঢ্য পরিবারের লোকজন। এ তালিকায় রয়েছেন—তারকা শেফ ব্যারনেস রুথ রজার্স, বিল গেটসের মেয়ে জেসিকা, রোমান আব্রামোভিচের মেয়ে সোফিয়া প্রমুখ। অ্যাপলের প্রতিষ্ঠাতা উত্তরাধিকারীর পরিবার এবং বন্ধুবান্ধবদের বিলাসবহুল মিনিবাসের স্রোত বইছিল বিয়ের ভেন্যুতে।

 

জাকজমকপূর্ণ বিয়েতে কত টাকা খরচ হয়েছে তা নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা। সংবাদমাধ্যমটিকে প্রয়াত স্টিভ জবসের স্ত্রী লরেন পাওয়েল জবস বলেন, “ইভ-হ্যারির বিয়েতে ৫ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ হয়েছে (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯০ কোটি ২৮ লাখ টাকার বেশি)। 

 

১৯৯১ সালে লরেন পাওয়েলকে বিয়ে করেন স্টিভ জবস। এ সংসারে তাদের তিন সন্তান। ইভ এ দম্পতির কনিষ্ঠ কন্যা। ১৯৯৮ সালের ৯ জুলাই ক্যালিফর্নিয়ায় জন্ম। তার বড় বোন এরিন, ভাইয়ের নাম রিড। লিসা নামে তার একটি সৎবোনও রয়েছে।

 

ইভা পড়াশোনা করেছেন স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০২১ সালে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং সমাজ (সায়েন্স, টেকনোলজি অ্যান্ড সোসাইটি) বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। একই বছর প্যারিসে ‘কোপের্নি’ সংস্থার হাত ধরে মডেলিং দুনিয়ায় পা রাখেন। মডেলিং জগতে পা রেখেই চমকে দেন স্টিভ-তনয়া। 

 

অনেকে নামিদামি ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করেছেন ইভ। বিখ্যাত ব্যাগ প্রস্তুতকারী সংস্থা লুই ভিতোঁরের মডেল হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি। মডেলিংয়ের পাশাপাশি অশ্বারোহী হিসাবেও খ্যাতি রয়েছে ইভের। এক সময় বিশ্বের ২৫ বছরের কম বয়সি ১ হাজার সেরা অশ্বারোহীর মধ্যে পঞ্চম স্থানে ছিলেন তিনি।

 

মাত্র ছয় বছর বয়সে ঘোড়ার পিঠে চড়ে দৌড় শুরু করেছিলেন স্টিভ জবস তনয়া। ঘোড়ায় চড়ার প্রশিক্ষণের পাশাপাশি মেয়ে যাতে পড়াশোনায় মন দেয়, সে দিকে বরাবরই সজাগ দৃষ্টি ছিল ইভের বাবা-মায়ের। তবে গ্রীষ্মাবকাশ ও বসন্তের ছুটির সময়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য বাবা-মায়ের অনুমতি পেতেন ইভ। 

 

ইভ যেখানে অশ্বারোহণের প্রশিক্ষণ নেন, সেই জায়গার মূল্য দেড় কোটি ডলার। ইভ প্রশিক্ষণ শুরু করার পর তার মা ওই জায়গা কিনে নিয়েছিলেন। তবে মডেল হওয়ার কোনো পরিকল্পনা কখনো ছিল না ইভের। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, “আগে কখনো মডেলিং করিনি। তবে প্রস্তাব পেয়ে ঘাবড়ে যাইনি। আমার মনে হয়েছিল, কেন নয়? এই প্রস্তাব আমাকে আকৃষ্ট করেছিল।”

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ