বন্দরে জায়গা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে পাষান্ড বড় ভাই ও তার ছেলেদের সন্ত্রাসী হামলায় ছোট ভাই ও ২ শ্রমিকসহ ৩ জন রক্তাক্ত জখম হয়ছে। ওই সময় হামলাকারীরা বাড়ী নির্মাণ কাজের নগদ ৫০ হাজার টাকা ও ১টি স্মাট ফোন ও ১ ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। 

সন্ত্রাসী হামলায় আহতরা হলো ইদ্রিস আলী (৩৮) ও শ্রমিক শাহবুদ্দিন (৪২) ও মহসিন (৩৫)।স্থানীয়রা আহতদের জখম অবস্থায় উদ্ধার করে বন্দর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করেছে।

এ ঘটনায় আহত ছোট ভাই ইদ্রিস আলী বাদী হয়ে সোমবার (৯ জুন) দুপুরে হামলাকারি ভূমিদৎসু বড় ভাই সিদ্দিক মিয়া ও তার সন্ত্রাসী ৩ ছেলে দ্বীন ইসলাম, সাগর বাদশা, সোহান ও জোসনা বেগমকে আসামী করে বন্দর থানায় এ অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। এর আগে সোমবার (৯ জুন) বেলা ১১টায় বন্দর উপজেলার পিচকামতাল এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বন্দর উপজেলার পিচ কামতাল এলাকার মৃত আলী আক্কাস মিয়ার ছেলে ইদ্রিস আলী পৈত্রিক  সম্পত্তি নিয়ে তারেই আপন বড় ভাই সিদ্দিক মিয়ার সাথে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলছিল। 

ধারাবাহিকতায় সোমবার সকাল ১১টায় ছোট ভাই ইদ্রিস আলী ৫ জন শ্রমিক নিয়ে  পুরাতন বাড়ি সংস্কারের কাজ করতে গেলে ওই সময় প্রতিপক্ষ ভূমিদৎসু বড় ভাই  সিদ্দিক ও তার স্ত্রী জোস্না বেগম এবং তার সন্ত্রাসী ৩ ছেলে দ্বীন ইসলাম, সাগর বাদশা, সোহানসহ অজ্ঞাত নামা ৯/১০ জন উক্ত সংস্কার কাজে বাধা প্রদান করে।

এ ঘটনায় ছোট ভাই ইদ্রিস আলী প্রতিবাদ করলে ওই সময় উল্লেখিত বিবাদীরা ইদ্রিস আলীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। 

একপর্যায়ে উক্ত বিবাদীগন  ক্ষিপ্ত হয়ে ইদ্রিস আলীকে এলোপাথারি কিল-ঘুষি মেরে শরীরের বিভিন্নস্থানে নীলা ফুলা জখম করে। ওই সময় হামলাকারি ভূমিদৎসু সিদ্দিক ও তার ছেলে দ্বীন ইসলাম  ইদ্রিস আলীকে হত্যার উদ্দেশ্যে লোহার পাইপ দিয়ে মাথায় আঘাত করলে  বাম হাত দিয়ে থামাতে গেলে বাম হাতে গুরুত্বর নীলাফুলা জখম হয়। 

সে সাথে ২ নং বিবাদী দ্বীন ইসলাম চাচা ইদ্রিস আলীকে  গলায় গামছা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা চালিয়ে নগদ ৫০ হাজার টাকা, ১টি স্মাট ফোন ও ১ ভরি ওজনের স্বর্নের চেইন ছিনিয়ে নেয়।

ওই সময় নির্মান শ্রমিকেরা ইদ্রিস আলীকে বাঁচানোর জন্য এগিয়ে আসলে ওই সময় হামলাকারি সন্ত্রাসী  সাগর বাদশা ও সোহান ক্ষিপ্ত হয়ে  শ্রমিক শাহাবুদ্দিন ও মহসিনকে বেদম ভাবে পিটিয়ে নিলা ফুলা জখম করে হত্যার হুমকি প্রদান করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: সন ত র স ন র য়ণগঞ জ দ ব ন ইসল ম বড় ভ ই

এছাড়াও পড়ুন:

সালমানকে ১০০ কোটি, সায়ানকে ৫০ কোটি টাকা জরিমানা

আইএফআইসি গ্যারান্টেড শ্রীপুর টাউনশীপ গ্রীন জিরো কূপন বন্ড ইস্যুতে জালিয়াতির কারণে সালমান এফ রহমান ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে আজীবন নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

এছাড়া সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ সায়ান ফজলুর রহমানকে আজীবন, বিএসইসির সাবেক কমিশনার শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ ও আইএফআইসি ইনভেস্টমেন্টের সাবেক সিইও ইমরান আহমেদকে ৫ বছর নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

একইসঙ্গে সালমান এফ রহমানকে ১০০ কোটি টাকা, আহমেদ সায়ান ফজলুর রহমানকে ৫০ কোটি টাকা ও ক্রেডিট রেটিং প্রদানকারী ইমার্জিং ক্রেডিট রেটিংকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে। ৯৬৫তম কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আরো পড়ুন:

সিটি ব্যাংকের নতুন চেয়ারম্যান হোসেন খালেদ

ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিদের শনাক্ত করে সিআইবিতে রিপোর্ট করার নির্দেশ

বুধবার (৩০ জুলাই) বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।

বিএসইসি জানায়, ‘আইএফআইসি গ্যারান্টিড শ্রীপুর টাউনশিপ জিরো কুপন বন্ড’ শীর্ষক ১৫০০ কোটি টাকা অভিহিত মূল্যের ও ১০০০ কোটি টাকা ইস্যু মূল্যের বন্ড ২০২৩ সালের ৪ জুন ৮৭১তম কমিশন সভায় অনুমোদিত হয়েছিল। ওই বছরের ১২ জুলাই সেটার সম্মতিপত্র ইস্যু করা হয়েছিল। ওই বন্ডটির ইস্যুয়ার ছিল শ্রীপুর টাউনশিপ লিমিটেড, যা ওই বছরের ২ মার্চ নিবন্ধিত একটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি। কোম্পানিটি নিবন্ধিত হওয়ার পরপরই ২০২৩ সালের ১১ এপ্রিল ওই বন্ড ইস্যুর আবেদন করেছিল। ওই কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ছিল ৫০০ কোটি টাকা ও পরিশোধিত মূলধন ছিল ৩৩৫ কোটি টাকা, যার মধ্যে মাত্র ৪ দিনের ব্যবধানে ২৪৮ কোটি টাকার নগদ অর্থ ভূমি ক্রয় বা উন্নয়ন সংক্রান্ত কারণে উত্তোলন করা হয়েছিল, যেটি কমিশনের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ ছিল।

এছাড়া ওই বন্ডটির জামিনদার (গ্যারান্টার) হিসেবে আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসি, অ্যাডভাইজার ও অ্যারেঞ্জার হিসেবে আইএফআইসি ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড, ট্রাস্টি হিসেবে সন্ধানী লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড, ক্রেডিট রেটিং প্রদানকারী হিসেবে ইমার্জিং ক্রেডিট রেটিং লিমিটেড, নিরীক্ষক হিসেবে এমজে আবেদীন অ্যান্ড কোং চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট দায়িত্ব পালন করেছে। আইএফআইসি ব্যাংক ওই বন্ড ইস্যু করেনি, মূলত রিয়েল এস্টেট কোম্পানি শ্রীপুর টাউনশিপ লিমিটেড (এসটিএল) ওই বন্ডের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করেছে। কিন্তু বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে বন্ডের নাম হিসেবে ‘আইএফআইসি আমার বন্ড’ নামটি ব্যবহার করা হয়েছে, যা বিনিয়োগকারীকে ধারণা দেয় যে, এ বন্ড আইএফআইসি ব্যাংক ইস্যু করেছে। কিন্তু আইএফআইসি ব্যাংক ছিল মূলত বন্ডটির জামিনদার (গ্যারান্টার)। এভাবে বিনিয়োগকারীদের প্রতারিত করে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করা হয়। এ বিষয়ে পুঁজিবাজার অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটি কর্তৃক অনুসন্ধান ও তদন্ত পরিচালিত হয়েছে এবং এর প্রতিবেদন কমিশনে জমা হয়েছে।

এ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে কমিশন আইএফআইসি ব্যাংকের তৎকালীন চেয়ারম্যান সালমান ফজলুর রহমানকে ১০০ কোটি ও ব্যাংকের তৎকালীন ভাইস-চেয়ারম্যান আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমানকে ৫০ কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করার এবং পুঁজিবাজারে উভয়কে আজীবন অবাঞ্ছিত (পারসোনা নন গ্রাটা) ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

একই সঙ্গে বিএসইসির তৎকালীন চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে পুঁজিবাজারে আজীবন অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার এবং তৎকালীন কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদকে ৫ বছরের জন্য পুঁজিবাজারে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

আইএফআইসি ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেডের তৎকালীন সিইও ইমরান আহমেদকে ৫ বছরের জন্য পুঁজিবাজার সংক্রান্ত সব ধরনের কাজে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

আইএফআইসি ব্যাংকের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ আলম সারওয়ারের বিরুদ্ধে অ্যানফোর্সমেন্ট কার্যক্রম গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। একইসঙ্গে আইএফআইসি ব্যাংককে সতর্ক করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

ব্যাংকের তৎকালীন মনোনীত পরিচালক এ আর এম নাজমুস সাকিব, গোলাম মোস্তফা, জাফর ইকবাল, কামরুন নাহার আহমেদ এবং তৎকালীন স্বতন্ত্র পরিচালক সুধাংশু শেখর বিশ্বাসকে সতর্ক করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

ক্রেডিট রেটিং প্রদানকারী হিসেবে ইমার্জিং ক্রেডিট রেটিং লিমিটেডকে ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

এছাড়া ওই বন্ড সংশ্লিষ্ট অনিয়ম ও বিধিবিধান ভঙ্গের সঙ্গে জড়িত সবার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

ঢাকা/এনটি/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ