প্রাইভেটকারে মোটরসাইকেলের ধাক্কা, উড়ে গিয়ে রাস্তায় পড়ে আরোহীর মৃত্যু
Published: 9th, June 2025 GMT
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় দাঁড়িয়ে থাকা প্রাইভেটকারে ধাক্কা দেয় মোটরসাইকেল। এসময় মোটরসাইকেল আরোহী গাড়ির ওপর দিয়ে উড়ে গিয়ে রাস্তায় পড়ে মারা যান। সোমবার বেলা ১২টার দিকে পাবনা-কুষ্টিয়া হাইরোডের বারোমাইল এলাকার মিজান ফিলিং স্টেশনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। হাইওয়ে পুলিশের এসআই জয়দেব বিশ্বাস এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহত মোটরসাইকেল আরোহীর নাম আসগর মালিথা (৬৫)। তিনি উপজেলার চাঁদগ্রাম ইউনিয়নের চন্ডিপুর ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসীরা জানায়, আসগর মালিথা তার নাতজামাই সোহাগের সঙ্গে মোটরসাইকেল যোগে নয়মাইল থেকে বারমাইলের দিকে আসছিলেন। পথিমধ্যে পাবনা থেকে কুষ্টিয়া গামী একটি প্রাইভেটকার বারমাইলের মিজান ফিলিং স্টেশনে তেল নিতে দাঁড়িয়ে থাকা। এসময় মোটরসাইকেলটি সজোরে প্রাইভেটকারকে ধাক্কা দেয়। এতে পেছনে থাকা আরোহী প্রাইভেটকারের ওপর দিয়ে উড়ে গিয়ে রাস্তায় পড়ে। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয়। আর মোটরসাইকেল চালক সোহাগ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
চাঁদগ্রাম ইউনিয়নের চন্ডিপুর ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আজমল হোসেন জানান, দুর্ঘটনায় নিহত আসগর আমার ওয়ার্ডের বাসিন্দা। দিনমজুর আসগরের পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করার জন্য অনুরোধ করেছি।
হাইওয়ে পুলিশের এসআই জয়দেব বিশ্বাস বলেন, পাবনা-কুষ্টিয়া হাইওয়ের মিজান ফিলিং স্টেশনের সামনে প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে আসগর নামে একজন মারা গেছেন। পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় লাশের সুরতহাল করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ভেড়ামারা থানার অফিসার ইনচার্জ (চলতি দায়িত্ব) রাকিবুল ইসলাম বলেন, ভেড়ামারার বারোমাইলে মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকারের সংঘর্ষে আসগর মালিথা মারা গেছেন। বিষয়টি হাইওয়ে পুলিশ দেখছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন হত পর ব র র ক হ ইওয়
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস