শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্র সফরে যেতে পারেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে এই সফরের বিষয়ে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়নি। আর সম্ভাব্য এই সফরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে তার বৈঠকও হতে পারে। 

মঙ্গলবার বেশ কয়েকটি সূত্রের বরাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্ভবত আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন বলে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বেশ কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে। ভ্রমণ পরিকল্পনা অনুসারে, মোদি তার দুই দিনের প্যারিস সফরের পরে ওয়াশিংটন ডিসির উদ্দেশ্যে রওনা হবেন বলে সূত্রগুলো জানিয়েছে। তবে এই বিষয়ে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা নেই। আগামী ১০ এবং ১১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অ্যাকশন শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ফ্রান্সের প্যারিস যাবেন তিনি। 

যদি প্যারিস থেকে মোদি যুক্তরাষ্ট্রে যান, তবে এই সফর অভিবাসন এবং শুল্ক নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ভারতের উদ্বেগের মধ্যেই হবে।

নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে গত ২০ জানুয়ারি শপথ নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর এক সপ্তাহ পরে ২৭ জানুয়ারি মার্কিন রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন মোদি। ওই ফোনকলে বাণিজ্য, জ্বালানি এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ভারত-মার্কিন সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর ফোকাস-সহ উভয় দেশের “বিশ্বস্ত” অংশীদারিত্বের দিকে কাজ করতে সম্মত হন মোদি এবং ট্রাম্প। দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হিসেবে হোয়াইট হাউসে যাওয়ার পর এটাই হবে মোদির প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফর। 

এদিকে নথিবিহীন ভারতীয় অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো শুরু করেছে ওয়াশিংটন। মার্কিন সেনাবাহিনীর একটি সি-১৭ উড়োজাহাজ বেশ কয়েক জন ভারতীয়কে নিয়ে রওনা যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ড থেকে ভারতের উদ্দেশে রওনা হয়েছে বলে জানা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও কাস্টমস বিষয়ক আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ইউএস ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের (আইসিই) কর্মকর্তারা বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছেন এ তথ্য। তবে যুক্তরাষ্ট্রের কোন অঙ্গরাজ্য থেকে উড়োজাহাজটি ছেড়েছে, ভারতের কোথায় সেটি অবতরণ করবে এবং উড়োজাহাজটিতে কতজন ভারতীয় রয়েছেন— এসব প্রশ্নের কোনো উত্তর এখনও পাওয়া যায়নি, তবে আইসিই কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় পর ভারতের ভূখণ্ড স্পর্শ করবে বিমানটি।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রাথমিকভাবে ১৮ হাজার ভারতীয় নথিবিহীন অভিবাসীকে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাদেরই প্রথম ব্যাচটিকে তোলা হয়েছে বিমানে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স। 

গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’

পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।

হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।

আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।

সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’ 

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’

তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যে আত্মসমর্পণ ও অস্ত্রত্যাগের প্রস্তাব মাওবাদীদের
  • হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত