ছাত্রী হলের খাবারে নখ কাটার যন্ত্র, অতঃপর…
Published: 16th, February 2025 GMT
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ‘জুলাই শহিদ স্মৃতি ছাত্রী হল’ এর রাতের খাবারে নখ কাটার যন্ত্র পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক ক্যান্টিন অপারেটরকে অপসারণ করেছে হল প্রশাসন।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে খাওয়ার সময় এক ছাত্রী খাবারে ওই নখ কাটার যন্ত্রটি পান।
হল সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী ছাত্রীর পরীক্ষা থাকায় রাত ৮টার দিকে তড়িঘড়ি করে ক্যান্টিন থেকে তরকারি নিয়ে আসেন। খেতে গিয়ে দেখেন, তরকারিতে মরিচা পড়া একটি নখ কাটার যন্ত্র। এর সঙ্গে আবার একটি চাবিও আছে। বিষয়টি তিনি রুমমেটসহ হলের অন্য ছাত্রীদের দেখান। পরে হলের অন্য ছাত্রীরা চাবিসহ নখ কাটার যন্ত্র পাওয়ার কথা প্রাধ্যক্ষকে জানান।
ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেন, “আমি রাতে খাওয়ার জন্য ক্যান্টিন থেকে গিলা কলিজা নিয়ে আসি। রুমে এসে প্যাকেট খুলে দেখি নেইল কাটার। কাল আমার সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা, খাবারে এটা দেখতে পেয়ে খাবার না খেয়েই থাকতে হয় আমাকে।”
হলের আরেক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, “হলের ডাইনিংয়ের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কোনো বালাই নেই। হলের মামাদের ঘরের বাচ্চা-কাচ্চাগুলো সবসময় ডাইনিংয়ে থাকে। কি যে একটা বাজে পরিবেশ এই ডাইনিংয়ের, তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।”
তিনি বলেন, “একদিন তো একটা ছেলে অপরিষ্কার হাতে খিচুড়ির পাতিল থেকে খাচ্ছিল। খালারা আবার ওই খাবার আমাদের কাছে বিক্রি করেন। নিজ চোখে দেখার পর থেকে অরুচি চলে আসছে।”
এ বিষয়ে হলের প্রাধ্যক্ষ মো.
তিনি বলেন, “আগে থেকেই বর্তমান অপারেটর এর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ছিল। কিন্তু আমরা তাকে বারবার সতর্ক করার পরও এ রকম ঘটনা ঘটায় আমরা তাকে বাদ দিয়েছি। আগামী মাসের ১ তারিখ থেকে নতুন অপারেটর নিয়োগ দিচ্ছি। এজন্য বর্তমান অপারেটর এ মাসের শেষ পর্যন্ত ক্যান্টিন চালাবে।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
গেইল-পেরেরাদের পারিশ্রমিক, হোটেল বিল না দিয়েই লিগের আয়োজকেরা পালিয়েছেন
টুর্নামেন্টের নাম ইন্ডিয়ান হেভেনস প্রিমিয়ার লিগ বা আইএইচপিএল। ভূস্বর্গ খ্যাত কাশ্মীরে আয়োজিত টুর্নামেন্টটি ক্রিস গেইল, থিসারা পেরেরাদের জীবনে নিয়ে এসেছে মহা বিড়ম্বনা। বিশ্ব ক্রিকেটের নামি এই খেলোয়াড়দের হোটেলে রেখে শহর থেকে পালিয়ে গেছেন লিগের আয়োজকেরা। খেলোয়াড়, ম্যাচ কর্মকর্তাদের পারিশ্রমিক দেওয়া হয়নি, পরিশোধ করা হয়নি হোটেলের বিলও।
ঘটনাটি ঘটেছে ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে। গত ২৫ অক্টোবর আট দল নিয়ে শুরু হওয়া আইএইচপিএল শেষ হওয়ার কথা ছিল ৮ নভেম্বর। কিন্তু শনিবার সকালে খেলোয়াড়দের জানানো হয়, কারিগরি কারণে দিনের খেলা বাতিল করা হয়েছে। এরপর রোববার সকালে হোটেলে থাকা খেলোয়াড় ও কর্মকর্তারা জানতে পারেন, আয়োজকেরা আগের রাতে শ্রীনগর ছেড়ে চলে গেছেন।
হোটেল কর্তৃপক্ষ জানায়, আয়োজকদের কাছ থেকে তারা কোনো বিল পায়নি। সেই সময় প্রায় ৪০ জনের মতো খেলোয়াড় ও কর্মকর্তা হোটেলেই আটকা পড়েছিলেন।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) কর্মকর্তা মেলিসা জুনিপার আইএইচপিএলে আম্পায়ারিং করতে গিয়েছিলেন। শ্রীনগরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আয়োজকেরা হোটেল থেকে পালিয়ে গেছেন। তারা হোটেল, খেলোয়াড় বা আম্পায়ার কারও বিল পরিশোধ করেননি। আমরা হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতায় এসেছি যেন সবাই বেরিয়ে যেতে পারে।’
শ্রীনগরের যে হোটেলে খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের রাখা হয়েছিল, সেখানকার এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘আয়োজকেরা ১০ দিন আগে খেলোয়াড়দের জন্য ১৫০টি কক্ষ চেয়েছিলেন। তাঁরা বলেছিলেন, ক্রিস গেইলের মতো তারকার কারণে কাশ্মীরের পর্যটন উপকৃত হবে। কিন্তু রোববার সকালে দেখি তাঁরা উধাও হয়ে গেছেন। আমাদের বিলও দেননি। গেইলসহ কয়েকজন খেলোয়াড় শনিবারই হোটেল ছেড়ে চলে গেছেন।’
গেইল ছাড়াও টুর্নামেন্টে খেলতে গিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার থিসারা পেরেরা, নিউজিল্যান্ডের জেসি রাইডার, দক্ষিণ আফ্রিকার রিচার্ড লেভি এবং ওমানের আয়ান খান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে টুর্নামেন্টের প্রচারণায় যে সব পোস্টার ব্যবহার করা হয়েছে, তার একটিতে বাংলাদেশের সাকিব আল হাসানের ছবিও বড় আকারে দেখা গেছে।
ভারতের সাবেক ক্রিকেটার পারভেজ রসুল এই টুর্নামেন্টে খেলেছিলেন। তিনি জানান, কয়েকজন বিদেশি খেলোয়াড় হোটেলে আটকা পড়েছিলেন। পরে ব্রিটিশ হাইকমিশনের সহায়তায় তাঁরা বেরিয়ে যান, ‘এক ইংলিশ আম্পায়ার হাইকমিশনে যোগাযোগ করেছিলেন’।
স্থানীয় এক ক্রিকেটার জানান, আয়োজকেরা সম্ভবত ধারণাই করতে পারেননি এমন একটি টুর্নামেন্ট চালাতে কত বড় বাজেট প্রয়োজন। শেষ মুহূর্তে স্পনসররা সরে যাওয়ায় অর্থ সংকট তৈরি হয়েছিল, ‘প্রথম দিন নির্ধারিত পোশাকও ছিল না, স্থানীয়ভাবে কিনে আনা হয়েছিল। কোনো খেলোয়াড়ের সঙ্গেও লিখিত চুক্তি করা হয়নি।’
টুর্নামেন্টটির আয়োজক ছিল যুবা সোসাইটি মোহালি নামের একটি সংস্থা। সহযোগিতায় ছিল জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর স্পোর্টস কাউন্সিল। কাউন্সিলের এক কর্মকর্তা জানান, আইএইচপিএল সভাপতি আশু দানি পুলিশের ছাড়পত্র ও মাঠ ব্যবহারের অনুমতি নিয়েছিলেন, ‘তারা আমাদের টাকা দিয়েছে। এখানে সরকারের সরাসরি সংশ্লিষ্টতা নেই। কেন লিগ মাঝপথে বন্ধ হয়ে গেল, আমরা জানি না।’
তবে ২২ অক্টোবরের একটি সরকারি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জম্মু ও কাশ্মীরের বিভাগীয় কমিশনার অংশুল গার্গের সভাপতিত্বে আইএইচপিএল নিয়ে এক প্রস্তুতি সভার কথা উল্লেখ ছিল, যেখানে অনুমান করা হয়েছিল বকশি স্টেডিয়ামে ২৫–৩০ হাজার দর্শক উপস্থিত থাকবেন। কিন্তু বাস্তবে দর্শক উপস্থিতি ছিল হতাশাজনক। টিকিটের দাম কমিয়েও সাড়া মেলেনি।
এ ব্যাপারে বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাঁর মন্তব্য পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।