দিনাজপুরে মাদক সেবনের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাসহ গ্রেপ্তার ৪
Published: 20th, February 2025 GMT
মাদক সেবনের অভিযোগে দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপপরিচালক ইমতিয়াজ জুবায়েরসহ (৩৬) চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার রাতে দিনাজপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালসংলগ্ন এলাকা থেকে মাদক সেবন অবস্থায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ইমতিয়াজ জুবায়ের ওরফে সজীব বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব শাখার উপপরিচালক হিসেবে কর্মরত। তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেছেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার জাহাঙ্গীর কবির বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মকর্তাকে পুলিশ আটক করেছে। যদি কোনো কর্মকর্তা অনৈতিক কাজের দায়ে কোনো মামলার এজাহারভুক্ত আসামি হন, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বিধি অনুযায়ী পরবর্তী সময় কর্তৃপক্ষ তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে।
গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন দিনাজপুর শহরের বালুবাড়ি এলাকার আলমগীর চৌধুরীর ছেলে আবদুল্লাহ আল ফারুক (৩৭), চারুবাবুর মোড় এলাকার আবদুল খালেকের ছেলে আমিনুল রসুল (৪০) ও বড় বন্দর এলাকার কাওসার আহমেদের ছেলে জাকির হোসেন (৩৬)।
থানা–পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দিনাজপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালসংলগ্ন এলাকায় একটি মোটর মেকানিক গ্যারেজের গোপন কক্ষে নিয়মিত মাদক সেবনের আড্ডা বসে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল রাতে সেখানে অভিযান চালানো হয়। ইয়াবা সেবনকালে ওই চারজনকে হাতেনাতে আটক করা হয়।
দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিউর রহমান বলেন, আটক চারজনের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ বৃহস্পতিবার তাঁদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হবে।
ওসি মতিউর রহমান জানান, জেলা পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযানে গত ২৪ ঘণ্টায় ৯টি মাদক মামলায় ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযানে ৮১টি ট্যাপেন্ডাটল ট্যাবলেট, ১৫৪ গ্রাম গাঁজা ও ৫৪টি ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৫ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন ও দেড় শ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে সাবেক সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী ও অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ বুধবার দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থার উপপরিচালক মো. আজিজুল হক বাদী হয়ে মামলাটি করেন। দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫ কোটি ৩৭ লাখ ১ হাজার ১৯০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং তা নিজের দখলে রেখেছেন। এ ছাড়া আসাদুজ্জামান নূরের নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৯টি হিসাবে ১৫৮ কোটি ৭৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এই লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
দুদকের অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ২০০৩-০৪ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত আসাদুজ্জামান নূরের বৈধ আয় ছিল ৩২ কোটি ৯৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৮ টাকা। এ সময়ে তাঁর পারিবারিক ব্যয় ছিল ৯ কোটি ৩২ লাখ ২৫ হাজার ৭৬১ টাকা। সে অনুযায়ী নিট সঞ্চয় দাঁড়ায় ২৩ কোটি ৬৪ লাখ ৫৭ হাজার ৯২৭ টাকা। অথচ তাঁর অর্জিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ২৯ কোটি ১ লাখ ৫৯ হাজার ১১৭ টাকা। এতে ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার উৎস পাওয়া যায়নি বলে দুদক জানিয়েছে।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূরের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ৮৫ কোটি ৭২ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৩ টাকা জমা এবং ৭৩ কোটি ৫ লাখ ৮১ হাজার ৩০৫ টাকা উত্তোলন হয়েছে। এসব লেনদেনের উৎস অস্পষ্ট।
২০০১ সালে নীলফামারী-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আসাদুজ্জামান নূর। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের পর সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের বিরুদ্ধে একে একে মামলা ও গ্রেপ্তার শুরু করে দুদক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর বেইলী রোডে নিজ বাসা থেকে আসাদুজ্জামান নূরকে গ্রেপ্তার করা হয়।