ক্রেতার পছন্দমতো শিশু চুরি করেন দুলাল
Published: 27th, February 2025 GMT
হাসপাতাল ও রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় ঘুরাঘুরি করেন দুলাল। টার্গেট শিশু চুরি। শিশুদের স্বজনদের নানাভাবে ভুলিয়ে আটকে রাখেন। এরপর শিশুর ছবি পাঠান প্রত্যাশিত ক্রেতার কাছে। তাদের পছন্দ হলে শিশু চুরি করে তাদের কাছে বিক্রি করে দেন। এভাবে ক্রেতার পছন্দমতো শিশু চুরি করে বিক্রি করতেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের দুলাল মিয়া।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি এক বছর তিনমাস বয়সী এক শিশুকে চুরি করে বিক্রির ঘটনায় তাকে কিশোরগঞ্জ সদর থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল থানা এলাকা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার ও মোরশেদ মিয়া নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। যিনি দুলালের কাছ থেকে শিশুটিকে এক লাখ টাকায় কিনেছিলেন। তার নিজের পাঁচটি কন্যা রয়েছে। ছেলে সন্তানের আশায় শিশুটিকে কিনে নেন বলে র্যাবকে জানান তিনি।
দুলাল ও তার স্ত্রী রুনা বেগম পেশাদার শিশু চোর। তারা চট্টগ্রাম, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহসহ আরও বিভিন্ন এলাকা থেকে শিশু চুরি করে বিক্রি করেন। কিশোরগঞ্জের ভৈরব থানার এ সংক্রান্ত একটি মামলায় রুনা বর্তমানে কারাগারে আছেন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে চান্দগাঁও ক্যাম্পে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৭-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব আলম জানান, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ফাতেমা আক্তার চট্টগ্রামের বোয়ালখালী থেকে নেত্রকোনো যাওয়ার উদ্দেশে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে যান। সেখানে দুলালের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। দুলাল তাকে জানায়, ওইদিন নেত্রকোনোর উদ্দেশে আর কোনো ট্রেন ছাড়বে না, এক রাত তার বাসায় থাকলে পরদিন একসঙ্গে ট্রেনে করে তারা নেত্রকোনা যাবেন। ফাতেমা সরল বিশ্বাসে দুলালের সঙ্গে যান।
কিন্তু পরদিনও নানা অজুহাত দেখিয়ে ফাতেমা ও তার সন্তানদের নগরীর বাকলিয়ায় একটি বাসায় আটকে রাখেন দুলাল। ১৯ ফেব্রুয়ারি সকালে সুযোগ বুঝে দুলাল শিশু রাব্বিকে নিয়ে পালিয়ে যান। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ফাতেমার স্বামী গত সোমবার ২৪ ফেব্রুয়ারি নগরীর বাকলিয়া থানায় মামলা করেন। ফাতেমা আক্তার বিষয়টি র্যাবকেও অবহিত করেন।
র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অভিযোগ পেয়েই তথ্য সংগ্রহ ও আসামি শনাক্তে অভিযানে নামে র্যাব। কিশোরগঞ্জ সদরে অবস্থান শনাক্ত করে বুধবার বিকেলে দুলালকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে দুলাল জানান, তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক ব্যক্তির কাছে শিশুটিকে এক লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন। এরপর আজ বৃহস্পতিবার ভোররাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় মোরশেদের বাড়িতে অভিযান চালায় র্যাব। সেখান থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে মোরশেদকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে মোরশেদ জানান, তিনি ১৭ বছর বিদেশে ছিলেন। তাদের পাঁচ মেয়ে। একটি ছেলে সন্তানের আশায় দুলালের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। তার জ্ঞাতসারেই দুলাল শিশুটিকে চুরি করেছিল এবং পরবর্তীতে শিশুটিকে মোরশেদ কিনে নেন। এ ঘটনায় শিশু রাব্বির বাবার করা মামলায় গ্রেপ্তার দুজনকে বাকলিয়া থানায় এবং শিশুটিকে তার বাবা-মায়ের কাছে দেওয়া হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর হ মণব ড় য় র ক শ রগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকতে না পেরে বিদেশ চলে যান পিয়া বিপাশা
লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিনোদন অঙ্গনে পা রাখেন পিয়া বিপাশা। এরপর অভিনয় করেছেন মিউজিক ভিডিও, নাটক ও সিনেমায়। কিন্তু হুট করেই নাই হয়ে গেলেন। পরে জানা গেল অভিনেত্রী আমেরিকায়। গেল পাঁচ বছর সেখানেই বাস করছেন তিনি। সম্প্রতি দেশের একটি গণমাধ্যমে প্রবাসজীবনসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।
পিয়া বিপাশা জানান, একমাত্র মেয়েকে নিয়ে নিউইয়র্কে বসবাস শুরু করেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিকের সঙ্গে তাঁর প্রেম ও ভালোবাসা তৈরি হয়। তারপর তাঁরা বিয়ে করেন। দুজনে মিলে বিয়ে করলেও আনুষ্ঠানিকতা সারেননি। চলতি বছরের শেষ দিকে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরে নেওয়ার ইচ্ছা।
পিয়া বিপাশা বলেন, ‘বাংলাদেশে ভালো লাগত না। কারণ, লবিং ছাড়া কাজ হতো না। ভালো একটা সিনেমা করার কথা ছিল। কিন্তু সেটা আর হয়নি। এরপর আমার মিডিয়ায় কাজ করার ইচ্ছাই নষ্ট হয়ে যায়। আমি আসলে কাজ করতে চেয়েছিলাম টাকা কামানোর জন্য। কাজ না করতে পারলে টাকা কামাব কী করে। তাই সিদ্ধান্ত নিই অন্য কিছু করার।’
বিপাশার কথায়, ‘টাকা রোজগারের জন্য আমি বিনোদন অঙ্গনে কাজ করেছিলাম। কারণ, আমার একটা মেয়ে ছিল। মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকার বিষয় ছিল। পরে দেখলাম, যেভাবে কাজ হয়, আমাকে দিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম, আমেরিকায় চলে আসার। এখানে এসে বাংলাদেশের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিই। অনেক টাকাও আয় করছি।’
পিয়া বিপাশা বলেন, ‘সত্যি বলতে এখন আমার এমন অবস্থা, টাকা ইনকাম না করলেও হয়। যতটুকুই করি, আমার মেয়ে ও হাজব্যান্ড ওরাই বলে। আমার এখন আর কোনো স্বপ্ন নেই। যা চেয়েছি, গত পাঁচ বছরে সবই পেয়েছি। টাকাপয়সা, সুন্দর জীবন, প্রতিষ্ঠিত হওয়া, ভালো স্বামী—সবই আমার হয়েছে। টাকা নিয়ে এখন কোনো চিন্তা নেই আমার—যা আয় করি, তা ব্যয় করার সময় পাই না।’
পিয়া বিপাশা জানান, ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে বিভিন্ন পণ্যের যেসব পোস্ট করেন, তার জন্য বেশ ভালো সম্মানী পান। তাঁর দাবি, এই সম্মানী কখনো দুই হাজার ডলার, আবার কখনো তিন হাজার ডলারের মধ্যে।
২০১৩ সালে ‘দ্বিতীয় মাত্র’ নাটকে তাহসান খানের বিপরীতে অভিনয় করেন। ছোটবেলায় রূপকথার বই পড়তে পছন্দ করতেন। বই পড়ার সময় গল্পের নায়িকার চরিত্রে নিজেকে কল্পনাও করতেন। বড় পর্দায়ও অভিনয় করেছিলেন। ‘রুদ্র: দ্য গ্যাংস্টার’ নামের সেই ছবি মুক্তি পায়। এরপর ‘রাজনীতি’ ছবিতে শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয়ের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। পরে সেই ছবিতে পিয়া বিপাশার পরিবর্তে অপু বিশ্বাস অভিনয় করেন।