রাজশাহীতে সর্বনিম্ন ফিতরা ৮৫ টাকা, সর্বোচ্চ ২৩১০
Published: 12th, March 2025 GMT
রাজশাহীতে এ বছর জনপ্রতি সর্বনিম্ন ফিতরা ৮৫ টাকা এবং সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বুধবার (১২ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় রাজশাহীর জামিয়া ইসলামিয়া শাহ মখদুম মাদ্রাসায় ফিতরা নির্ধারণের লক্ষ্যে আলেমদের এক বৈঠক হয়।
বৈঠকে রাজশাহীর বিভিন্ন বাজার থেকে সংগৃহীত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম পর্যালোচনা করে সর্বসম্মতিক্রমে এ ফিতরা নির্ধারণ করা হয়। সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গম বা আটার গড়মূল্য প্রতি কেজি ৫০ টাকা ধরে ১.
মধ্য মানের খেজুরের গড়মূল্য প্রতি কেজি ৬০০ টাকা ধরে ৩.৩০০ কেজির মূল্য ধরা হয়েছে ২ হাজার টাকা। মধ্য মানের কিশমিশের গড়মূল্য প্রতি কেজি ৬৫০ টাকা ধরে ৩.৩০০ কেজির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ১৫০ টাকা। পনিরের গড়মূল্য প্রতি কেজি ৭০০ টাকা ধরে ৩.৩০০ কেজির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৩১০ টাকা।
বৈঠকের সঞ্চালক ড. মাওলানা ইমতিয়াজ আহমেদ জানিয়েছেন, ফিতরার নির্ধারিত পণ্যমূল্যের সঙ্গে ১-২ টাকা যোগ করে আদায়যোগ্য টাকার অংককে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত উলামায়ে কেরামগণ সর্বনিম্ন ফিতরাকেই আদর্শ না ধরে সামর্থ্য অনুযায়ী বেশি পরিমাণ ফিতরা আদায়ের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জামিয়া ইসলামিয়া শাহ মখদুম মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত মুহতামিম মাওলানা আব্দুল খালেক। উপস্থিত ছিলেন জামিয়া রহমানিয়া মাদ্রাসার নায়েবে মুহতামিম ড. মাওলানা ইমতিয়াজ আহমেদ, জামিয়া ইসলামিয়া মিয়া মোহাম্মদ কাসেমী মাদ্রাসার মুহাদ্দিস মাওলানা মো. নেক আহমাদ, জামিয়া দারুল উসওয়াহ রাজশাহীর মুহাদ্দিস মুফতি মোস্তাফিজুর রহমান কাসেমী, দারুস সালাম কামিল মাদ্রাসার মুহাদ্দিস মুফতি যাকারিয়া হাবিবী এবং সাহেববাজার বড় মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব মাওলানা আব্দুল গণী।
সভায় রাজশাহীর দারুল উলুম মালোপাড়া মাদ্রাসা, জামেয়া ওসমানিয়া মাদ্রাসা, হামাউস সুন্নাহ মুশরইল মাদ্রাসা, জামেয়া সদ্দিকিয়া চণ্ডীপুর মাদ্রাসা, দারুল আরকাম রায়পাড়া মাদ্রাসা প্রতিনিধিবৃন্দ ও শহরের বিভিন্ন মসজিদের ইমাম-খতিবরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/কেয়া/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ৩ ৩০০ ক জ র ম ল য
এছাড়াও পড়ুন:
দহন থেকে জংলি
‘আমি নিয়মিত অনেক চিত্রনাট্য পাচ্ছি। নিয়মিত সেসব সিনেমা করলে প্রচুর টাকা কামাতে পারব। ফিন্যান্সিয়ালি জায়গাটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দর্শক আমাকে যেভাবে দেখতে চাচ্ছেন, তেমন গল্প পাচ্ছি না। দর্শক-প্রত্যাশার চেয়ে ভালো কিছু দিতে চাই। যখন সামগ্রিক চিন্তা করি, তখন ভাবতে হয় আমি কতটা আয় করলাম তার চেয়েও দর্শকের সামনে কীভাবে আসছি, সেটি মুখ্য। এটি একটি প্যাকেজ। মাঝে একটি-দুটি গল্প পছন্দ হয়। সেসব টিমের যে অবস্থা, বাজেট সামগ্রিকভাবে দেখতে গেলে ভালো গল্প তুলে আনা কঠিন হবে। তখন আমি না করে দিই। আমি চাইছি নিজের মতো করে কাজ করতে। জীবনে অনেক সিনেমা করতে হবে, এমন চিন্তা নেই। আমার মতো করে অল্প কিছু কাজ করে যেতে চাই।’ বলছিলেন সিয়াম আহমেদ।
গেল ঈদে মুক্তি পেয়েছে সিয়াম আহমেদ অভিনীত সিনেমা ‘জংলি’। যে সিনেমার সঙ্গে জড়িয়ে আছে নায়কের আবেগ ও পরিশ্রমের দীর্ঘ গল্প। সিনেমাটি করতে একচুলও ছাড় দেননি সিয়াম। ফলাফল হিসেবে পেয়েছেন দর্শকের অবারিত ভালোবাসা। জংলি মুক্তির পর তাই গল্পটি হয়ে উঠেছে সবার। দর্শকরা হলে গিয়ে কেঁদেছেন, গল্পে বুঁদ হয়ে থেকেছেন। করেছেন সিয়াম ও তাঁর টিমের প্রশংসা।
সিয়াম বললেন, ‘এ সিনেমায় আমি দীর্ঘ সময় দিয়েছি। সিনেমার জন্য চুলদাড়ি বড় করেছি। একটি সিনেমার জন্য আমার পাগলামি নিয়ে মা-বাবার মনে হয়তো প্রশ্ন ছিল, ছেলেটি চুল-দাড়ি বড় করে কী করছে? কী করেছি, এটি তো তাদের বোঝানো যায় না। তবে আমার আত্মবিশ্বাস ছিল, সিনেমাটি মুক্তির পরে গল্পটি তাদের টাচ করবে। কারণ, গল্পটিই এমন, এটি প্রথম যদি কাউকে টাচ করে, সেটি সন্তানের মা-বাবাদের। যে কারণে তাদের একসঙ্গে হলে নিয়ে কাছ থেকে অনুভূতি জানার চেষ্টা করেছি। এখন পর্যন্ত মা-বাবার কাছ থেকে সেরা ফিডব্যাক পেয়েছি। বাবা-মেয়ের গল্পটি দেখে তারা ইমোশনাল হয়ে গিয়েছিলেন। শুধু আমার বাবা-মা নন, অন্য মা-বাবাদের কাছেও গল্পটি নিজেদের হয়ে উঠেছে। তারা সিনেমাটি দেখে কেঁদেছেন। হল রিঅ্যাকশনের সেসব ভিডিও সবাই দেখেছেন। সব মিলিয়ে আমরা সফল। আমাদের জংলি সফল।’
মুক্তির পর থেকে ‘জংলি’ সিনেমার এগিয়ে যাওয়ার গ্রাফ দেখলে শুধু দর্শকের ভালোবাসায় সফল নয়, ব্যবসায়িকভাবেও সিনেমাটি যে সফল তার চিত্র বিদ্যমান। মাত্র ৮টি শো দিয়ে শুরু হওয়া সিনেমাটি ঈদের এতদিন পরও মাল্টিপ্লেক্সে ত্রিশটির মতো শো নিয়ে দাপিয়ে চলছে। দেশ ছাড়িয়ে বিদেশের মাটিতেও জংলি হয়ে উঠেছে দর্শকদের সিনেমা।
প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান টাইগার মিডিয়ার কর্ণধার জানিয়েছেন, জংলি প্রায় ছয় কোটির (গ্রস) ক্লাবে প্রবেশ করেছে।
ঈদে মুক্তির পর থেকে ক্রমশ দর্শকপ্রিয় হয়ে ওঠে ‘জংলি’। এমনকি, দেশের সিনেমাপ্রেমীদের মন জয় করে কানাডা, আমেরিকা ও ইউকে’র ৪০টি থিয়েটারে মুক্তি পেয়েছে ‘জংলি’। গত ২৫ এপ্রিল থেকে স্বপ্ন স্কেয়ারক্রো-এর পরিবেশনায়, ঈদের সিনেমাগুলোর মধ্যে দেশের বাইরে সবচেয়ে বেশি থিয়েটারে একযোগে মুক্তি পেয়েছে এ সিনেমাটি। কানাডা ও আমেরিকার বক্স অফিসে প্রথম ৩ দিনের গ্রস ৩৫,০০০ ডলার আয় করে শুভসূচনা করেছে ‘জংলি’।
ঈদে আরও অনেক ছবি মুক্তি পেয়েছে। সেগুলোর মধ্যে জংলি বিশেষ হয়ে উঠেছে কেবল বাবা-মেয়ের গল্পের কারণে। সঙ্গে সিয়ামের নজরকাড়া অভিনয়। নৈঋতার পাখি হয়ে ওঠার দারুণ চেষ্টা। দিমিত্রি থে স্টোনহার্ট নামে এক মনীষী বলেছেন, ‘একজন বাবা বলেন না যে তিনি তোমাকে ভালোবাসেন; বরং তিনি দেখিয়ে দেন যে, তিনি তোমাকে ভালোবাসেন’ জংলি সিনেমায় সিয়াম সেটি বোঝাতে পেরেছেন। ফলে সিনেমাটি হয়ে উঠেছে সবার।
প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ বলেছেন– ‘পৃথিবীতে আসার সময় প্রতিটি মানুষই একটি করে আলাদিনের প্রদীপ নিয়ে আসে, কিন্তু খুব কম মানুষই সেই প্রদীপ থেকে ঘুমন্ত দৈত্যকে জাগাতে পারে।’
সিয়াম তাঁর জীবনের সেই দৈত্যকে জাগাতে পেরেছেন। পেরেছেন বলেই হয়তো আজ তিনি সাধারণ সিয়াম থেকে নায়ক সিয়াম হয়ে উঠেছেন। সিয়ামের যাত্রাটা শুরু বেশ আগে হলেও পুরোপুরি শুরু হয় ‘দহন’ সিনেমার মাধ্যমে। রায়হান রাফী পরিচালিত এ সিনেমাটির মাধ্যমে সিয়াম নাটক থেকে পুরোপুরি চলচ্চিত্রের মানুষ হয়ে ওঠেন। সে যাত্রা এখনও চলছে। প্রথম সিনেমায় যে সিয়ামকে সবাই দেখেছেন, জংলির সেই সিয়াম যেন আকাশ-পাতাল। তখন সিয়াম ছিলেন তরুণ, এই সিয়াম এখন বাবা। পর্দায় ও বাস্তবে দুই জায়গাতে দারুণ এক বাবা হয়ে উঠেছেন তিনি। নিজের অভিনয় ক্যারিয়ার নিয়ে আগামী পরিকল্পনা কী? প্রশ্ন রাখলে নায়ক বলেন, ‘আমি নিজের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে চাই। যারা আমার আগের কাজ দেখেছেন, তারা যেন বলেন, আগের কাজকে ছাড়িয়ে যেতে পেরেছি। আরেকজনকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চেয়ে নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়া কঠিন।’